""

ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যেকার সাম্প্রতিক সমঝোতা, তার লঙ্ঘন-জনিত উদ্ভূত সমস্যা ও সংলাপ সম্পর্কে

 ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত না গণআন্দোলন?


মিল্টন চাকমা, প্রধান সংগঠক, ইউপিডিএফ দীঘিনালা উপজেলা ইউনিট


 ১১ জুনের হামলা সত্বেও আমাদের পার্টির সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা ১৩ জুন জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমাকে সরকারের কাছে ইউপিডিএফের সদ্য পেশ করা দাবিনামার কপি সংযুক্ত করে একটি চিঠি দেন এবং ‘সরকারের সাথে চলমান সংলাপ প্রক্রিয়াকে সাফল্যমণ্ডিত করতে তথা উত্থাপিত দাবি আদায়ে ব্যক্তিগতভাবে’ সন্তু লারমার ও তার দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। কিন্তু সন্তু লারমা এই চিঠির উত্তর না দিয়ে পার্টির উপর হামলা অব্যাহত রাখেন। গত ১২ ও ১৮ জুলাই তাদের পর পর দুটি হামলায় দু’জন প্রাণ হারান। অপরদিকে এমন চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতাকর্মী এখনো ধৈর্য্য, সংযম ও সহনশীলতা দেখিয়ে চলেছে। জেএসএস নেতাদের সুমতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হিসেবে তাদের উপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের কৌশল অবলম্বন করছে।

দীর্ঘ সাত বছর বিরতির পর সম্প্রতি ইউপিডিএফের উপর জেএসএসের (সন্তু) নতুন করে হামলা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য এক অশুভ ইঙ্গিত দিয়েছে। ২০১৫ সালের মধ্যভাগ থেকে এই হামলা বন্ধ থাকে এবং ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী দুই পার্টির মধ্যে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বৈঠকে একটি ৩-দফা সমঝোতা হয়। আলোচনার প্রক্রিয়াও চলমান ছিল। কিন্তু জেএসএস উক্ত সমঝোতার শর্ত লঙ্ঘন করে ২০২০ সালের ৫ মে পানছড়ি ও দীঘিনালার বাবুছড়ায় প্রবেশ করে এবং আন্দোলনের জন্য ক্ষতিকর ও পার্টির জন্য হুমকিমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে থাকে। ইউপিডিএফ মৌখিক ও লিখিতভাবে এর বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানায় এবং একইসাথে চরম ধৈর্য্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে।

উক্ত প্রতিবাদের জবাবে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ জেএসএস নেতা শক্তিপদ ত্রিপুরা আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাকে ফোন করে জানান, তারা আমাদের পার্টির প্রতিবাদলিপি পেয়েছেন। তার বক্তব্যের সারমর্ম ছিল: তাদের আর্থিক দুরাবস্থার কারণে তারা পানছড়ি ও বাবুছড়ায় আসতে বাধ্য হয়েছেন, তবে তারা শীঘ্র তাদের লোকজনকে সেখান থেকে ফিরিয়ে নেবেন। তিনি তাদের একটি ছোট টিমকে বিশেষ কাজের জন্য আমাদের এলাকায় থাকতে অনুমতি দেয়ার অনুরোধ করেন।

এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা শক্তিপদ ত্রিপুরার সাথে তার ফোনালাপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জেএসএস নেতৃত্বের কাছে একটি চিঠি দেন। ‘জেএসএস নেতাদের কাছে আমাদের বার্তা’ শিরোনামে লিখিত চিঠিতে আমাদের সাথে সংঘাতে জড়ানোর ইচ্ছে নেই বলে জেএসএসের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। এতে ২০১৮ সালের সমঝোতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আরও বলা হয়, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, উক্ত সমঝোতা লঙ্ঘন করে ৫ মে ২০২০ থেকে আমাদের এলাকায় প্রবেশ করে আপনাদের গ্রুপগুলোর অবস্থান আমাদের কাছে একেবারে অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য।’ উক্ত চিঠিতে জেএসএসের কর্মীদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানানো হয় এবং এরপর দুই পার্টির প্রতিনিধিদের মুখোমুখি বৈঠকে অন্যান্য বিষয়গুলো আলোচনা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

কিন্তু জেএসএস এই চিঠির কিংবা তার আগের চিঠির কোন জবাব দেয়নি এবং শক্তিপদ ত্রিপুরার দেয়া তাদের দলের কর্মীদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও পালন করা হয়নি। অপরদিকে ইউপিডিএফ জেএসএসের হুমকিমূলক অবস্থান ও উস্কানিমূলক আচরণের মধ্যেও অত্যন্ত ধৈর্য্য ও সংযম প্রদর্শন করে। আমাদের পক্ষ থেকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেও উদ্ভুত সমস্যাটির সমাধান লাভের চেষ্টা করা হয়। পানছড়ির জনগণ নিজেরা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেন এবং সংঘাত বন্ধের জন্য চেষ্টা চালাতে থাকেন। ইউপিডিএফ তাদের এই উদ্যোগকে পূর্ণ সমর্থন জানায়। কিন্তু আমাদের পার্টির বারংবার দাবি এবং জনগণের ব্যাপক চাপ সত্বেও জেএসএস তাদের কর্মীদের সরিয়ে নিতে অস্বীকার করে। শুধু তাই নয়, তারা দীঘিনালার বাবুছড়ায় আমাদের নিরাপত্তা বিঘিœত করে তাদের কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়।

তবে নানামুখী চাপের ফলে এক পর্যায়ে নারেইছড়িতে কর্মরত জেএসএস নেতা অর্জুন ত্রিপুরা লোক মারফত আমাদের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দেন। তার জবাবে আমাদের পার্টির পক্ষে তপন বাবুর নামে ১৯ মে ২০২২ অর্জুন বাবুকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চাকমা ভাষায় লেখা উক্ত চিঠিতে পার্টির পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ১) আলোচনায় জনগণের পক্ষ থেকে ১০/১২ জন মুরুব্বী উপস্থিত থাকতে হবে, ২) আলোচনার এজেন্ডা হবে জনগণের দাবি নিয়ে ন্যুনতম কর্মসুচির ভিত্তিতে যৌথভাবে আন্দোলন করা এবং তার জন্য একশন কর্মসুচি ঠিক করা, ৩) আলোচনা লিখিত হতে হবে, অর্থা আলোচনার মিনিটস ও সমঝোতা (যদি হয়) লিখিত এবং উভয় পক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে এবং ৪) আলোচনার স্থান হবে মেইনীর নারেইছড়ি।

উক্ত চিঠি পাওয়ার পর অর্জুন ত্রিপুরা ২১ মে ২০২২ মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ৩টি বিষয় আমাদের জানান। এক. আলোচনায় কোন শর্ত থাকবে না, দুই. তাদের কাছে উচ্চতর কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে দ্রুত আমাদের সাথে আলোচনায় বসার জন্য, তিন. এবার থেকে তাদের নেতা সুগম এ ব্যাপারে আমাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবেন।

২৮ মে আমাদের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে জেএসএসের কাছে নিন্মোক্ত বক্তব্য জানিয়ে দেয়া হয়:

১) জেএসএস নেতা অর্জুন ত্রিপুরার জবাব অত্যন্ত হতাশাজনক। তার কথায় বুঝা গেছে যে, তারা আলোচনা-সমঝোতা লিখিত হোক তা চান না, তারা কি বিষয়ে আলোচনা করতে চান বা আলোচনার এজেন্ডা কি হবে তা তারা বলতে পারেননি, বা বলতে চাননি বা এজেন্ডা রাখতে চাননি। এমনকি তারা আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীদেরও রাখতে চান না। কিন্তু কেন চান না তা তারা স্পষ্ট করেননি। মোট কথা, জেএসএস আমাদের সাথে কি বিষয়ে আলোচনা করতে চায় তা অর্জুন ত্রিপুরার কথায় স্পষ্ট নয়।

২) জেএসএসের সাথে এযাবত তিন বার অলিখিত সমঝোতা হয়েছে (জেএসএস লিখিত সমঝোতা চায় না, সে কারণে), যার প্রত্যেকটি তারা লঙ্ঘন করেছে। সমঝোতা অলিখিত হলে তার গুরুত্ব থাকে না, বা তারা গুরুত্ব দিতে চায় না। আলোচনা সমঝোতা লিখিত করতে না চাওয়ার মাধ্যমেই বৈঠকের ব্যাপারে জেএসএসের আন্তরিকতার অভাব স্পষ্ট।

৩) এজেন্ডা ছাড়া আলোচনা ফলপ্রসু হবে না। আমরা বুঝতে পারি না তারা কেন আন্দোলন বিষয়ে আলোচনা করতে চায় না।

৪) আমাদের প্রস্তাবিত এজেন্ডা ছাড়া যদি তাদের কোন এজেন্ডা থাকে তাহলে তারা তা আমাদের জানাতে পারেন, আমরা তা আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবো।

৫) আমাদের সাথে আলোচনার জন্য তারাই প্রথমে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছেন, কিন্তু এখন কেন আলোচনায় তাদের রাখতে চান না?

৬) আমরা মনে করি ২০১৮ সালে তাদের সাথে আমাদের যে সমঝোতা হয় তা মেনে চলা হলে দুই পার্টির মধ্যে চলমান টানাপোড়েন সম্পর্ক ঘুচে যাবে। তারা সমঝোতা মেনে চলছে না বলেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

৭) জাতি ও জনগণের কাছে উভয় পার্টির দায়িত্ব রয়েছে, এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের আসল কাজ হলো জাতির তথা জনগণের সকল শক্তি একত্রিত করে সংগ্রাম করা।

আমাদের উক্ত বক্তব্য নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা জেএসএস নেতাদের কাছে যান এবং ৮ জুন সুগম বাবু ও প্রভাত বাবুর বার্তা নিয়ে ফিরে আসেন। তারা আমাদের জানান, ১) জেএসএস আমাদের উপর হামলা চালাবে না, ২) সন্তু বাবু তাদেরকে আমাদের পার্টির সাথে ঐক্য প্রক্রিয়া জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ৩) তারা ফাঁস হওয়ার ভয়ে আমাদের সাথে বক্তব্য আদান-প্রদান লিখিতভাবে করতে চান না। এর আগে জেএসএস নেতা অর্জুন ত্রিপুরা ১৩ মে মধ্যস্থতাকারীদের বলেছিলেন, তাদের দিক থেকে ‘মারামারি’ বন্ধ থাকবে। তিনি এ কথা বলেও আশ^স্ত করেন যে, ‘অর্জুন যেদক দিন থেব, মারামারি নঅভ’। অর্থা অর্জুন যতদিন থাকবে, মারামারি  হবে না।

জেএসএস নেতাদের এইসব বার্তা ও বক্তব্য শুনে আমরা আশান্বিত হলাম। তাই আমাদের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তাদেরকে জানিয়ে দেয়া হল, তাদের সর্বশেষ প্রস্তাবের বিষয়ে আমাদের সম্পূর্ণ জবাব জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হবে।

কিন্তু নির্মম পরিহাস, যখন এভাবে কথা চালাচালির মাধ্যমে আলোচনার প্রক্রিয়া চলমান, তখনই ১১ জুন জেএসএস পানছড়ি ও দীঘিনালায় কোন প্রকার উস্কানি ছাড়া এবং তাদের নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভঙ্গ করে আমাদের উপর হামলা করে বসে। পরদিন অর্থা ১২ জুন আমরা উক্ত হামলাকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক’ বলে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তাদের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মধ্যস্থতাকারীদের কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়:

১) উপরেল্লিখিত হামলার পর আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, তাদের (জেএসএসের) কথা ও কাজের মধ্যে কোন মিল নেই। তাই দুই পাটির মধ্যে আলোচনার ব্যাপারে তাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের পার্টির কর্মীমহলে ব্যাপক সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

২) গতকালের হামলার পর (১১ জুন ২০২২) রাতে জেএসএস নেতা অর্জুন ত্রিপুরা আপনাদেরকে ফোনে জানিয়েছেন (আপনাদের তথ্য মতে): ‘যা ঘটে গেছে, ঘটে গেছে, তবে এটা এখনও বন্ধ করার সুযোগ আছে।’ এ সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য হলো এটা তারাই শুরু করেছে, বন্ধ করার দায়িত্বও তাদের। আমাদের দিক থেকে তারা এটা বন্ধ করার জন্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবো।

৩) তাদের উক্ত হামলাসহ অন্যান্য বিভিন্ন কার্যকলাপের ফলে আলোচনা-সংলাপের ব্যাপারে তাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা নিয়ে যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে তা দুর করতে তাদেরকেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৪) ২০১৮ সালের সমঝোতার শর্ত মেনে চলাই হলো দুই পার্টির মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।

১১ জুনের হামলা সত্বেও আমাদের পার্টির সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা ১৩ জুন জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমাকে সরকারের কাছে ইউপিডিএফের সদ্য পেশ করা দাবিনামার কপি সংযুক্ত করে একটি চিঠি দেন এবং ‘সরকারের সাথে চলমান সংলাপ প্রক্রিয়াকে সাফল্যমণ্ডিত করতে তথা উত্থাপিত দাবি আদায়ে ব্যক্তিগতভাবে’ সন্তু লারমার ও তার দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। কিন্তু সন্তু লারমা এই চিঠির উত্তর না দিয়ে পার্টির উপর হামলা অব্যাহত রাখেন। গত ১২ ও ১৮ জুলাই তাদের পর পর দুটি হামলায় দু’জন প্রাণ হারান। অপরদিকে এমন চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতাকর্মী এখনো ধৈর্য্য, সংযম ও সহনশীলতা দেখিয়ে চলেছে। জেএসএস নেতাদের সুমতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হিসেবে তাদের উপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের কৌশল অবলম্বন করছে।

আমাদের প্রত্যেকের উচিত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও উভয় দলের কার্যক্রম-কলাকৌশল সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা এবং তার ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারণ আমরা যদি সেটা করতে ব্যর্থ হই তাহলে আমাদের আন্দোলন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের মতে বর্তমান পর্যায়ে আন্দোলন প্রশ্নে দুই পার্টির অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইউপিডিএফের উদ্দেশ্য হলো গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের ন্যায্য অধিকার অর্জন করা। এজন্য পার্টি ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণকে সাথে নিয়ে কর্মসুচি বাস্তবায়ন করছে। ইউপিডিএফ যেহেতু আন্দোলনমুখী, তাই তার জন্য ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত অর্থা নিজেদের মধ্যে হানাহানি ক্ষতিকর। সেজন্য ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান। ইউপিডিএফ চায় জনগণের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন সংগঠিত করতে, কারণ বিজয়ের জন্য জনগণের ঐক্য একটি অপরিহার্য শত।

অপরদিকে জেএসএসের পলিসি হলো ইউপিডিএফকে নির্মূল করা। তারা বহু আগে একেবারে তাদের দলীয় কংগ্রেসে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। নানা চাপে মাঝেমধ্যে তারা আমাদের পার্টির সাথে সমঝোতা করতে বাধ্য হলেও তা হলো কৌশলগত। সেকারণে সমঝোতা সত্বেও সুযোগ বুঝে তারা সেই সমঝোতা লঙ্ঘন করে আমাদের উপর হামলায় চালাতে কসুর করে না। জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের জন্য তাদের কোন কর্মসূচী চোখে পড়ে না। এমনকি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যও তাদের কোন কর্মসুচি নেই। সম্প্রতি ভূমি বেদখল, সেটলার হামলা ও নারী ধর্ষণসহ অনেক ঘটনা ঘটেছে। এর বিরুদ্ধে কয়েকটি জাতীয় সংগঠনও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অথচ জেএসএস সে বিষয়ে একেবারে নিশ্চুপ।

ইউপিডিএফ ও জেএসএসের এই পরস্পর বিরোধী নীতি ও কর্মকৌশল সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত নিন: আপনি কী জেএসএস অনুসৃত ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত নীতির পক্ষে, নাকি জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য ইউপিডিএফের গৃহীত আন্দোলনমুখী কর্মসুচির পক্ষে? তবে যেই সিদ্ধান্ত নিন, তার জন্য আপনাকে দায়ি থাকতে হবে এবং একদিন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ কালই ইতিহাস শেষ হয়ে যাবে না। #

* লেখা ও ছবিগুলো ইউপিডিএফ’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।

 





0/Post a Comment/Comments