""

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ তিন সংগঠনের


নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
।। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থীদের প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শপথবাক্য পাঠে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ও ‘শেখ মুজিবুর রহমান’র নামে শপথ গ্রহণ করানোর বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর ২০২১) পিসিপি’র সভাপতি সুনয়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা হতে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শপথবাক্য পাঠ সংক্রান্ত’ সার্কুলার জারি করা হয়েছে (যার স্মারক নম্বর-৩৭.০০.০০০০.০৭১.০৪.০০৩.১৭.৭৯৪)। উক্ত সার্কুলারে উল্লেখ রয়েছে ‘জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানির শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশে^র বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা’। এটি বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা সরকারের আত্মপ্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত অর্থাৎ ‘শেখ মুজিবুর রহমান’কে প্রতিষ্ঠা করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি দেশের জনসাধারণের কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কাজেই এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, একক কোন ব্যক্তির কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থানরত সকল দল, জাতি, ধর্ম, বর্ণ-সম্প্রদায় ও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সম্মিলিত সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সুতরাং শপথনামায় ‘বাঙালি জাতি’ ও ‘শেখ মুজিবুর রাহমান’র নামে দেশের শিক্ষার্থীদের শপথগ্রহণ করার কোন যৌক্তকতা নেই। কারণ এদেশে বাঙালি ছাড়াও আরো ৪৫টির অধিক ভিন্ন ভাষাভাষাী জাতিসত্তার বসবাস রয়েছে। সুতরাং এটি সরকারের উগ্র বাঙালি জাতীয়াবাদী ভাবধারা প্রতিষ্ঠার অপপ্রয়াস, এর মাধ্যমে দেশের ভিন্ন ভাষা-ভাষী সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহকে অস্বীকার ও উপেক্ষা করা হয়েছে। উল্লেখ যে, ২০১১ সালে ৩০শে জুন সংবিধানের ‘পঞ্চদশ সংশোধনী’তে এদেশের বাঙালি ভিন্ন সকল জাতিসত্তাসমূহের ওপর উগ্র বাঙালী জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সরকারের শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত উক্ত সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

---





0/Post a Comment/Comments