সিএইচটি নিউজ ডটকম, রবিবার, নভেম্বর ২০, ২০১৬
ঢাকা : পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ন্যুনতম নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলে
অভিযোগ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আাদায়ের জন্য সোচ্চার রাজনেতিক দল ইউনাইটেড
পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।
আজ রবিবার (২০ নভেম্বর) সকালে ঢাকার রিপোর্টাস ইউনিটি হলরুমে অনষ্ঠিত
সংবাদ সম্মেলনে ইউপিডিএফের নেতৃবৃন্দ এমন অভিযোগ করেন। এতে তারা বলেন, আমরা উচিত কথাও
বলতে পারছি না। সরকার আমাদেরকে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে কিনা সেটাই আমাদের
প্রশ্ন জাগে।
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভাষা-ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জাতিসত্তা-সম্প্রদায়ের
ওপর অব্যাহত ধরপাকড়, আক্রমণ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ-উপসনালয় ধ্বংস-ভূমি বেদখল এবং দমন-পীড়নের
প্রতিবাদে ও কর্মসূচি ঘোষণার লক্ষ্যে ইউপিডিএফ উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাসহ
আটক সকল নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, দমনমূলক ১১ নির্দেশনা প্রত্যাহার ও 'অপারেশন
উত্তরণ' তুলে নেয়াসহ ৫ দফা দাবি জানানো হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জনসহ
ধারাবাহিক কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, দেশে ‘পঞ্চদশ সংশোধনী আইন’
করার ফলে আমাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতি কেড়ে নেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন
উত্তরণ’ জারি রয়েছে, ফলে সেনাবাহিনীর খবরদারি রয়েছে আগের মতোই।এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় কর্তৃক দমনমূলক বিতর্কিত ‘১১দফা নির্দেশনা’ জারি কার্যত পার্বত্য চট্টগ্রামে
ফৌজী শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আমরা এখন রাস্তায় নামতেও পারি না। অন্যায়ভাবে সেনাবাহিনী
ধরে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউপিডিএফ তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে সাম্প্রতিক
সময়ে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের তথ্য প্রদান করা হয়। এতে বলা হয় গত ১৩ নভেম্বর খাগড়াছড়ি
পৌর এলাকার সন্নিকটে পেরাছড়া হাইস্কুলের পাশের একটি খোলা জায়গা থেকে ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড
পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও খাগড়াছড়ি ইউনিট-এরপ্রধান সংগঠক উজ্জ্বল
স্মৃতি চাকমাসহ ৬ জনইউপিডিএফ নেতা-কর্মীকে ওয়ারেন্ট ছাড়া আটক করে সেনাবাহিনী। আটক অবস্থায়
সেনা সদস্যরা তাদের সাথে অশোভন ব্যবহার করে, অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালায়, হাতে অস্ত্র
গুঁজে দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করার আগে অত্যন্ত অসম্মানজনকভাবে ছবি উঠায়। লোকসমাজে
তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সে ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়, পত্রিকায় ছাপানোর বন্দোবস্ত
করে।
গত ২৩ অক্টোবর পিসিপি সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমাকে গ্রেফতার অসুস্থ
মা’কে চিকিৎসার্থে চট্টগ্রাম নেবার পথে পানছড়ি থানার সামনে বিপুল
চাকমা’কে আটক করা হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিজ চক্ষে পুত্রের সাথে অশোভন ব্যবহার
ও গ্রেফতারের মানসিক ধকল সইতে না পেরে পরের দিন ২৪ অক্টোবর বিপুলের মা মৃত্যুর মুখে
ঢলে পড়েন। ঘটনাটি এতটাই হৃদয় বিদারক যে, দাহক্রিয়ার দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত
পুলিশ সদস্যদের কয়েক জন চোখের জ¦ল ধরে রাখতে পারেন নি। পিসিপি নেতা
বিপুলের প্রতি এ অবিচার সমাজে নাড়া দেয়। সামাজিক মিডিয়ায় ব্যাপক নিন্দার ঝড় ওঠে। দেশের
গণতান্ত্রিক বিবেক এ সময় সরব হয়, প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখে।
২ নভেম্বর বিনয়ন ও অনিল চাকমাকে প্রেস কনফারেন্স থেকে আটক ও ফেইস বুকে
ষড়যন্ত্র পিসিপি নেতা বিপুল চাকমা’র মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়ি ইউপিডিএফ কার্যালয়ে সংবাদ
সম্মেলন-করা অবস্থায় সেনা সদস্যরা পিসিপি’র সহ:সভাপতি বিনয়ন চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক
অনিল চাকমা’কে গ্রেফতার করে। ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
এছাড়া গত ১১ জুলাই খাগড়াছড়িতে নিজ বাসা থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক মিঠুন চাকমাকে,
গত ২৭ আগস্ট গুইমারা থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সদস্য ও ইউপিডিএফ সংগঠক ক্যহ্লাচিং
মারমা, গত ২৯ সেপ্টেম্বর পানছড়ি থেকে ৯জন কলেজ ছাত্র মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে বলে
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এতদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয়ভাবে
যে দমন-পীড়ন চলছে, যৌক্তিক নিয়মে তা পার্বত্য চট্টগ্রাম গণ্ডি পেরিয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার
নাসিরনগর-হবিগঞ্জের মাধবপুর-মনতলা; সুনামগঞ্জের ছাতক বাজার; মৌলভীবাজারের কমলপুর, রাজশাহীদিনাজপুর
গাইবান্ধায় সম্প্রসারিত হয়েছে। এর বাইরেও রামু-কক্সবাজারসহ আরো বহু ঘটনা ঘটেছে, এগুলো
সাম্প্রতিক বলে বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-
১। অবিলম্বে উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাসহ আটক ইউপিডিএফ নেতা-কর্মী-সমর্থক
ও নিরপরাধ সাধারণ লোকদের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে সকল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
এবং ধরপাকড় বন্ধ করতে হবে। আটকের সময় নেয়া পার্টি মেসের টাকা-মালামাল ফেরত প্রদান করতে
হবে।
২। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
দমনমূলক ‘১১দফা নির্দেশনা’ প্রত্যাহার ও ‘অপারেশন উত্তরণ’ তুলে নিতে হবে।
৩। রাঙ্গামাটি এসপি কর্তৃক পেশকৃত কল্পনা অপহরণ তদন্ত রিপোট বাতিল ঘোষণাপূর্বক
তদন্ত কার্যক্রম নতুনভাবে শুরু করতে হবে এবং চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসসহ
তার দোসরদের গ্রেফতার করতে হবে।
৪। গাইবান্দায় সান্তাল জাতিসত্তার ওপর হামলাকারীদের বিচার এবং সান্তালদের
জমি ফিরিয়ে দিতে হবে।
৫। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ
বিভিন্ন স্থানে হিন্দু বসতিতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাট, মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুরের হোতাদের
অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান
করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউপিডিএফ নেতা উজ্জ্বল স্মৃতিসহ অন্যায়ভাবে বন্দী
সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং
পার্বত্য চট্টগ্রামে মৌলিক নাগরিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি
হিসেবে কাল ব্যাজ ধারণ; মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীকী অনশন, অফিস আদালত বর্জন,
রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জন ও স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে নির্ধারিত কিছু কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। এগুলো
হচ্ছে- * ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে আলোচনা, *১০ ডিসেম্বর বিশ^ মানবাধিকার দিবসে
আলোচনা সভা ও র্যালি, *১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা
সভা এবং *১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জন : বগাছড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ হামলাকারী পাকিস্তানপন্থী
সেনা-আমলা-সেটলার সর্দারদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিশেষ ব্যাজ পরিধান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপিডিএফ ঢাকা ইউনিটের সংগঠক
মাইকেল চাকমা। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, ইউপিডিএফএর
কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিপন
চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স
ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মন্টি চাকমা।
------------------------
নীচে সংবাদ সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যের পুরো কপি সংযুক্ত করা হলো:
পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ধরপাকড় ও দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে
ইউপিডিএফ-এর সংবাদ সম্মেলন
২০ নভেম্বর ২০১৬
রিপোটার্স ইউনিটি, ঢাকা
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
আপনারা আমাদের সংগ্রামী অভিবাদন গ্রহণ করুন।
আমরা এমন এক সময়ে আপনাদের সম্মুখে হাজির হয়েছি যখন দেশে একের পর দুঃখজনক
ঘটনা ঘটে চলেছে। অন্য অনেক দুঃখজনক মর্মান্তিক ঘটনা ছাপিয়ে ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে
সান্তাল জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত বর্বরোচিত আক্রমণ ৩ খুন-জখম-গ্রেফতার, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ,
কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ভূমি বেদখল, সান্তালদের দুর্বিষহ জীবনযাপনের চিত্র এখন জনগণের
সামনে জ¦লজ¦ল হয়ে রয়েছে।
দেশের গণতান্ত্রিক বিবেক তার প্রতিবাদে সরব হয়েছে এবং তাই হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
এক্ষেত্রে সচেতন পর্যবেক্ষকদের নিকট একটি বিষয় কখনই নজর এড়াবে না তা
হচ্ছে, এ ধরনের আক্রমণ শুধু গাইবান্ধায় নয় বা কেবল সান্তাল জাতিসত্তার ওপরও নয়, দেশের
অন্যত্রও যেমন ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগর-যশোহরের অভয়নগর-পাবনার সাঁথিয়াসহ নানা জায়গায়
এ ধরনের আক্রমণ পরিচালিত হচ্ছে। এর শিকার হচ্ছে প্রধানতঃ দেশের সংখ্যালঘু, ভিন্ন ভাষা-ভাষী
জাতিসত্তা-ভিন্ন ধর্মাবলম্বী- সম্প্রদায়এবং ক্ষেত্র বিশেষে আক্রমণ থেকে বাদ পড়ছে না
বৃহত্তর বাঙালি জাতির মধ্যকার প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীও, যা গোবিন্দগঞ্জে পরিলক্ষিত
হয়েছে। এ ধরনের অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে, তার বিশদ বিবরণ এখানে তুলে ধরার অবকাশ নেই।
প্রিয় বন্ধুরা,
এখানে লক্ষ্য করার বিষয়টি হচ্ছে এই, এ আক্রমণ কোথাও ধর্মীয় পরিহানির
উছিলায়, আবার কোথাও পর্যটন, বনায়ন, আবার কোথাও সেনা ক্যাম্প নির্মাণ-সম্প্রসারণ নানা
বাহানায় চলছে। বলতে গেলে পরিকল্পিতভাবেরাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বা প্রশ্রয়ে দুর্বল সংখ্যালঘু
জাতিসত্তার জনগণের ওপর আক্রমণ-লুটপাট-ধ্বংসযজ্ঞ, বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ-ভূমি বেদখল
অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এদিক দিয়ে বলতে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে ধ ংরঃঃরহম ফঁপশ
আক্রমণের সহজ লক্ষ্যবস্তু। তথাকথিত ‘অপারেশন উত্তরণ’-এর নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে জারি
রয়েছে কার্যত ফৌজী শাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কর্তৃক দমনমূলক ‘১১দফা নির্দেশনা’ জারির
পর থেকে ফৌজী শাসনকে বাস্তবত বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রত্যক্ষ
অংশগ্রহণে বা কখনও সেটলার লেলিয়ে দিয়ে পাহাড়ি জনগণের ওপর আক্রমণ-হত্যাকা--ধর্ষণ-উচ্ছেদ
অভিযানসহ মানবতা বিরোধী বর্বরোচিত কর্মকা- পার্বত্য চট্টগ্রামে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায়
পরিণত হয়েছেবললে অত্যুক্তি হবে না। সেনা কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে
সংবাদ মাধ্যমে সে সব নিপীড়ন নির্যাতনের ঘটনা যথাযথভাবে প্রচার পায় না। আবার অনেক সময়
সেনা মদদপুষ্ট একশ্রেণীর মিডিয়া কর্মী বিকৃত তথ্য পরিবেশন করে জন্ম দেয় নানা বিভ্রান্তির।
হত্যাকা- মানবতা বিরোধী কর্মকা- অনেক সময় মনে হয় যেন সমাজে গা-সওয়া হয়ে গেছে, সে নিয়ে
মাথা ঘামানোও হয়ত অনেকে প্রয়োজনবোধ করেন না!
কিন্তু উদ্বেগের কারণ হচ্ছে এই,অন্যায় অবিচার অনেকটা আগুনের মত ছড়িয়ে
পড়ে। এতদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে দমন-পীড়ন চলছে, যৌক্তিক নিয়মে
তা পার্বত্য চট্টগ্রাম গ-ি পেরিয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগর-হবিগঞ্জের মাধবপুর-মনতলা;
সুনামগঞ্জের ছাতক বাজার; মৌলভীবাজারের কমলপুর, রাজশাহী-দিনাজপুর গাইবান্ধায় সম্প্রসারিত
হয়েছে। এর বাইরেও রামু-কক্সবাজারসহ আরো বহু ঘটনা ঘটেছে, এগুলো সাম্প্রতিক বলে বিশেষ
উল্লেখের দাবি রাখে।
ঘটনার গতি প্রকৃতির দিকে তাকালে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়,বর্তমান সময়ে দুর্বল,
সংখ্যালঘু ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসত্তা ও সম্প্রদায় আক্রান্ত হলেও, এ আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু
কেবল সংখ্যালঘু দুর্বল জাতিসত্তা বা সম্প্রদায় নয়। দেশে যারা গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন
ব্যক্তি, সংগঠন, ভিন্ন মতাবলম্বী লেখক-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী-শিল্পী...তারাও এ আক্রমণের
শিকার হয়েছেন এবং আগামীতে তারাই হবেন লক্ষ্যবস্তু। সাম্প্রতিক কালে লেখক-শিল্পী- ব্লগারদের
ওপর আক্রমণ তার আলামত মাত্র। ফ্যাসিবাদের চরিত্র বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তা, ইউরোপের অভিজ্ঞতা
তাই বলে।
সভা-সমাবেশ ও স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে সরকার যেভাবে একে একে নিয়ন্ত্রণ
আরোপ করে বাধা দিচ্ছে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে অনুমোদন দিচ্ছে না--তাকে ফ্যাসিবাদী
দমনমূলক নীতি ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না।
সাংবাদিক ভাইয়েরা,
স্বাধীনতা বিরোধী, জঙ্গী ও মৌলবাদীদের সাথে একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তার
যোগসাজশ এখন আর অপ্রকাশ্য ব্যাপার নয়। ’৭১-এ হানাদার বাহিনীর সাথে যোগসাজশকারী মানবতাবিরোধী
যুদ্ধাপরাধীরা স্বাধীন দেশেই নানাভাবে রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয় পেয়েছে, মন্ত্রীত্বও লাভ করেছে।
প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থায় এখনও তাদের শিকড় রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পাকিস্তানের পক্ষে
শ্লোগান দেয়া এবং বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।
এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে গত বছর ১৬ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটির
বগাছড়িতে পাহাড়ি বসতিতে অগ্নিসংযোগ করে বিজয় দিবসে কালিমা লেপন করা, এ বছর ২১ ফেব্রুয়ারির
মত মহান দিবসে বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে মারধর করে নিজেদের চেহারা উম্মোচিত করেছে সেনাবাহিনীর
মধ্যকার একটি গোষ্ঠী।
এখানে প্রাসঙ্গিক কারণে এটাও বলতে হয়, মুজিব-জাতীয় চার নেতা-জিয়া-খালেদ
মোশারফ-মঞ্জুরসহ বহু রাজনৈতিক নেতা ও সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন সেনাবাহিনীর হাতেই।
দেশে মর্মান্তিক হত্যাকা-ের হোতা জঙ্গীদের প্রশিক্ষণদাতা হচ্ছে সেনাবাহিনীরই লোক, এটা
সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। যারা দেশপ্রেমের শপথ নিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে,
তাদের মধ্যেও একটি অংশ ভিন্ন লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিবেদিত রয়েছে তা অতীত এবং
বর্তমানে বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তার ধুয়ো
তুললেও কার্যত এখানে কায়েমী স্বার্থবাদী একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তা জাতীয় স্বার্থ বিরোধী
কর্মকা-ে লিপ্ত এবং তারা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বেরও ক্ষতিসাধন করছে, এটা মনে রাখা
দরকার।
প্রিয় বন্ধুরা,
এবার বোঝার সুবিধার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত দমন-পীড়ন, সাম্প্রতিক
কালে ধরপাকড়ের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরছি :
১। ১৩ নভেম্বর ২০১৬ : ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৬ জন আটক
খাগড়াছড়ি পৌর এলাকার সন্নিকটে পেরাছড়া হাইস্কুলের পাশের একটি খোলা জায়গা
থেকে ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও খাগড়াছড়ি
ইউনিট-এরপ্রধান সংগঠক উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাসহ ৬ জন ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীকে ওয়ারেন্ট
ছাড়া আটক করে সেনাবাহিনী। আটক অবস্থায় সেনা সদস্যরা তাদের সাথে অশোভন ব্যবহার করে,
অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালায়, হাতে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করার আগে
অত্যন্ত অসম্মানজনকভাবে ছবি উঠায়।লোকসমাজে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সে ছবি
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়, পত্রিকায় ছাপানোর বন্দোবস্ত করে।
ভাঙচুর ও লুটপাট
একই সময়ে পেরাছড়া পার্টি মেস থেকে ব্যাগ ১০টি, পাতি ৪টি, জ্যাকেট ৫টি,
১টি ট্রাঙ্ক, গণচাঁদার তালিকা, দৈনন্দিন খরচের ভাউচার, দলীয় রঙিন পতাকা, প্যান্ট-শার্ট-লুঙ্গি-গামছা
ও গরম কাপড়-চোপড় ইত্যাদি নিয়ে যায়। রান্নার চুলা ভেঙে দেয়। যাবার সময় তরিতরকারিতে কেরোসিন
ঢেলে দিয়ে যায়। এছাড়া কাঠের ওয়ার্ডড্রোব ও স্টিলের আলমিরা ভেঙে দেয়।
পেরাছড়ায় আটকের পর ঐদিন ১:৩০টার দিকে নারাঙহিয়াস্থ অনন্তমাস্টার পাড়ায়
পার্টি মেস-এ এসে সেনা সদস্যরা সেখান থেকে ডিওয়াইএফ এর ফাইলপত্র, সংগঠনের আর্মব্যান্ড,
এইচডব্লিউএফ-এর ৪২ হাজার টাকা, দ্বিতীয়া চাকমা’র বড় ব্যাগ, পিসিপি’র গণস্বাক্ষর অভিযানের
কাগজপত্র, কল্পনা চাকমা’র পোস্টার, ডিওয়াইএফ-এর কর্মী পলাশ চাকমা’র একটি ছাতা ও আইডি
কার্ড ইত্যাদি নিয়ে যায়।
২। ২৩ অক্টোবর পিসিপি সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমাকে গ্রেফতার
অসুস্থ মা’কে চিকিৎসার্থে চট্টগ্রাম নেবার পথে পানছড়ি
থানার সামনে বিপুল চাকমা’কে আটক করা হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিজ চক্ষে পুত্রের সাথে
অশোভন ব্যবহার ও গ্রেফতারের মানসিক ধকল সইতে না পেরে পরের দিন ২৪ অক্টোবর বিপুলের মা
মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন। ঘটনাটি এতটাই হৃদয় বিদারক যে, দাহক্রিয়ার দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে
নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কয়েক জন চোখের জ¦ল ধরে রাখতে পারেন
নি। পিসিপি নেতা বিপুলের প্রতি এ অবিচার সমাজে নাড়া দেয়। সামাজিক মিডিয়ায় ব্যাপক নিন্দার
ঝড় ওঠে। দেশের গণতান্ত্রিক বিবেক এ সময় সরব হয়, প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখে।
৩। ২ নভেম্বর বিনয়ন ও অনিল চাকমাকে প্রেস কনফারেন্স থেকে আটক ও ফেইস
বুকে ষড়যন্ত্র
পিসিপি নেতা বিপুল চাকমা’র মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়ি ইউপিডিএফ কার্যালয়ে
সংবাদ সম্মেলন-করা অবস্থায় সেনা সদস্যরা পিসিপি’র সহ:সভাপতি বিনয়ন চাকমা ও সাংগঠনিক
সম্পাদক অনিল চাকমা’কে গ্রেফতার করে। ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
একই দিন ২ নভেম্বর মাটিরাঙ্গায় সাগর হোসেন নামে ছাত্রদলের এক কর্মী পাহাড়ি
ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য কুনেন্টু চাকমার নামে ’কোরআন শরীফ অবমাননা’র ঘটনা সাজিয়ে
সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। উক্ত ঘটনা বিষয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদ সংঘটিত
হয়। অতীতে বিভিন্ন এভাবে ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের গ্রামে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট
ও ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তান্দ্যং ঘটনা, খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাচনের সময়
অপহরণ নাটক সাজানো হচ্ছে এর দৃষ্টান্ত।
বিভিন্ন সময়ে ধরপাকড় ও সমাবেশে বাধাদান
বিভিন্ন সময় ইউপিডিএফভুক্ত সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে আটক করে
মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১১ জুলাই সাবেক
পিসিপি নেতা বর্তমানে ইউপিডিএফ-এর একজন মাঠ পর্যায়ের সংগঠক মিঠুন চাকমাকে নিজ বাড়িতে
গ্রেফতার। ৯৮ দিন কারাগারে অন্তরীণ থাকার পর তিনি জামিন লাভ করেছেন।
২৭ আগস্ট গুইমারায় পিসিপি’র সাবেক নেতা ইউপিডিএফ-এর মাঠ পর্যায়ের সংগঠক
ক্য হ্লা চিং’কে অন্যায়ভাবে আটক এবং শারীরিকভাবে মারধর করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দীর্ঘদিন
কারাগারে অন্তরীণ রাখা হয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর পানছড়িতে ৯ জন কলেজ ছাত্রকে আটক করে জেলে দেয়া হয়েছে।
গত বছর ২৯ নভেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে’
আহূত সমাবেশে যোগ গিয়ে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা ও দ্বিতীয়া চাকমা
(জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক) গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। সমাবেশে অংশ নিতে
গিয়ে অনেকে সেনা-পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন।
গত বছর ১২ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রামের মহান ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের র্যালি
করতে গিয়ে সেনা-পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয় অনেকে। পিসিপি’র কর্মী এল্টন র্যালি থেকে
আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর বিশ^ মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নারাঙহিয়া রেডস্কোয়ারে
আয়োজিত আলোচনা সভাও প্রশাসন করতে দেয় নি। উপজেলা কার্যালয় থেকে মেজিস্ট্রেট গিয়ে সভা
করতে নিষেধ করেন। এ গুলো ঘটনার অংশ বিশেষ মাত্র, তার বিশদ বিবরণ দিতে গেলে তা অনেক
দীর্ঘ হবে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
আমাদের ন্যুনতম নাগরিক অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হচ্ছে। আমরা উচিত কথাও
বলতে পারছি না। সরকার আমাদেরকে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে কিনা সেটাই আমাদের
প্রশ্ন জাগে। কারণ দেশে ‘পঞ্চদশ সংশোধনী আইন’ করার ফলে আমাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতি
কেড়ে নেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’ জারি রয়েছে, ফলে সেনাবাহিনীর
খবরদারি রয়েছে আগের মতোই।এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক দমনমূলক বিতর্কিত
‘১১দফা নির্দেশনা’ জারি কার্যত পার্বত্য চট্টগ্রামে ফৌজী শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে।
আমরা এখন রাস্তায় নামতেও পারি না। অন্যায়ভাবে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে পুলিশের
হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে দিচ্ছে।
এ অবস্থায় আমাদের দাবি ও কর্মসূচি আমরা আপনাদের নিকট তুলে ধরছি,
দাবি :
১। অবিলম্বে উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাসহ আটক ইউপিডিএফ নেতা-কর্মী-সমর্থক
ও নিরপরাধ সাধারণ লোকদের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে সকল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
এবং ধরপাকড় বন্ধ করতে হবে। আটকের সময় নেয়া পার্টি মেসের টাকা-মালামাল ফেরত প্রদান করতে
হবে।
২। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দমনমূলক ‘১১দফা নির্দেশনা’ প্রত্যাহার ও
‘অপারেশন উত্তরণ’ তুলে নিতে হবে।
৩। রাঙ্গামাটি এসপি কর্তৃক পেশকৃত কল্পনা অপহরণ তদন্ত রিপোট বাতিল ঘোষণাপূর্বক
তদন্ত কার্যক্রম নতুনভাবে শুরু করতে হবে এবং চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসসহ
তার দোসরদের গ্রেফতার করতে হবে।
৪। গাইবান্দায় সান্তাল জাতিসত্তার ওপর হামলাকারীদের বিচার এবং সান্তালদের
জমি ফিরিয়ে দিতে হবে।
৫। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থানে হিন্দু বসতিতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাট,
মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুরের হোতাদের অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান
এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
কর্মসূচি :
ইউপিডিএফ নেতা উজ্জ্বল স্মৃতিসহ অন্যায়ভাবে বন্দী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের
নিঃশর্ত মুক্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মৌলিক
নাগরিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইউপিডিএফ ধারাবাহিক কর্মসূচি হাতে নেবে। তার মধ্যে
থাকবে কাল ব্যাজ ধারণ; মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীকী অনশন, অফিস আদালত বর্জন,
রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জন ও স্বেচ্ছায় কারাবরণের কর্মসূচি। যথাসময়ে কর্মসূচির দিন-তারিখ
ঘোষণা করা হবে।
নিম্নে কয়েকটি কর্মসূচি
তুলে ধরা হলো :
* ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে আলোচনা
* ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আলোচনা সভা ও র্যালি
* ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুুদ্ধিজীবী দিবসে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা
* ১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জন :বগাছড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ হামলাকারী
পাকিস্তানপন্থী সেনা-আমলা-সেটলার সর্দারদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে
বিশেষ ব্যাজ পরিধান
---------------------