""

দীঘিনালায় শহীদ ভরদ্বাজ মুনির ২৯তম শহীদবার্ষিকী পালিত


দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
 ।। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ)-এর দীঘিনালা উপজেলা শাখার উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ভরদ্বাজ মুনির ২৯তম শহীদবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

‌‘আত্মমর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বাঁচতে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যুক্ত হোন, পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াই এগিয়ে নিন’ এই শ্লোগানে আজ ১৩ অক্টোবর ২০২১, বুধবার সকাল ৯টায় দীঘিনালা উপজেলা সদর এলাকায় শহীদ ভরদ্বাজ মুনির স্মরণে নির্মিত অস্হায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান পিসিপি, ডিওয়াইএফ ও এইচডব্লিউএফ-এর দীঘিনালা শাখার নেতৃবৃন্দ, ইউপিডিএফ-এর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দীঘিনালা ইউনিটের সদস্য অনিক চাকমা, অটল চাকমা, শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদ ভরদ্ধাজ মুনির পুত্র জনু বিকাশ চাকমা, দীঘিনালা এলাকাবাসী পক্ষে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিমল কান্তি চাকমা, প্রমোদ কান্তি চাকমা। এছাড়াও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী পক্ষে থেকেও ফুলি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এরপর সকাল ১০টায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শুরুতেই পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ভরদ্বাজ মনি চাকমাসহ জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন সেসকল বীর শহীদদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

পরে ভরদ্বাজ মুনির স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন নিকেল চাকমা।


এরপর পিসিপি’র দীঘিনালা উপজেলার সভাপতি অনন্ত চাকমার সভাপতিত্বে ও ডিওয়াইএফ এর দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চাকমার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নীতি চাকমা, পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক নিকেল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি রিটেন চাকমা।

এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শহীদ ভরদ্বাজ মুনির পুত্র জনু বিকাশ চাকমা। এতে ১৯৯২ সালে ১৩ অক্টোবরের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আর্যপ্রিয় চাকমা সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৯২ সালের আজকের এই দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে এসে ৭০ বছর বয়স্ক ভরদ্বাজ মনি আত্মবলিদান দিয়েছেন। শহীদ ভরদ্বাজ মুনি দেখিয়েছেন কিভাবে জাতির মুক্তির জন্য রক্ত দিতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে শহীদ ভরদ্বাজ মনির নামটি অমর হয়ে থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভরদ্বাজ মুনিকে হত্যার ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সরকার সেই হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার করেনি।


বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনে শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। প্রতিনিয়ত শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন, খুন, ভূমি বেদখল করেই যাচ্ছে। তারা বলেন, পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করার জন্য একদিকে সেনাবাহিনীকে দিয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন, অপরদিকে নব্য মুখোশ বাহিনী সৃষ্টি করে অরাজক পরিস্থিতি জিইয়ে রেখেছে।

বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল শহীদদের আত্মবলিদান থেকে শক্তি সঞ্চার করে দৃঢ়তা ও সাহসের সাথে শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের আন্দোলন জোরদার করার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় ১৯৯২ সালের সময়কার আন্দোলনের বহু দুর্লভ ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।





0/Post a Comment/Comments