""

কাউখালীতে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলো পিসিপি

কাউখালী প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২২


রাঙামাটির কাউখালীতে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কাউখালী উপজেলা শাখা।

আজ সোমবার (১৭ জানুয়ারি ২০২২) এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

“যারা যোগ্য তাদের সমাজ ও জাতির প্রতি দায়িত্বও বেশী, এসো প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করি’ এই স্লোগানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পিসিপি’র কাউখালী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকমার সঞ্চালনায় ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি রুপক চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক প্রত্যুশা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি থুইনুমং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দয়া সোনা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রোনাল চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তনুময় চাকমা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র কাউখালী উপজেলা শাখার সদস্য দেবাশীষ চাকমা।

শুরুতে এযাবতকালে অধিকার আদায়ে লক্ষ্যে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

পরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দলীয় সংগীত ‘পাহাড়ি ছাত্র ছাত্রী দল’ গানটির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্যে পিসিপি’র কাউখালী উপজেলা শাখার সদস্য দেবাশীষ চাকমা উপস্থিত এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শির্ক্ষাথীদের অভিনন্দন জানান।


অনুষ্ঠানে প্রত্যুশা চাকমা বলেন,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের এই উদ্যোগকে ইউপিডিএফ স্বাগত জানায়। শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলে হবে না, তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। নিজেদের মধ্যে জাতীয় চেতনাবোধ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে ভূমিকা পালন করতে হবে।

থুইনুমং মারমা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশে দ্বৈত শাসন অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন ব্যবস্থা সমতলের থেকে ভিন্ন। এখানে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসন অপারেশন উত্তরণ চলছে। এর মাধ্যমে জারি রাখা হয়েছে অন্যায়-অবিচার, নিপীড়ন-নির্যাতন। এর থেকে মুক্তির জন্য ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সমাজ ও জাতির ভাগ্য পরির্বতনের লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

দয়াসোনা চাকমা বলেন, আমাদের শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য শিক্ষাগ্রহণ করলে হবে না, জাতীয় অধিকার অর্জনেও ভূমিকা রাখতে হবে। সুশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী পারে সমাজ ও জাতির পরিবর্তনের হাল ধরতে।

রোনাল চাকমা বলেন, যার জানার আগ্রহ বেশী তার জ্ঞানের পরিধিও বেশী। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক জীবন গড়া নয়, মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। কেউ রাজনীতি পছন্দ না করলেও মনে রাখতে হবে আমরা সবাই রাজনীতির গন্ডিতে আবদ্ধ। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা নিপীড়িত-নির্যাতিত, অধিকার বঞ্চিত। সুতরাং আমাদেরকেই লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে।


তনুময় চাকমা বলেন, আশি-নব্বই দশকে জুম্মদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জন্ম হয়। এই লড়াকু সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকেই সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। এই সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সামিল হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধু আত্মকেন্দ্রিক হলে চলবে না, তাদেরকে অগ্রসর চিন্তা-চেতনা লালন করতে হবে, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এ সময় তাদেরকে উপহার হিসেবে বই প্রদান করা হয়।

পরে প্রতিবাদী গান ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।





0/Post a Comment/Comments