""

সিন্দুকছড়ির গড়িয়াছড়ি সেনাক্যাম্প এলাকায় ক্ষেত-বাগান ধ্বংসের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পোস্টারিং


গুইমারা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
 ।। খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের গড়িয়াছড়ি (গড়াইছড়ি) সেনাক্যাম্প এলাকায় পাহাড়িদের কচু-হলুদ ক্ষেত, কলা ও সেগুন গাছ কেটে ধ্বংস করে দেয়ার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী পোস্টারিং করেছে।

গতকাল (১২ অক্টোবর ২০২১) সন্ধ্যায় তারা এলাকার বিভিন্ন স্থানে হাতে লেখা পোস্টারিং করে।

এসব পোস্টারে কচু ক্ষেত ও বাগান ধ্বংসের সাথে জড়িত দের শাস্তি চাই’, ‘কচু ক্ষেত ও বাগান নষ্ট করে দেয়ার জন্য ক্ষতিপূরণ চাই’, ‘গড়িয়া ছড়ি (গড়াই ছড়ি) সেনা ক্যাম্প তুলে নাও’, ‘গড়িয়াছড়ি ক্যাম্প (গড়াইছড়ি ক্যাম্প) কমাণ্ডারের শাস্তি চাই’, ‘সিন্দুকছড়িতে ভূমি বেদখল বন্ধ কর’ ইত্যাদি দাবি লেখা রয়েছে।


এ সময় এলাকার এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমরা যুগ যুগ ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছি। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এই পাহাড়গুলোতে ফসল উৎপাদন করে বৃদ্ধ হয়েছি। এ ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক সময় আমাদের অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয়েছে। কিন্তু সেনাপ্রধান সফরে আসার অজুহাতে গড়িয়াছড়ি ক্যাম্পের সেনারা আমাদের গ্রামবাসীদের কচু ক্ষেত, হলুদ ক্ষেত, কলা গাছ ও সেগুন বাগান কেটে ক্ষতি সাধন করে দিয়েছে। এতে তারা সৌন্দর্যের কথা বললেও সৌন্দর্য তো বাড়েইনি বরং শ্রীহীন হয়েছে’।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত সেনাসদস্যদের এমন গর্হিত কাজের জন্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। জনগণকে অনেক সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেনা সদস্যরা যদি জনগণকে এমন ক্ষতি করে তাহলে তাদের কাছ থেকে জনগণ কী আশা করবে’?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক যুবক বলেন, ‘সেনারা আমাদের জায়গা দখল করে অন্যায়ভাবে ক্যাম্প স্থাপন করেছেন। এখন আবার আমাদের ফসলও নষ্ট করে দিচ্ছেন! অথচ ১৫/১৬ বছর ধরে জায়গা মালিকদেরকে জায়গার কোন ভাড়া দেওয়া হয়নি’।


তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্য প্রায় সময়‌ ‘পতিত জায়গা খালি না রেখে উৎপাদন করার জন্য জনগণকে পরামর্শ দেন। অথচ এখানে সেনা সদস্যরা সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা আমাদের উৎপাদিত ফসল নষ্ট করে দেয়, আমাদের জায়গা-জমি জোর করে কেড়ে নেয়’।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষেত, বাগান নষ্ট করে দেয়ার বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রতিবাদ করবো। প্রয়োজনে আমরা ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো।

সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, ‘শুনেছি বর্তমান সেনাপ্রধান প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন। তাঁর সফরের কারণ দেখিয়ে যেভাবে জনগণের ফসল নষ্ট করে দেয়া হলো এজন্য তিনি কি কোন পদক্ষেপ নেবেন’?  

তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধানের সফরের নাম করে যেভাবে জনগণের ক্ষতি করা হয়েছে তা তো অন্যায় বলতেই হবে।  সাধারণ লোকের ক্ষেত খামার ধ্বংস করে করে দিয়ে জীবিকার পথ বন্ধ করে দেয়া তো মানবাধিকার লঙ্ঘন। শুধু তাই নয়, বনের গাছ-পালা কেটে ফেলে সেখানে পরিবেশেরও ক্ষতি করা হয়েছে। তাই ক্ষতিগ্রস্তদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ অবশই দিতে হবে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের কাছে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের ক্ষমা চাওয়া দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন’।





0/Post a Comment/Comments