""

প্রতিষ্ঠার ২২তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তা

ইউপিডিএফ’র আদর্শ সমুন্নত রেখে লড়াই সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান


নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০

আগামীকাল ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনকারী দল ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে  দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি ‘কর্মী বাহিনী ও জনগণের উদ্দেশ্যে ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তা’ শিরোনামে এক প্রচারপত্র প্রকাশ করেছে। এতে ইউপিডিএফ’র আদর্শ সমুন্নত রেখে লড়াই সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং ধিকার আদায়ের সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।

প্রচারপত্রে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে হেন হীন কাজ নেই, যা সরকার করছে না। যুবসমাজকে ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হিরোইন। বখাটেদের প্রলুব্ধ করে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাাম নয়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকার ন্যায়সঙ্গতভাবে রাষ্ট্রই পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে না। সে কারণে সরকার ‘৩০ ডিসেম্বর ২০১৮’র রাতের নির্বাচনসহ দেশ পরিচালনায় নজিরবিহীন মিথ্যা মামলা, খুন, গুম, ক্রসফায়ার, কালাকানুন আরোপ, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণসহ সকল রকম অপরাধমূলক পন্থা অবলম্বন করছে। আইন আদালত সব কিছুই সরকারের অঙ্গুলি নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। অন্যায় ও অসম্মানজনকভাবে প্রধান বিচারপতি এস.কে. সিনহাকে বিতাড়িত করা হয়েছে। পুলিশের দুর্নীতি অনিয়ম সর্বজনবিদিত। এবার সেনাবাহিনীর ভেতরকার দ্বন্দ্বের কথাও বেরিয়ে আসছে। অবসপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই এখন গোমর ফাঁস করে দিচ্ছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা বাদ দিলেও আগে দেশে সেনাবাহিনীর প্রতি যে ধারণা ছিল, এখন আর তা নেই। সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের চেয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে অধিক জড়িয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর একাংশের কার্যকলাপের কারণে “সেনালীগ” বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাভাষীদের ওপর পাকিস্তানি শাসকচক্রের রাষ্ট্র ভাষা ‘উর্দু’ চাপিয়ে দেয়ার মতো প্রবল আপত্তি প্রতিবাদ সত্ত্বেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার দেশের সমগ্র অবাঙালি সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর “বাঙালি জাতীয়তা” চাপিয়ে দিয়েছে। উপরন্তু “সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতিশীল” বলে জাহিরকারী আওয়ামী সরকার সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ওপর ভূমি আগ্রাসন, নিযাতনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বরাবরের মতো ফৌজী শাসনকে বৈধতা দিতে ‘অপারেশন দাবানল’, ‘অপারেশন উত্তরণ’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১দফা নির্দেশনা জারি রয়েছে। অতিসম্প্রতি (২২ নভে. ২০২০) স্থানীয়দের প্রবল
  আপত্তি সত্ত্বেও ‘পার্বত্য চুক্তির’ শর্ত লঙ্ঘন করে কাউখালির ন’ভাঙ্গা-দোবাকায় স্থাপিত হয়েছে সেনা ক্যাম্প। স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই সেনা কর্তৃপক্ষ জনগণের দীর্ঘদিনের চলাচলের পথ ব্যবহারে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। তাছাড়া এলাকার জনগণের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম গাছ-বাঁশ নেয়ার সুবিধার্থে ছড়ায় বাঁধ দেয়া হতো, ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ সেটিও করতে দিচ্ছে না। এতে গাছ-বাঁশ পরিবহন ও বিক্রি করতে না পারায় জনগণের জীবিকার পথ বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনগণ স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।

প্রচারপত্রে বলা হয়, তথাকথিত উন্নয়নের নামে ভূমি অধিগ্রহণ, পাহাড় ধ্বংস ও বন উজাড় করে বিভিন্ন স্থাপনা-রাস্তাঘাট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ (দৃষ্টান্ত : ১৩ জুন ২০১৭ রাঙ্গামাটিতে স্মরণকালের ভূমিধ্বস, পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণ করায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জরিমানা আরোপ)। সাম্প্রতিক কালে সরকারের তথাকথিত উন্নয়ন জনগণের নিকট আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। বান্দরবানের চিম্বুকে ম্রোদের বংশপরম্পরার বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ এবং সাজেকে প্রকৃতি পরিবেশ ধ্বংস করে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠনসমূহ যেমন সোচ্চার হয়েছে, প্রকৃতি ধ্বংসের ব্যাপারে পরিবেশেবাদী সংগঠনসমূহও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

পার্বত্য চুক্তি বিষয়ে প্রচারপত্রে বলা হয়, ‘পার্বত্য চুক্তি’ দু’যুগ হতে চলেছে। চুক্তি সম্পাদনকারী পক্ষ আওয়ামীলীগ একটানা এক যুগের মতো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। সময় সল্পতার দোহাই দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন না করার আর কোনো যুক্তি খাঁড়া করার সুযোগ নেই। ‘পার্বত্য চুক্তি’কে রাঙ্গামাটির এসপি হুমায়ুন কবীরের “মুলা” আখ্যাদান (১৩ জুন ২০০৩) যে মিথ্যা নয়, তা জনসংহতি সমিতির কাছেও প্রতিভাত হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে তারা দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি বাস্তবায়ন না করার অভিযোগও করে আসছে।
এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, সশস্ত্র প্রতিরোধের পাশাপাশি নব্বইয়ের দশকে প্রবল ছাত্র—গণআন্দোলন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান ত্বরাণ্বিত করেছিল, যার পরিণতি হচ্ছে ‘পার্বত্য চুক্তি’। যদিও এর শর্ত ও প্রকৃতি, ক্ষমতাসীন দলের আন্তরিকতা—সততা এবং সর্বোপরি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রথম থেকেই জনমনে সংশয় ছিল। ইউপিডিএফ’কে ‘চুক্তি বিরোধী’ আখ্যা দেয়া হলেও ‘চুক্তি’ বাস্তবায়নে সংশয় সত্ত্বেও ইউপিডিএফ এ যাব
কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি।

প্রচারপত্রে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে এই, কারও একক প্রচেষ্টা বা সাংগঠনিক শক্তিতে চুক্তি বাস্তবায়ন বা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করা সম্ভব নয়। অতীতে যাই হোক, জাতীয় অস্তিত্ব হুমকির মুখে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের সকল শক্তি সন্নিবেশিত করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করা ভিন্ন অন্য কোন পথ নেই। তাই ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন ব্যক্তি—সংগঠন নির্বিশেষে সকলকে জাতিসত্তার স্বীকৃতি, ভূমি বেদখল প্রতিরোধ, বাস্তুভিটা রক্ষা, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবিতে এগিয়ে এসে সোচ্চার হবার আহ্বান জানায়। একই সাথে ইউপিডিএফ চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে জনসংহতি সমিতিকে বক্তব্য বিবৃতিদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে এবং এতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে।

নিম্নোক্ত দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রচারপত্রে।

দাবিগুলো হচ্ছে-
* অবিলম্বে অস্থায়ী জাতীয় সরকার গঠনপূর্বক সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে!
* দেশে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে!
* ভিন্ন ভাষাভাষী সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে!
* ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ রাজনৈতিক কারণে আটক নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভাকাক্সক্ষী নিরীহ লোকজনের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানসহ মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে!
* নির্বিচারে ধরপাকড়, যত্রতত্র তল্লাশি হয়রানি বন্ধ করে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে!
* পার্বত্য চট্টগ্রামে চিহ্নিত দুর্বৃত্ত গণশত্রুদের মদদ দান বন্ধ করতে হবে। খুনী-চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে!
* ভিনদেশী দলচ্যুত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে!
* অস্ত্র গুঁজে দিয়ে একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তার গ্রেফতার ও প্রমোশন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে!
* গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইয়াবা-হিরোইন-ফেনসিডিল ব্যবসায়ী চক্র ভেঙ্গে দিতে হবে!
* দেশ-বিদেশে কুখ্যাত ‘র‌্যাব’-এর ‘পাহাড়ি ব্যাটেলিয়ন’ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে!
* পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশ্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে হবে!
* চিম্বুকে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করতে হবে!
* মুসলিম জনগোষ্ঠীশূণ্য এলাকা সাজেকে মসজিদ নয়, স্কুল হাসপাতাল চাই!
* সাজেকে পর্যটনের নামে বন-প্রকৃতি ধ্বংস চলবে না, পাঙ্খো ত্রিপুরাদের উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে!
* অবৈধভাবে ক্যাম্প সম্প্রসারণ বন্ধ কর; কাউখালির ন’ভাঙ্গা দোবাকাবার ক্যাম্প প্রত্যাহার কর!
* বন উজাড় করে লতিবান-দীঘিনালা সড়ক নির্মাণ চলবে না!
* পাহাড় কেটে বন ধ্বংস করে ধনপাতা-নাড়েইছড়ি রাস্তা নির্মাণ চলবে না!
* বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদকৃত বাবুছড়ার ২১ পরিবারকে যথাযথ পুনর্বাসন করতে হবে!
*
 স্ব স্ব জায়গায় নিজ বাড়িঘর নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্যে সেনা-প্রশাসন-এর অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। (দীঘিনালার সাধনাটিলা, সাজেক রোডে বাড়ি-ঘর নির্মাণ, পানছড়ির শনখোলা পাড়ায় বাড়ি নির্মাণে বাধা প্রদান এবং পানছড়িতে পাহাড়িদের বিকল্প বাজার সৃষ্টিতে নিষেধাজ্ঞা।)

প্রচারপত্রটির পুরো লেখাটি নীচে দেওয়া হলো:

***

 

প্রতিষ্ঠার ২২তম বর্ষপূর্তিতে
কর্মীবাহিনী ও জনগণের উদ্দেশ্যে
ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তা

(২৬ ডিসেম্বর ২০২০)
ইউপিডিএফ’র আদর্শ সমুন্নত রাখুন! লড়াই সংগ্রাম জোরদার করুন!

প্রিয় দেশবাসী,
করোনা মহামারিতে সমগ্র বিশ্ব আজ পর্যুদস্ত--এ কথা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্ব এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে, ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। একেত দাপুটে করোনার প্রাণঘাতী আক্রমণ, তার সঙ্গে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা’এর মতো পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে চলছে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন।

এমনই দুর্বিষহ সময়ে ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপনীত হয়েছে ইউপিডিএফ। জাতীয় জীবনের এ কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছি এবং আপনাদের জানাচ্ছি সংগ্রামী অভিবাদন ও শুভেচ্ছা!

এ যাব মুক্তির লড়াইয়ে আত্মোসর্গকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি ইউপিডিএফ জানাচ্ছে গভীর সম্মান, পঙ্গুত্ববরণকারী সহযোদ্ধাদের সহমর্মিতা। কারাগারে অন্তরীণ কেন্দ্রীয়নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা, আসন্ন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পোস্টারিং করতে গিয়ে সেনা কর্তৃক আটক ডিওয়াইএফ নেতা রূপন মারমাসহ অর্ধশতাধিক পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের প্রিয় সহযোদ্ধাদের কথাও আন্তরিকভাবে স্মরণ করছে ইউপিডিএফ। যে সকল অদম্য সংগ্রাামী সহযোদ্ধা বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বিভিন্ন প্রান্তে লড়াই সংগ্রামে নিয়োজিত রয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের জানাচ্ছে প্রাণতেজোময় সংগ্রামী অভিবাদন!

ইউপিডিএফ সেনা ও তাদের দোসরদের হাতে নির্যাতন, হয়রানি ও হেনস্থার শিকার এবং কারামুক্তি পেয়েও জেল গেইটে আটক হয়ে যারা অন্যায়ভাবে পুনরায় কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও একাত্মতা প্রকাশ করছে।

যে সকল শুভাকাক্সক্ষী বিভিন্ন সময়ে আমাদের কার্যক্রমে সহায়তা-সহযোগিতা দিয়ে আসছেন নানাভাবে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষণে আমরা তাদের বিশেষভাবে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

সংগ্রামী সহযোদ্ধা বন্ধুগণ,
দেশের অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জনগণ কোথাও নিরাপত্তা বোধ করে না, নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে না নিজের বাড়িতেও। সেটলার ও ক্ষমতাসীন দলের পাণ্ডারা বাড়ি ভেঙে প্রতিবন্ধী নারীকে কেবল ধর্ষণ করে না, লুটপাটও চালায় (২৩ সেপ্টে. ২০২০, বলপিয়াআদাম, খাগড়াছড়ি)। বাড়ি তল্লাশির নামে সেনা জওয়ান দ্বারা ধর্ষিত হয় তরুণী ও কিশোরী (২২ জানু. ২০১৮ বিলাইছড়ি)। ধর্ষিতার চিকি
সা ও সেবা দিতে গিয়ে চাকমা রাণী য়েন য়েন—এর মতো বিশিষ্ট সম্মানিত ব্যক্তিকেও সেনা কর্তৃক শারীরিকভাবে হেনস্থা হতে হয় (১৫ ফেব্রু. ২০১৮)। কাপ্তাই, লংগুদু, লামা, বান্দরবান, পানছড়ি, দীঘিনালা——সর্বত্র নারীর ওপর যৌন আক্রমণ ও সম্ভ্রমহানির ঘটনা দীর্ঘ। অব্যাহতভাবে ধর্ষণকে জাতিগত নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে ভূমি অধিগ্রহণ, পাহাড় ধ্বংস ও বন উজাড় করে বিভিন্ন স্থাপনা-রাস্তাঘাট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ (দৃষ্টান্ত : ১৩ জুন ২০১৭ রাঙ্গামাটিতে স্মরণকালের ভূমিধ্বস, পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণ করায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জরিমানা আরোপ)। সাম্প্রতিক কালে সরকারের তথাকথিত উন্নয়ন জনগণের নিকট আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। বান্দরবানের চিম্বুকে ম্রোদের বংশপরম্পরার বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ এবং সাজেকে প্রকৃতি পরিবেশ ধ্বংস করে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠনসমূহ যেমন সোচ্চার হয়েছে, প্রকৃতি ধ্বংসের ব্যাপারে পরিবেশেবাদী সংগঠনসমূহও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ‘পার্বত্য চুক্তির’ ২৩তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রথম আলো আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতিকে চুক্তিপূর্ব ‘৯৭ সালের অবস্থার চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বাম প্রগতিশীল ছাত্র ও সামাজিক সংগঠন-অধিকার কর্মীরা সোচ্চার রয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী টিকিটে মনোনীত সাংসদ, মন্ত্রী ও তথাকথিত জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে টু শব্দটিও করেন না।

পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে শক্তিহীন ও দুর্বল করতে শাসকচক্রের সব রকম ষড়যন্ত্র জারি রয়েছে।আঞ্চলিক পরিষদের মাধ্যমে সরকার জনসংহতি সমিতির হাত-পা একভাবে বেঁধে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের নামে সুবিধাবাদী দালালচক্রের পর্যায়ক্রমিক পুনর্বাসনও অব্যাহত রয়েছে।

প্রিয় দেশবাসী,
বাংলাভাষীদের ওপর পাকিস্তানি শাসকচক্রের রাষ্ট্র ভাষা ‘উর্দু’ চাপিয়ে দেয়ার মতো প্রবল আপত্তি প্রতিবাদ সত্ত্বেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার দেশের সমগ্র অবাঙালি সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর “বাঙালি জাতীয়তা” চাপিয়ে দিয়েছে। উপরন্তু “সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতিশীল” বলে জাহিরকারী আওয়ামী সরকার সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ওপর ভূমি আগ্রাসন, নিযাতনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় নি।

অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বরাবরের মতো ফৌজী শাসনকে বৈধতা দিতে ‘অপারেশন দাবানল’, ‘অপারেশন উত্তরণ’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১দফা নির্দেশনা জারি রয়েছে। অতিসম্প্রতি (২২ নভে. ২০২০) স্থানীয়দের প্রবল  আপত্তি সত্ত্বেও ‘পার্বত্য চুক্তির’ শর্ত লঙ্ঘন করে কাউখালির ন’ভাঙ্গা-দোবাকায় স্থাপিত হয়েছে সেনা ক্যাম্প। স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই সেনা কর্তৃপক্ষ জনগণের দীর্ঘদিনের চলাচলের পথ ব্যবহারে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। তাছাড়া এলাকার জনগণের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম গাছ-বাঁশ নেয়ার সুবিধার্থে ছড়ায় বাঁধ দেয়া হতো, ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ সেটিও করতে দিচ্ছে না। এতে গাছ-বাঁশ পরিবহন ও বিক্রি করতে না পারায় জনগণের জীবিকার পথ বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনগণ স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।

সংগ্রামী জনতা,
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অস্ত্রের ভাষায় পূর্ব বাংলার ‘৬ দফা’ গুড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। পাহাড়ি জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসন’ আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রামে মোতায়েন রয়েছে বিপুল সেনা, বিজিবিসহ রাষ্ট্রীয় সকল বাহিনী। এ সমস্ত বাহিনী দ্বারা ধরপাকড়, হয়রানি, তল্লাশি, ক্রস ফায়ারে হত্যা--দীর্ঘ দিন থেকে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। উপরন্তু “জুম্মো রাজাকার” বাহিনী সৃষ্টি করে জনজীবন বিষময় করে তোলা হচ্ছে। রাজস্থলী, বিলাইছড়ি ও বান্দরবানে প্রতিবেশি দেশের দলচ্যুত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দিয়ে জনগণের প্রতিবাদী অংশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে হেন হীন কাজ নেই, যা সরকার করছে না। যুবসমাজকে ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হিরোইন। বখাটেদের প্রলুব্ধ করে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাাম নয়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকার ন্যায়সঙ্গতভাবে রাষ্ট্রই পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে না। সে কারণে সরকার ‘৩০ ডিসেম্বর ২০১৮’র রাতের নির্বাচনসহ দেশ পরিচালনায় নজিরবিহীন মিথ্যা মামলা, খুন, গুম, ক্রসফায়ার, কালাকানুন আরোপ, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণসহ সকল রকম অপরাধমূলক পন্থা অবলম্বন করছে। আইন আদালত সব কিছুই সরকারের অঙ্গুলি নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। অন্যায় ও অসম্মানজনকভাবে প্রধান বিচারপতি এস.কে. সিনহাকে বিতাড়িত করা হয়েছে। পুলিশের দুর্নীতি অনিয়ম সর্বজনবিদিত। এবার সেনাবাহিনীর ভেতরকার দ্বন্দ্বের কথাও বেরিয়ে আসছে। অবসপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই এখন গোমর ফাঁস করে দিচ্ছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা বাদ দিলেও আগে দেশে সেনাবাহিনীর প্রতি যে ধারণা ছিল, এখন আর তা নেই। সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের চেয়ে ব্যবসা—বাণিজ্যে অধিক জড়িয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর একাংশের কার্যকলাপের কারণে “সেনালীগ” বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অসন্তোষ দিনে দিনে বাড়ছে। জনগণ ও ক্ষমতাসীন দল এখন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। যেখানে নিপীড়ন নির্যাতন তীব্র হয়, সেখানে গড়ে ওঠে প্রবল প্রতিবাদ প্রতিরোধ! এটিই অমোঘ বিধান। তাই নব্য ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে দেশে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি দিনে দিনে জোরদার হচ্ছে।

প্রিয় দেশবাসী,
‘পার্বত্য চুক্তি’ দু’যুগ হতে চলেছে। চুক্তি সম্পাদনকারী পক্ষ আওয়ামীলীগ একটানা এক যুগের মতো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। সময় সল্পতার দোহাই দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন না করার আর কোনো যুক্তি খাঁড়া করার সুযোগ নেই। ‘পার্বত্য চুক্তি’কে রাঙ্গামাটির এসপি হুমায়ুন কবীরের “মুলা” আখ্যাদান (১৩ জুন ২০০৩) যে মিথ্যা নয়, তা জনসংহতি সমিতির কাছেও প্রতিভাত হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে তারা দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি বাস্তবায়ন না করার অভিযোগও করে আসছে।

এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, সশস্ত্র প্রতিরোধের পাশাপাশি নব্বইয়ের দশকে প্রবল ছাত্র-গণআন্দোলন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান ত্বরাণ্বিত করেছিল, যার পরিণতি হচ্ছে ‘পার্বত্য চুক্তি’। যদিও এর শর্ত ও প্রকৃতি, ক্ষমতাসীন দলের আন্তরিকতা—সততা এবং সর্বোপরি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রথম থেকেই জনমনে সংশয় ছিল। ইউপিডিএফ’কে ‘চুক্তি বিরোধী’ আখ্যা দেয়া হলেও ‘চুক্তি’ বাস্তবায়নে সংশয় সত্ত্বেও ইউপিডিএফ এ যাব কোনো বাধা সৃষ্টি করে নি।

বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে এই, কারও একক প্রচেষ্টা বা সাংগঠনিক শক্তিতে চুক্তি বাস্তবায়ন বা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করা সম্ভব নয়। অতীতে যাই হোক, জাতীয় অস্তিত্ব হুমকির মুখে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের সকল শক্তি সন্নিবেশিত করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করা ভিন্ন অন্য কোন পথ নেই। তাই ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন ব্যক্তি-সংগঠন নির্বিশেষে সকলকে জাতিসত্তার স্বীকৃতি, ভূমি বেদখল প্রতিরোধ, বাস্তুভিটা রক্ষা, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবিতে এগিয়ে এসে সোচ্চার হবার আহ্বান জানায়। একই সাথে ইউপিডিএফ চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে জনসংহতি সমিতিকে বক্তব্য বিবৃতিদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে এবং এতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে।

সংগ্রামী সহযোদ্ধা বন্ধুগণ,
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ মহান দিনে আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, সকল ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চক্রান্ত একে একে নস্যা
করে দিয়ে বিগত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে আমরা অবিচল রয়েছি।

জাতিসত্তার স্বীকৃতি, ভূমি বেদখল প্রতিরোধ, নারীর সম্ভ্রম রক্ষা, মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার, বন—বন্যপ্রাণী-পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনসহ সকল ধরনের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে ইউপিডিএফভুক্ত সংগঠনের কমীর্বাহিনী। সাজেক, ঘিলাছড়ি, বরইতলী, আলুটিলা, বাবুছড়াসহ যে প্রান্তে ভূমি আগ্রাসন হয়েছে, তার প্রতিবাদ প্রতিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আমাদের অকুতোভয় সহযোদ্ধারা। মামলা-হুলিয়া মাথায় ঘরছাড়া-এলাকাছাড়া অবস্থায়, জেল-জুলুম, তীব্র দমন-পীড়নের মধ্যেও ইউপিডিএফ’র সহযোদ্ধারা অবিচলভাবে লড়াই সংগ্রাম সংগঠিত করে চলেছে।

দীঘিনালা, লক্ষ্মীছড়ি, রামগড়—মাটিরাঙ্গায়--যেখানে জনগণের ওপর আঘাত আসছে, সেখানে ছুটে গিয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ সংগঠিত করে মুক্তিকামী মানুষের মনে আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে ইউপিডিএফভুক্ত সংগঠনের নিভীর্ক কমীর্বাহিনী!

প্রতিষ্ঠার ২২তম বার্ষিকীতে ইউপিডিএফ’র আহ্বান :
আসুন, নিম্নোক্ত দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তুলি!

* অবিলম্বে অস্থায়ী জাতীয় সরকার গঠনপূর্বক সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে!
* দেশে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে!
* ভিন্ন ভাষাভাষী সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে!
* ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ রাজনৈতিক কারণে আটক নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভাকাক্সক্ষী নিরীহ লোকজনের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানসহ মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে!
* নির্বিচারে ধরপাকড়, যত্রতত্র তল্লাশি হয়রানি বন্ধ করে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে!
* পার্বত্য চট্টগ্রামে চিহ্নিত দুর্বৃত্ত গণশত্রুদের মদদ দান বন্ধ করতে হবে। খুনী-চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে!
* ভিনদেশী দলচ্যুত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে!
* অস্ত্র গুঁজে দিয়ে একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তার গ্রেফতার ও প্রমোশন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে!
* গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইয়াবা-হিরোইন-ফেনসিডিল ব্যবসায়ী চক্র ভেঙ্গে দিতে হবে!
* দেশ-বিদেশে কুখ্যাত ‘র‌্যাব’-এর ‘পাহাড়ি ব্যাটেলিয়ন’ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে!
* পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশ্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে হবে!
* চিম্বুকে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করতে হবে!
* মুসলিম জনগোষ্ঠীশূণ্য এলাকা সাজেকে মসজিদ নয়, স্কুল হাসপাতাল চাই!
* সাজেকে পর্যটনের নামে বন-প্রকৃতি ধ্বংস চলবে না, পাঙ্খো ত্রিপুরাদের উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে!
* অবৈধভাবে ক্যাম্প সম্প্রসারণ বন্ধ কর; কাউখালির ন’ভাঙ্গা দোবাকাবার ক্যাম্প প্রত্যাহার কর!
* বন উজাড় করে লতিবান-দীঘিনালা সড়ক নির্মাণ চলবে না!
* পাহাড় কেটে বন ধ্বংস করে ধনপাতা-নাড়েইছড়ি রাস্তা নির্মাণ চলবে না!
* বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদকৃত বাবুছড়ার ২১ পরিবারকে যথাযথ পুনর্বাসন করতে হবে!
* স্ব স্ব জায়গায় নিজ বাড়িঘর নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্যে সেনা-প্রশাসন-এর অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। (দীঘিনালার সাধনাটিলা, সাজেক রোডে বাড়ি-ঘর নির্মাণ,পানছড়ির শনখোলা পাড়ায় বাড়ি নির্মাণে বাধা প্রদান এবং পানছড়িতে পাহাড়িদের বিকল্প বাজার সৃষ্টিতে নিষেধাজ্ঞা।)

ইউপিডিএফ’র ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক!

সত্য ও ন্যায়ের জয় অনিবার্য!
জনগণের বিজয় অবশ্যম্ভাবী!

No Full Autonomy, No Rest!
Long Live UPDF!

 

কেন্দ্রীয় কমিটি,
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)


ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত। ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

 

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত/প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।





0/Post a Comment/Comments