""

পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ, বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩

মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়া।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। আজকের পত্রিকার খবর অনুযায়ী
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বান্দরবানে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। এর মধ্যে গত সোমবার (১০ জুলাই) বান্দরবানের থানচি উপজেলার কাইতং পাড়ায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে মাকে ডাকতে ডাকতেই লেংরাই ম্রো নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশু মারা যায় বলে জানা গেছে। ফলে এতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই সময়ের মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলায় ১৪৭, আলীকদমে ৭৩৪, নাইক্ষ্যংছড়িতে ২৬৬, রুমায় ৪০২, থানচিতে ৫৯৪, লামায় ৬১৯ ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৫৫ এবং বিচ্ছিন্নভাবে ১৬ জনসহ মোট ২ হাজার ৯৩৩ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, এক সপ্তাহে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪০ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, বাকিদের চিকিসা চলছে।

তিন পার্বত্য জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বান্দরবানে গত বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫ হাজার ৬৯২ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। মারা যান সাতজন। এ বছর ২ হাজার ৯৩৩ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জেলাজুড়ে।

বান্দরবান জেলায় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বরত চিকিসক শাহরিয়ার তানভির আহম্মেদ বলেন, জেলার সাত উপজেলার মধ্যে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে বেশি রয়েছে লামা, আলীকদম ও থানচি উপজেলা। সেখানে চিকিসকেরা কাজ করছেন।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের একাধিক চিকিসক টিম ও মাঠকর্মীরা কাজ করছেন।'

অপরদিকে, বাংলা ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে খাগড়াছড়ি জেলায় গত ১ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২১ জন।

খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জুন মাসে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন আর চলতি মাসের ১১ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন ৫০ জন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে এখনো কেউ মারা যাননি বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়।

সরকার ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে এতদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়া নির্মুলের কথা বলা হলেও নতুন করে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধিতে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, দায়িত্বশীলরা এতদিন বলেছেন, পার্বত্য এলাকা থেকে ম্যালেরিয়া বিদায় নিয়েছে। তাহলে এখন কোথা থেকে এলো?

খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, ‘যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা, বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার না রাখা এবং জমানো পানি অপসারণ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিষয়ে সচেতন হলে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসবে।’



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments