""

লক্ষ্মীছড়ির দুল্যাতুলি ইউনিয়নে ইউপিডিএফের ছাত্র-যুব সম্মেলন

 লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ০১ এপ্রিল ২০২১


“জাতীয় দুর্দিনে যে তরুণ নিষ্কর্মা হয়ে থাকে সে তরুণ নয়, আসুন অস্তিত্ব রক্ষার মূলমন্ত্র পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি” এই শ্লোগানে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুল্যাতুলি ইউনিয়নে ছাত্র-যুব সম্মেলন করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

আজ বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল ২০২১) ইউপিডিএফের লক্ষ্মীছড়ি ইউনিট এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরু হয়ে বিকালে শেষ হয়। এতে এলাকার ছাত্র-যুবকরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে ইউপিডিএফের লক্ষ্মীছড়ি ইউনিটের সমন্বয়ক বিধুর চাকমার সভাপতিত্বে ও সংগঠক মন্টু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের সিনিয়র সংগঠক দেবেশ চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ক্যমরন চাকমা, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সভাপতি উপল চাকমাও উক্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-যুবক প্রতিনিধিবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, আমরা এমন একটা সময় পার করছি, যে সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে চলছে সংখ্যালঘু জাতিসত্তামূহের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন ও জাতিগত নিধনের এক পৈশাচিক ষড়যন্ত্র। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জাতিসত্তাগুলোকে এমনভাবে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, এমন একটা শৃঙ্খলের ভেতর বন্দী করে রেখেছে, যা থেকে মুক্ত হতে গেলে আমাদের ছাত্র-যুব সমাজকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে এবং এর পাশাপাশি ইউপিডিএফ এর মূল লক্ষ্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। কেননা, তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-যুব সমাজের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই পারে সমাজের জনমানুষকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সচেতন ও অগ্রগামী করে গড়ে তুলতে।

বক্তারা আরো বলেন, একটি জাতির অস্তিত্ব ধরে রাখতে হলে রাজনৈতিকভাবে যেমন সচেতন হওয়া প্রয়োজন তেমনি সেই রাজনৈতিক সচেতনতাকে সঠিক পথের সংগ্রামে পরিচালনা করার জন্যে প্রয়োজন একটা আদর্শিক রাজনৈতিক পার্টি। যা জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে নির্বিঘ্নে কাজ করে যাবে। সেজন্যে গঠিত হয়েছে জনগণের একনিষ্ঠ সংগ্রামী পার্টি ইউপিডিএফ।


বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র-যুব সমাজকে আন্দোলন-সংগ্রামবিমুখ ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রতি বৈরীভাব নিয়ে গড়ে উঠার জন্যে বর্তমান শাসক সরকার নানা কূটকৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছে। তন্মধ্যে আমরা দেখতে পাই- ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য সেবনে আকৃষ্ট হওয়ার মাধ্যমে অনেকে সরকারের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিচ্ছে। যার ফলে সমাজে রাজনীতিবিমুখ, প্রগতিবিমুখ, সমাজ সচেতনহীন এক প্রজন্ম তৈরী হচ্ছে, যে প্রজন্মের ভবিষ্য
চলে যাচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর পা চাটার দলে। সুতরাং সমাজের মূল শেখড় যেহেতু ছাত্র ও যুব সমাজের উপর অন্তর্নিহিত থাকে সেহেতু সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে পার্টি ও যুব সমাজের সমন্বয়ে প্রত্যেকটি গ্রামে জনসচেতনতা এবং রাজনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় করতে হবে। এককথায়, সমাজের সাধারণ জনমানুষকে রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর করে গড়ে তুলতে হলে পার্টির পাশাপাশি প্রত্যেকটি ছাত্র ও যুব সমাজকে তপর হতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন পার্টি ও জনগণের মধ্যে একাগ্রতা। এই একাগ্রতা সুদৃঢ় না হলে শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে আমাদের উপর শাসন জারী রেখে আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। তাই ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি আহ্বান থাকবে, প্রত্যেকটি ছাত্র ও যুব সমাজকে সুসংগঠিত হয়ে নিপীড়িত জুম্ম জনগণের সংগ্রামী পার্টি ইউপিডিএফের সাথে বন্ধুবসল থাকা ও যতদিন পর্যন্ত পূর্ণস্বায়ত্তশাসন কায়েম না হয় ততদিন পর্যন্ত সংগ্রাম করে যাওয়া।

সম্মেলনে ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি কিছু প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়। উপস্থিত সকলের সম্মতিতে প্রস্তাবনাগুলো পাশ করা হয় এবং সকলে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে লড়াই-সংগ্রামের শপথ গ্রহণ করেন।

সম্মেলনে গৃহিত প্রস্তাবনাগুলো হলো- ১. গ্রামে গ্রামে ডিওয়াইএফ এর নেতৃত্বে যুব কমিটি গঠন ও পরিচালনা করা, ২.সামাজিক অবক্ষয় রোধে যুব সমাজের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা, ৩. গ্রামের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সামাজিক প্রশাসনকে যথাযথ সহযোগিতা করা, ৪.বাল্যবিবাহ রোধে ও শিক্ষার প্রসারে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা, ৫.জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে পুর্নস্বায়ত্তশাসন আন্দোলনে সমাজের, যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ করা, ৬. দালাল, লেজুড়বৃত্তি ও জাতির স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সামাজিকভাবে প্রতিহত করা ও ৭.জাতীয় অস্তিত্ব ধ্বংসের মুখে, অস্তিত্ব রক্ষার্থে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়া।

 





0/Post a Comment/Comments