বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবসে রাঙামাটির মানিকছড়িতে জনসচেতনতামূলক সমাবেশ করে তিন সংগঠন। |
রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস-২০২৪ উপলক্ষে "Let us save our environment" শ্লোগানে এবং ‘যত্রতত্র প্লাস্টিক-পলিথিন ফেলে বিপর্যয় ডেকে আনবেন না, নির্মল সবুজ পৃথিবী গড়ার লক্ষে এগিয়ে আসুন” এই আহ্বানে রাঙামাটিতে জনসচেতনতামূলক সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।
আজ রবিবার (২৮ জুলাই ২০২৪) সকাল ১১ টার
সময় রাঙামাটি সদর উপজেলার মানিকছড়িতে মানববন্ধন আকারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন,
জেলা প্রশাসনের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ
করার কথা থাকলেও সমাবেশে যাওয়ার সময় পুলিশ মানিকছড়িতে আটকে দেয়। ফলে তারা সেখানে (মানিকছড়িতে)
সমাবেশ করতে বাধ্য হয়েছেন।
সেখানে “পুলিশ চেকপোস্ট থামুন’ লেখা বোর্ড দিয়ে পুলিশকে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিতে দেখা যায়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী সদস্যদেরও সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে যেতে চাইলে পুলিশ মানিকছড়িতে সড়কে বারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। |
রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে যেতে চাইলে পুলিশ মানিকছড়িতে সড়কে বারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। |
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধি জিপল চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের প্রতিনিধি পিংকি চাকমা।
সমাবেশে “পার্বত্য চট্টগ্রামকে পর্যটন
জোন হিসেবে দেখতে চাই না; prevent pollution,
protect nature; দর্শনীয় স্থানে প্লাস্টিকের বোতল-কনটেইনার-ঢাকনা-পলিথিন
ফেলবেন না; পর্যটক সেজে প্লাস্টিক-পলিথিন বর্জ্য ছড়ানো বরদাস্ত করবো না; সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের জন্য ৫% কোটা বরাদ্দ চাই; দমন-পীড়ন
বন্ধ কর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দাও; আবু সাঈদসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নিহতদের সম্মান
জানাই...” ইত্যাদি শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। এ সময় পুলিশ ‘সংখ্যালঘু
জাতিসত্তাসমূহের জন্য ৫% কোটা বরাদ্দ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে বাক-বিতন্ডার
পর ফিরিয়ে দেয়।
সমাবেশে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে অংশগ্রহণকারীরা। |
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা প্রশাসনের প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসনকে অবগত করার পরেও পুলিশ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে সমাবেশ করতে যেতে দেয়নি।
তিনি বলেন, মুনাফালোভী এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চক্র পাহাড় কেটে, পাথর উত্তোলন করে পাহাড়ে বিপর্যয় ডেকে আনছে। মুনাফালোভীরা বনভূমি উজাড় করার কারণে পাহাড় ধস ও ঝিরি- ঝরণায় পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পর্যটন ও সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে বন-পরিরেশ-প্রকৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি সবাইকে প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার্থে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
ছাত্র নেতা জিপল চাকমা বলেন, মুনাফালাভের আশায় সেগুন, রাবারসহ বিভিন্ন ধরনের বিদেশী গাছ রোপন করার কারণে পাহাড়ে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, যার কারণে শুকনো মৌসুমে পাহাড়ে চরম পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।
তিনি সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের জন্য ১% কোটা
পর্যাপ্ত নয় মন্তব্য করে অবিলম্বে ৫% কোটা পুনর্বহালের দাবি জানান।
নারী নেত্রী পিংকি চাকমা বলেন, যত্রতত্র
প্লাস্টিক-পলিথিন ফেলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং পরিবেশের চরম ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
উন্নয়নের নামে ও বন-প্রকৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বন-প্রকৃতি-পরিবেশ
বাঁচাতে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে কথিত উন্নয়নের নামে
বন-পরিবেশ ধ্বংসের কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।