""

দীঘিনালায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ ভরদ্বাজ মুণির ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

দীঘিনালা, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর ২০২০


‘শহীদ ভরদ্ধাজ মুণির রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ এই শ্লোগানে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা শাখার উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ভরদ্বাজ মুণি চাকমার ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

এ উপলক্ষ্যে আজ ১৩ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভা শুরুর আগে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ ভরদ্বাজ মুণির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‌‌‘শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের পা না দিয়ে আসুন, নারী সম্ভ্রম রক্ষা, ভূমি বেদখল রোধ তথা জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম বেগবান করি’ এই আহ্বানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পিসিপি’র দীঘিনালা উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিঠুন চাকমার সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক অনন্ত চাকমা’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ এর সংগঠক লঙ্কা চাকমা, সজীব চাকমা, ডিওয়াইএফের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সভাপতি রিটেন চাকমা ও সহ-সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমা।


বক্তারা বলেন, শহীদ ভরদ্বাজ মুণি পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকারহারা-নিপীড়িত জাতিসমূহের চেতনার নাম। তাঁর আত্মবলিদান যুগে যুগে জাতি স্মরণ করবে।

শহীদ ভরদ্বাজ মুণির আত্মবলিদান বৃথা যেতে দেওয়া হবে না প্রত্যয় ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধ ভরদ্বাজ মুনি আত্মবলিদান দিয়েছেন তা এখনো পূরণ হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তি অর্জন হলেই তবে তাঁর আত্মবলিদান সার্থক হবে।


বক্তারা বলেন, নব্বই দশকে যেভাবে ছাত্র-জনতা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল আবারো তার পুনজাগরণ ঘটাতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে যেভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন চলছে তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একমাত্র ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।

বক্তারা ভরদ্বাজ মুণির আত্মবলিদানের চেতনায় অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রাম জোরদার করার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ সর্বস্তরের মুক্তিকামী জনগণের প্রতি আহ্বান জনান।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের উপর শাসক শ্রেণী তথা সেনাবাহিনীর অবর্ণনীয় অত্যাচার ও নিপীড়ন-নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৯৯২ সালের ১৩ অক্টোবর তকালীন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও পাহাড়ি গণপরিষদ দীঘিনালায় এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে সামিল হয়েছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ ভরতদ্বাজ মুণি চাকমাও । কিন্তু শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সেনা-সেটলাররা পরিকল্পিতভাবে অতর্কিতে হামলা চালালে এতে ভরদ্বাজ মণি চাকমা শহীদ হন। এ হামলায় আহত হন আরো প্রায় অর্ধশত নারী-পুরুষ।

---





0/Post a Comment/Comments