লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২২ মার্চ ২০২১
খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি সদর ইউনিয়নে ইউপিডিএফ’র উদ্যোগে ছাত্র-যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ
সোমবার (২২ মার্চ ২০২১) ইউপিডিএফ’র লক্ষ্মীছড়ি ইউনিট দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন
করে।
‘জাতির
দুর্দিনে যে তরুণ নিষ্কর্মা হয়ে থাকে সে তরুণ নয়, আসুন অস্তিত্ব রক্ষার মূলমন্ত্র
পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি’ এই স্লোগানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে
সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফ’র লক্ষ্মীছড়ি ইউনিটের সমন্বয়ক বিধুর চাকমা।
ইউপিডিএফ
সংগঠক মন্টু চাকমার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র সিনিয়র সংগঠক দেবেশ
চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমা,
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সভাপতি উৎপল চাকমা, এলাকার নারী
প্রতিনিধি মেরিনা চাকমা। এছাড়া বিভিন্ন গ্রামের যুব ও ছাত্র প্রতিনিধিরাও এতে
বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা
বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের তরুণ সমাজকে অনৈতিক পথে ধাবিত করে পুরো
পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ভবিষ্যৎ আন্দোলনকে ভেস্তে
দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। প্রত্যক্ষভাবে ইয়াবা, মদ ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক অপ্রতিরোধ্যভাবে
ছাড়িয়ে দিচ্ছে। যাতে জুম্ম তরুণ সমাজ তাদের অধিকার বিষয়ে অসচেতন হয়ে পড়ে। তাই
শাসকগোষ্ঠীর এই ষড়যন্ত্র থেকে ছাত্র-যুব সমাজকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
বক্তারা
আরও বলেন, সরকার উন্নয়নের ঢোল বাজিয়ে প্রকৃতপক্ষে জুম্ম জাতিকে ধোকা দিচ্ছে। তারা
উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখলসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাঙালি জনবসতি
গড়ে তুলে জুম্ম জনগণকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করতে চাইছে।
ছাত্র-যুব
সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, জাতি আজ অস্তিত্ব সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে
রয়েছে। জাতির এই দুর্দিনে জুম্ম ছাত্র ও যুব সমাজকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না,
জাতির অধিকার রক্ষার সংগ্রামে সামিল হতে হবে।
বক্তারা
বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল জুম্ম জাতির
অস্তিত্ব রক্ষা হতে পারে। তাই ইউপিডিএফ শত দমনপীড়ন সত্ত্বেও অবিচলভাবে
পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে বেগবান করার
জন্য ছাত্র-যুব সমাজকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান বক্তারা।
সম্মেলনে
ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয় এবং উপস্থিত সকলের সম্মতিতে
প্রস্তাবনাগুলো পাশ করার মাধ্যমে সম্মেলন সমাপ্ত করা হয়।
প্রস্তাবনাগুলো
হলো- ১. প্রতিটি গ্রামে যুব ফোরামের নেতৃত্বে যুব কমিটি গঠন ও পরিচালনা করা, ২.
সামাজিক অবক্ষয় রোধে যুব সমাজের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা, ৩. গ্রামের শৃঙ্খলা
রক্ষার্থে সামাজিক প্রশাসনকে যথাযথ সহযোগিতা করা, ৪.জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকল
প্রকার আন্দোলনে যুব সমাজের অংশগ্রহণ, ৫.বাল্যবিবাহ রোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি
করা, ৬.দালাল, লেজুড়বৃত্তি, জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সামাজিকভাবে
প্রতিহত করা ও ৭. জাতির অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকল যুব সমাজকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন
হওয়া।