দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর ২০২০) সকাল ৮টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে ‘আমরা
করবো জয়’ আন্তর্জাতিক সংগীত বাজিয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের
প্রধান সংগঠক প্রানেশ চাকমা। এ সময় ৬ জনের চৌকস একটি দল দলীয় পতাকায় স্যালুট প্রদান
করেন।
তারপরে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পন করেন পার্টির পক্ষ থেকে প্রানেশ চাকমা ও দীপন চাকমা,শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে সাধনা চাকমা ও নিরুপা চাকমা,পার্টি পরিবারের পক্ষ থেকে মল্লিকা চাকমা ও রুপালী চাকমা, পিসিপির পক্ষ থেকে অনন্ত চাকমা ও নীল চাকমা, ডিওয়াইএফ পক্ষ থেকে রিটেন চাকমা ও রিপন চাকমা, গ্রামের মুরুব্বীদের পক্ষ থেকে শান্ত কুমার চাকমা ও পরিমল চাকমা। পুস্পমাল্য প্রদান শেষে শহীদদের স্মরনে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
নিরবতা পালনের পর উপস্থিত কর্মী সমর্থক শুভাকাঙ্ক্ষীদেরকে পার্টির নীতি
আর্দশকে সমুজ্জল রেখে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে অবিচল থাকার শপথ বাক্য পাঠ করান
প্রানেশ চাকমা এবং ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তা পড়ে শুনানো
হয়।
অনুষ্ঠানে প্রানেশ চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই মহান পার্টি শাসক শোষকের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে শত শত কর্মী সমর্থকের রক্তের বিনিময়ে ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। সরকার-সেনাবাহিনী জুম্ম জনগণের প্রানপ্রিয় দাবি পূর্নস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য নব্য রাজাকার সৃষ্টি করে জনগনের মাঝে আতংক ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কথিত উন্নয়ন, পর্যটনের নামে জুম্মদের জায়গা বেদখল করছে। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল গণ আন্দোলন সৃষ্টি করে কঠোর জবাব দেয়ার আহ্বান জানান এবং জুম্ম জনগনের সুখে দঃখে সব সময় পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
শেষে খড় দিয়ে বানানো প্রতীকী দালাল, রাজাকারের প্রতি ঘৃণা সূচক তীর ধনুক দিয়ে তীরবিদ্ধ করার প্রতিযোগিতায় উপস্থিত শিশু কিশোররা অংশগ্রহন করে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রীতি চাকমা।
এরপর দুপুর ২ টায় দীপন চাকমার সঞ্চালনায় এবং প্রানেশ চাকমার সভাপতিত্বে
এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাবুছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান
সুগত প্রিয় চাকমা ও সাবেক মেম্বার জ্ঞান মুনি চাকমা।
দালাল, রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা-ধিক্কার জানাচ্ছে শিশুরা |
বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জুম্ম জনগনের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। ইউপিডিএফের এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। জুম্ম জনগন এই ন্যায়সঙ্গ আন্দোলনে সব সময় পাশে থাকবে।
সভার সভাপতি প্রাণেশ চাকমা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায়
টাঙানো ব্যানার- ফেস্টুন সেনাবাহিনী দ্বারা ছিঁড়ে ফেলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, ইউপিডিএফের কোন বিকল্প নেই। আজ ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন,
ভ্রতৃঘাতি সংঘাত বন্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউপিডিএফ। সে কারণে সরকার-সেনাবাহিনী
ইউপিডিএফের উপর সব সময় খড়্গহস্ত।
কর্মীবাহিনীর উদ্দ্যশে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ আন্দোলনের জন্য
প্রস্তুত হোন, সরকার-সেনাবাহিনীর যে কোন অপচেষ্টাকে ধ্বংস করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়
করতে হবে।