কাউখালী প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ৫ মার্চ ২০২১
রাঙামাটির কাউখালীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তিকে (দোকানদার) নির্যাতনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কাউখালী ক্যাম্পের সেনারা তাদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২ মার্চ ২০২১) কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের
বড়ইছড়ি গ্রামের সুইথুইপ্রু মার্মা (৩৭) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী দোকানদারকে কাউখালী
ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য ইউপিডিএফের সাথে যোগাযোগ রাখে এমন মিথ্যা অভিযোগে তাকে কাউখালী
ডিগ্রী কলেজ এলাকায় নিয়ে বেদম শারীরিক নির্যাতন করে। ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
এ নিয়ে পরদিন (৩ মার্চ) সিএইচটি নিউজে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সেনাবাহিনী ভুক্তভোগী সুইথুইপ্রু
মার্মা ও বড়ক্ইছড়ি গ্রামের কার্বারী কালাসাং মার্মাকে কাউখালী ক্যাম্পে ডেকে ঘটনার
জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মাফ করে দেওয়ার জন্য বলা হয়। তাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি
বা ভুল তথ্যের কারণে এমন ''অনাকাঙ্খিত'' ঘটনা ঘটেছে বলে সেনারা তাদেরকে জানায়।
এ সময় সেনারা সুইথুইপ্রু মারমার কাছ থেকে ঘটনাটি তিনি কাকে কাকে জানিয়েছেন
তা জানতে চাইলে জবাবে তিনি তার মেয়ে উয়েচি মার্মা (১৩) ও স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার
পাইচামং মার্মাকে জানিয়েছেন বলে জানান।
সেনারা ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তাকে আশ্বস্থ করেন এবং
তাকে নির্ভয়ে দোকান দিতে বলেন।
এ ব্যাপারে বড়ইছড়ি গ্রামের কার্বারী কাসালাং মার্মার সাথে যোগাযোগ করা
হলে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, "হ্যাঁ, ক্যাম্পে আমাদের
ডেকে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও মাফ চাওয়া হয়েছে”।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকের জবাবদিহিতা থাকা দরকার এবং বিনা কারণে যাতে কেউ
নির্যাতন ও হয়রানির শিকার না হয় সে দিকটি খেয়াল রাখা দরকার। আর কেউ যদি ইউপিডিএফের
সাথে যোগাযোগও রাখে তবে তা তো অপরাধ হতে পারে না। কারণ ইউপিডিএফ তো একটি গণতান্ত্রিক
দল। আন্দোলনের পাশাপাশি তারা তো এলাকায় শিক্ষা, চিকিৎসা, ধর্মীয়সহ
নানান আর্থ সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।"
গ্রামের অন্য একজন মন্তব্য করে বলেন, সেনারা যদি এভাবে এযাবত নিরীহ জনগণের
উপর যত অপরাধ করেছেন তা স্বীকার করে প্রতিকার করতেন, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিতে
ভরে যেতো।