২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি শহরে সেটলারদের ভাঙচুর ও অনিক চাকমাকে হত্যার চিত্র |
রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
রাঙামাটি শহরে গত ২০ সেপ্টেম্বর পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা, কলেজ ছাত্রকে হত্যা, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৫ জন বাঙালি
ও দু’জন পাহাড়ি রয়েছেন।
এ ঘটনার পর রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং হত্যাকাণ্ডের
ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) রাঙামাটি পুলিশ অনিক চাকমা হত্যার দায়ে মো.
জালাল (২৫) নামে এক যুবককে চাঁদপুর থেকে আটক করে। একই দিনে পুলিশ রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী
এলাকা থেকে অনুপম চাকমা (২৫) এবং সজিব চাকমা (২৭) নামে আরও দুই পাহাড়ি যুবককে আটক করে
নিয়ে যায়। তাদেরকে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় অভিযুক্ত করা হয় বলে জানা গেছে।
রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতদের বুধবার বিকেলে রাঙামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বর্ণ
কমল সেনের আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ০৪ অক্টোবর অনিক চাকমা হত্যা মামলায় পুলিশ মো. রুবেল নামে একজনকে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা থেকে এবং ০৫ অক্টোবর রাঙামাটি শহর থেকে মো. আবরার নামে আরেক যুবককে আটক করেছিল। এছাড়া অগ্নিসংযোগ ভাঙচুরের ঘটনায় ০৫ অক্টোবর জেলা শহর থেকে মো. আরিফুল এবং মো. রাকিব নামের আরও দুই যুবককে আটক করেছিল পুলিশ। (সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়তে মো. মামুন নামে এক ব্যক্তি
মোটর সাইকেল চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনি ও পালিয়ে আসার সময় বিদ্যুতের খুঁটিতে আঘাত পেয়ে
হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনার পরদিন দীঘিনালায় সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের ওপর
হামলা চালায়, অগ্নিসংযোগ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়। হামলায় একজন পাহাড়ি নিহত
হন। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি সদরে স্বনির্ভর এলাকায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রতিবাদে
ও এলাকা পাহারা দিতে রাস্তায় নামলে রাতের আঁধারে সেনাবাহিনী নির্বিচার গুলি চালায়।
এতে ২ জন নিহত ও ২১ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
এদিকে, দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে সংঘটিত হামলার প্রতিবাদে সংঘাত ও বৈষম্য
বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ এর উদ্যোগে রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে সেটলার
বাঙালিরা সেই মিছিলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার
ঘটনা ঘটে। সেটলার বাঙালিরা আঞ্চলিক পরিষদ সহ পাহাড়িদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
বৌদ্ধ বিহার ও বাসাবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় সেটলাররা অনিক কুমার চাকমা নামে এক কলেজ ছাত্রকে
পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।