""

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার ৬ষ্ঠ সম্মেলন সম্পন্ন

পানছড়ি : ‘দালালী, লেজুরবৃত্তি, সুবিধাবাদীতার পথে নয়, জনগনের ওপর আস্থা বিশ্বাস রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম এগিয়ে নিন ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে চুড়ান্ত লক্ষ্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইয়ে বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে ছাত্র-যুব-নারী তথা জনগণের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম পানছড়ি উপজেলা শাখার ৬ষ্ঠ সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।


আজ শুক্রবার (৯ জুন ২০১৭) সকাল ১০টায় পানছড়ি উপজেলার পুজগাং-এ উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশনে মাধ্যমে ৬ষ্ঠ সম্মেলনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদের উদ্দেশ্যে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সদস্য মনোতোষ চাকমা। এরপর শহীদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি রুপায়ন চাকমার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিন্টু বিকাশ চাকমা’র সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, ইউপিডিএফ এর কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ পানছড়ি উপজেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক সুকিরণ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেনের খাগড়াছড়ি জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক অবনিকা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা সদস্য বাবু মারমা। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চেঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান কাঁলাচাদ চাকমা, ১নং লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমা, চেঙ্গী ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র চাকমা, লোগাং ইউপি’র সাবেক চেয়রাম্যান সমর বিকাশ চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তি ত্রিপুরা।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা নতুন কুমার চাকমা বলেন, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আরো দুর্বার আন্দোলন করতে হবে। সমাজে দালাল, প্রতিক্রিয়াশীলরা থাকবে, তাদেরকে প্রতিরোধ করে এগিয়ে যেতে হবে। সেই জন্য যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আন্দোলন জোরদার করতে হবে এবং এগিয়ে নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।


তিন অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন কোন ঘটনা নেই যেখানে সেনাবাহিনীর মদত ছিলো না। গত ৫ এপ্রিল সেনাবাহিনী কর্তৃক নান্যাচর উপজেলা শাখার পিসিপি সাধারণ সম্পাদককে অন্যায়ভা আটক করে নির্যাতন চালিয়ে তাদের হেফাজতে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে চিকিসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এছাড়া গত ২ জুন সেনা-পুলিশের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লংগদুতে সেটলার বাঙ্গালীরা পাহাড়ি গ্রামে সম্প্রদায়িক হমলা, লুটপাট, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।
বক্তারা বলেন, দালালী, লেজুরবৃত্তি, সুবিধাবাদীতার পথে জনগণের মুক্তি নেই। জনগণের ওপর আস্থা বিশ্বাস রেখে আন্দোলন-সংগ্রামেকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অর্জন হতে পারে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠী পাহাড়ি জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে এবং সংখ্যলঘু করে অস্তিত্ব ধ্বংস করার জন্য সাম্প্রদায়িকক হামলা চালিয়ে আসছে। এছাড়া সেনা-সেটলার কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে ডজন খানেক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। আজ পর্যন্ত কোন ঘটনারই বিচার করা হয়নি।
পরে কৃপায়ণ চাকমাকে সভাপতি, মিন্টু বিকাশ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক, সুর মঙ্গল চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট পানছড়ি উপজেলা শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা।
সম্মেলন শেষে বরকলক থেকে মিছিল সহকারে ছদক ক্লাবে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়। সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জারিকৃত অগণতান্ত্রিক ১১ নিদের্শনা বাতিল, সাম্প্রতিক সময়ে লংগদুতে সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ গত ৭ জুন খাগড়াছড়ি সদরে কল্পনা চাকমা অপহরণের বিচার নিয়ে তালবাহানা বন্ধের জন্য শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে বিজিবি ও পুলিশের হমলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
—————–






0/Post a Comment/Comments