""

নববর্ষে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ার প্রত্যয়ে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে একযোগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

নববর্ষ ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ার প্রত্যয়ে 31st December উপলক্ষে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে একযোগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আজ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার সন্ধ্যার সময় পাহাড়ের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, পানছড়ি গণঅধিকার রক্ষা কমিটি, ইউপিডিএফ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষসহ হাজার হাজার মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নববর্ষে সুখ-শান্তি কামনা করেন।

আমাদের বিভিন্ন উপজেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

পানছড়ি:
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় আজ বিকাল ৫টায় ১১টি স্থানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। এর মধ্যে প্রধান কর্মসূচি ছিল অনিল পাড়া (যেখানে বিপুলসহ চার জনকে হত্যা করা হয়) ও পুজগাঙের মধুমঙ্গল পাড়ায়। এছাড়া বড়কলক-মুনিপুর, আমতলী, বাবুড়ো পাড়া, পানছড়ি সদর-বিডিআর গেইট, কলেজ গেটই-বড়কোণা, রাবার ড্যাম-লতিবান ব্রিজ, কুড়াদিয়া ছড়া, মরাটিলা ও ত্রিপুরা বিল এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষসহ চার হাজারের অধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। পাহাড়ের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও গণঅধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বানে পানছড়িতে এই কর্মসূচি পালিত হয়।




“শহীদ
 বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান’ শ্লোগানে এবং ‘পাহাড় সমতলে সংগ্রামী মৈত্রী জোরদারের মাধ্যমে খুনী-জাতীয় শত্রুদের ঝাড়ু পেটা দিয়ে বিদায় করি’ এই আহ্বানে অনিল পাড়ায় আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে সমবেত জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন গণঅধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অনিল চন্দ্র চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক সুমেন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা মিটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুণ চকামা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি উপজেলা সভাপত সুনীল ময় চাকমা প্রমুখ।


অপরদিকে পুজগাঙের মধুমঙ্গল পাড়ায় আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য শান্তি জীবন চাকমা, গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য কালাচাঁদ চাকমা। এছাড়া সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা, সাধালণ সম্পাদক রিতা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পরিণীতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা সভাপতি রিপন চাকমাসহ ৪ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।




বক্তারা গত ১১ ডিসেম্বর বিপুল চাকমাসহ ৪ নেতাকে হত্যার নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং খুনিদের ঘৃণা-ধিক্কার জনান। তারা বলেন, আমরা আর এমন নৃশংসতা দেখতে চাই না। আজ বর্ষবিদায়ের সাথে আমাদের ওপর যাতে নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ হয় এবং নতুন বছর ২০২৪ সাল পাহাড় ও সমতলে সংগ্রামী মৈত্রী ও ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ে উঠুক সেই কামনা করছি।


বক্তব্য শেষে সাইরেন বাজানোর সাথে সাথে পিনপতন নিরবতায় শহীদ বিপুল চাকমাদের স্মরণ করে ও নতুন বছরের সুখ-শান্তি কামনায় বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ একযোগে মোমবাতি জ্বালিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সমবেতরা হাতে মোমবাতির সাথে “খুনিদের তাণ্ডব প্রতিহত করুন, জল্লাদদের বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করি না, জাতি ধ্বংসের ক্রীড়নকদের শায়েস্তা করুন” শ্লোগান সম্বলিত হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা:
“শহীদ বিপুল, লিটন, সুনীল ও রুহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান” শ্লোগানে এবং “আসুন দালাল, খুনী, ঠ্যাঙাড়ে মদদাতাদের পাতানো নির্বাচন বর্জন করি” আহ্বানে খাগড়াছড়ি সদরের নারানখিয়া রেড স্কোয়ার থেকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্বনির্ভর, জামতলি হয়ে ধর্মপুর বনবিহার গেইট, পেরাছড়া ব্রিকফিল্ড হয়ে গিরীফুল এলাকায়, কুকিছড়া থেকে ছোটনালা ও শিবমন্দির মন্দির বাজার হয়ে ১৭ নম্বর এলাকায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।


স্বনির্ভর এলাকায় বক্তব্য রাখেন, বৃহত্তর খবংপুজ্যা এলাকার পৌর সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সোনা মাষ্টার
  ও সাধারণ শিক্ষার্থী শুভার্থী চাকমা। তারা ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি-হানাহানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নতুন বছর ২০২৪ সালের সুখ-শান্তি কামনা করেন।


এছাড়া পেরাছড়া ইউনিয়নের ব্রিকফিলন্ড এলাকায় আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সংগঠক সাগরিকা চাকমা । তিনি সেনা মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত খুন-গুম, অপহরণের ঘটনা ঘটছে অভিযাগে করে এসব বন্ধের দাবি জানান এবং বিপুলসহ চার জনের খুনিদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন। একই সাথে তিনি আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের জবাব দেয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।


ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ছোটনালা, শিব মন্দির ও ১৭ নম্বর এলাকায় বক্তব্য রাখেন ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের মেম্বার জয়চান চাকমা। তিনি বিপুল, লিটন, সুনীল ও রুহিনদের হত্যার মতো ঘটনা যাতে আর দেখতে না হয় এবং এ ধরনের ঘটনা বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

দীঘিনালা:
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়ন, দীঘিনালা ইউনিয়ন ও কবাখালী ইউনিয়নে পৃথক পৃথকভাবে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসীর ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।


“শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান” শ্লোগানে এবং আসুন, দালাল,স্পাই/চর, জাতীয় শত্রু, খুনী-ঠ্যাঙাড়েরেদের সামাজিকভাবে বয়কট ও প্রতিহত করি” এই আহ্বানে বাবুছড়া ইউনিয়নে বাবুছড়া-মারিশ্যা সড়কে আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে নিপন চাকমা সভাপতিত্বে ও শ্যামল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমা, ৫ নং বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা ও সদস্য প্রতিভা চাকমা।


আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে শিশু থেকে বৃদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পায়ে হেঁটে হেঁটে প্রধান সড়কের জমায়েত হতে থাকে। সন্ধ্যা ৫টা ১০ মিনিটে বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে, জারুলছড়ি-কিয়াংঘাটসহ ধনপাদা পর্যন্ত রাস্তার দু'পাশে মোমবাতি হাতে দাঁড়িয়ে প্রায় হাজারের অধিক শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

গগণ বিকাশ চাকমা বলেন, আজকের এই প্রদীপের আলোর মতো আমাদের সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ থাকুক, ফুলের মতো সৌন্দর্য হোক পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী জীবন। সবাই যাতে সুখ- শান্তিতে বসবাস করতে পারে। তিনি হিংসা-রেষারেষি ও খুন-গুমের মানসিকতা পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ ও সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


ইউপিডিএফ নেতা মিলটন চাকমা বলেন, যারা সত্য ও ন্যায় পক্ষে কাজ করেন জাতি তাদের স্মরণ করেন। ঠিক আজকে এই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে যেভাবে শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রহিনদের সম্মানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে মানুষ মোমবাতি হাতে নিয়ে অংশগ্রহন করেছে। গত ১১ তারিখ পানছড়িতে যারা ঘৃণ্য বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ৪ এপ্রিল দীঘিনালায় যারা শিমুল চাকমাকে হত্যা করেছে, ইউপিডিএফ নেতা নবায়ন চাকমাকে যারা নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে তাদের একদিন জনতা বিচার করবে।

তিনি আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে বলেন, সরকারও একতরফাভাবে নির্বাচনের পথেই এগুচ্ছে। কাজেই এটা কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এক শ্রেণীর দালাল দীঘিনালায় নির্বাচন প্রচারণা চালাচ্ছে. কিন্তু জনগণ তাতে অংশ নিচ্ছে না। তিনি আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।


তিনি শহীদ মিঠুনসহ স্বনির্ভন হত্যাকাণ্ডে নিহত তপন, এল্টন, পলাশদেরদের কথাও স্মরণ করে বলে, এসব হত্যাকাণ্ড সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সংঘটিত হয়েছে। তিনি আগামী দিনে ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে নতুন বছরে সকলের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করেন।

প্রতিভা চাকমা বলেন, অধিকার আদায়ের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের সম্মান জানাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী অনেকে আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেছেন। কিন্তু ভাইয়ের সাথে ভাই মারামারি কখনও কাম্য নয়। তিনি নতুন ইংরেজি বর্ষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হবে এমন কামনা করেন।

অপরদিকে, দীঘিনালা ইউনিয়নে আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে ও শাক্যমনি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিপলেস্বর চাকমা ও ইউপি সদস্য সমরিকা চাকমা।

বক্তারা বলেন, জাতিকে রক্ষা করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের বিকল্প নেই। যারা দালালি করে তারা কখনো সমাজের আপনজন হতে পারে না। আজকে জ্বালানো প্রদীপে মতো পাহাড় আলোকিত হোক।  

 নং কবাখালী ইউনয়নে অনিল কান্তি চাকমার সঞ্চালায় ও জ্ঞান উজ্জল চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চিক্কি চাকমা, যুব সমাজের প্রতিনিধি রোটেন চাকমা ও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফসংগঠক সুজন চাকমা।

বক্তারা পুরাতন বছরের সব দুঃখ-কষ্ট ঝেড়ে ফেলে নতুন ইংরেজি বর্ষে সুখ শান্তি কামনা করেন ও ভাই-ভাইয়ের সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানান।

মহালছড়ি:
পাহাড়ের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বানে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার ৩টি পৃথক স্থানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩) বিকাল ৫টার সময়  ১ নং মহালছড়ি ইউনিয়নের দুরছড়ি ও পক্ষিমুড়ো এলাকায় অনুষ্ঠিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, কৃষ্ণ মদন চাকমা ও সুষমা রঞ্জনা চাকমা; ৪ নং মাইসছড়ি ইউনিয়নেরর মাইসছড়িতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নীহার বিন্দু চাকমা ও বিমল বিকাশ চাকমা এবং বদানাল-লেমুছড়ি এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, হ্যাপি চাকমা ও অন্তর কার্বারী।




বক্তারা পুরাতন বর্ষে সকল গ্লানি, অন্যায়-অবিচার দূরীভূতি হয়ে নববর্ষ ২০২৪-এর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর পানছড়িতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা কোন বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না। তাই
 ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি বন্ধ করে আগামীর দিনগুলো যাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

মাটিরাঙ্গা (গোমতি):
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ইউনিয়নে নববর্ষ ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ায় প্রত্যায়ে ও বর্ষবিদায় উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়।



‘শহীদ বিপুল- সুনিল- লিটন রুহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান’ শ্লোগানে এবং ‘আসুন দালাল, খুনি ঠ্যাঙাড়ে মদদদাতাদের পাতানে নির্বাচন বর্জন করি” আহ্বানে আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আমতলি ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ডে মেম্বার টিপু রঞ্জন ত্রিপুরা, ময়দা ছড়া গ্রামের সুনিল কার্বারী, হেডম্যান অনিল ত্রিপুরা ও মহিলা কার্বারী যুবরানি ত্রিপুরা প্রমুখ।


বক্তারা বলেন, ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি-হানাহানি বন্ধ করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং নতুন বছরে যাতে বিপুল, সুনীল-লিটন-রুহিনের মতো আর কারোর সন্তানের মৃত্যু না ঘটে তার জন্য সুখ-শান্তি ও মঙ্গল কামনা করেন। একই সাথে তারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করারও আহ্বান জানান।

রামগড়:
বর্ষ বিদায় ও নববর্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ার প্রত্যায়ে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন এলাকার তিন শতাধিক জনতা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছেন।


আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩) বিকালে “শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান” শ্লোগানে অনুষ্ঠিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে নকুল চন্দ্র ত্রিপুরাকে সভাপতি ও গুলোমনি চাকমাকে সদস্য সচিব করে ৫সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয়।


প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য নকুল চন্দ্র ত্রিপুরা গত ১১ ডিসেম্বর পানছড়িতে বিপুল চাকমাসহ চারজনকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানান। তিনি হত্যাকারীদের সুপথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, খুন-খারাবি একটি ঘৃণ্য কাজ। এমন কাজ পরিহার করা প্রয়োজন। তিনি পুরাতন বছরের সব হিংসা-বিভেদ ভুলে নতুন বছর যাতে শান্তিময় হয় এবং সকলে যাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে সেই শুভ কামনা করেন।


অনুষ্ঠান চলাকালে একদল বিজিবি সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়। এ সময় তারা সড়ক বন্ধ না করার জন্য অনুষ্ঠান করার জন্য আয়োজকদের প্রতি অনুরোধ করেন। তবে তারা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি বলে জানা গেছে।

মানিকছড়ি:
খাগড়াছড়ি মানিকছড়ি সদরের ধর্মঘর এলাকায় বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে পাহাড়ের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়েছে। ‘শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রহিনদের স্মৃতির প্রতি জানাই সম্মান’ শ্লোগানে নববর্ষ ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ভয়-ভীতি হীন মুক্ত পরিবেশ গড়ার প্রত্যয়ে 31st December উপলক্ষে এই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে মানিকছড়ি বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় এক হাজারের অধিক ছাত্র যুবক ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।




অনুষ্ঠানে অংসাহ্লা মারমা, গত ১১ ডিসেম্বর পানছড়ি অনিল পাড়ায় সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ বিপুল চাকমা, সুনীল ত্রিপুরা, রুহিন ত্রিপুরা, লিটন চাকমা স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান এবং ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামমহ সারাদেশে সুখ-শান্তি ও নিরাপদ পরিবেশ কামনা করেন।

গুইমারা:
খাগড়াছড়ির গুইমারায় আজ (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার সময় পাহাড়ের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের তৈকর্মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রদীপ প্রজ্বললন কর্মসূচি পালন করা হয়।


লক্ষ্মীছড়ি:
পানছড়িতে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সেনাসৃষ্ট ঠ্যাঙারে মুখোশ বাহিনী কর্তৃক শহীদ বিপুল চাকমা, লিটন চাকমা, সুনীল ত্রিপুরা ও রুহিন ত্রিপুরার প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং  নববর্ষ ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ভয়-ভীতি হীন মুক্ত পরিবেশ গড়া প্রত্যয়ে 31st December উপলক্ষে লক্ষ্মীছড়িতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।


আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩) বিকাল ৫টার সময় আয়োতি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন এবং তারা নববর্ষ ২০২৪ সালে সকলের সুখ-শান্তি কামনা করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।

এতে বক্তব্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা আতুশে মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের লক্ষ্মীছড়ি ইউনিটের সংগঠক আপ্রুসি মারমা।


তিনি গত ১১ ডিসেম্বর পানছড়িতে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসী কর্তৃক বিপুল চাকমাসহ চার জনকে হত্যার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত উল্লেখ করে বলেন, সেনাবাহিনী ইউপিডিএফকে রাজনৈতিকভাবে দমনে ব্যর্থ হয়ে ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে খুন-গুমের পথ বেছে নিয়েছে। এ অবস্থা আর বরদাস্ত করা হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ খুনি-ঘাতকদের বিচার করতে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করেছে।

তিনি নবর্বষ ২০২৪ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাহাড় ও সমতলে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



 





0/Post a Comment/Comments