ত্রিপুরা (ভারত), সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
জনগণের ঐক্যের দাবি প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত শুরু করায়
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গণ্ডাছড়ায় স্থানীয় জনজাতির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জনসংহতি
সমিতির সন্তু গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে এ্যকশন নিতে শুরু করেছে।
সেখানে বসবাসরত চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন দীর্ঘ দিন ধরে
ঐক্যের জন্য সন্তু গ্রুপের ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত আনুমানিক ১১ টায় গণ্ডাছড়ার
মগপাড়ায় সন্তু গ্রুপের তথাকথিত ফরেন এ্যাফেয়ার্সের এক সদস্যর বাড়িতে স্থানীয় জনজাতির
লোকজন হামলা করতে যায়।
এ খবর পেয়ে গণ্ডাছড়া থানার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
নেন।
হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, জনজাতিরা পিসিজেএসএসের (সন্তু
গ্রুপ) ওপর খুবই ক্ষুদ্ধ। তারা চায় না পিসিজেএসএসের কোন সদস্য গণ্ডাছড়ায় থাকুক।
কারণ পিসিজেএসএস পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের মধ্যে ঐক্য চায় না, বরং তাদের জাতীয়
অস্তিত্বকে ধ্বংস করতে চায়। তাই গণ্ডাছড়াবাসী পিসিজেএসএসকে ভারতে আশ্রয় দিতে চায়
না।
হামলা করতে যাওয়া জনজাতির লোকজন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সন্তু গ্রুপের কোন সদস্য গণ্ডাছড়ায় বসবাস করতে পারবে না।
উক্ত ঘটনার পরদিন ২২ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৯ টায় গণ্ডাছড়ার জনগণ মোবাইলে
ফোন করে পিসিজেএসএসের প্রবীণ নেতা খীসা বাবুকে জানিয়ে দেন, যদি পিসিজেএসএস ঐক্য না
করে তাহলে অতি দ্রুত তাদেরকে ভারত থেকে চলে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, পিসিজেএসএসের (সন্তু গ্রুপ) সভাপতি সন্তু লারমার বেয়াই খীসা
বাবু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতের গণ্ডাছড়ায় বসবাস করে
আসছেন এবং সেখান থেকে দেশে ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গ্রুপকে পরিচালনা করে থাকেন।
পিসিজেএসএসের বিরুদ্ধে এ্যকশন কেবল হুমকি ও হামলার চেষ্টার মধ্যে থেমে থাকেনি।
কয়েকদিন আগে দীঘিনালার নাড়েইছড়িতে সন্তু গ্রুপের সদস্যরা কয়েকজন ভারতীয় ব্যবসায়ীকে
আটকিয়ে তাদের সব পণ্যসামগ্রী কেড়ে নিলে ও তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলে গণ্ডাছড়াবাসীর
ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
উক্ত ঘটনার প্রতিশোধ নিতে গত ২৩ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৮ টায় স্থানীয়
জনগণ পিসিজেএসএসের সদস্য মিন্টু চাকমাকে গণ্ডাছড়ার করল্যাছড়ি বাজার থেকে ধরে তৈচাকমা
কালাবিজয় পাড়ায় নিয়ে যায়।
তবে স্থানীয় কার্বারী এবং ভারত সরকারের সেন্ট্রাল এজেন্সির অনুরোধে পরে
মিন্টু চাকমাকে ছেড়ে দেয়।
এসব হামলা ও হুমকির পর ভারতের ত্রিপুরায় পালিয়ে থাকা পিসিজেএসএস সন্তু
গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সংঘাত বন্ধ করে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সামিল না হলে সামনের দিনগুলোতে ভারতে
তাদের ওপর হামলা বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে সন্তু গ্রুপের অনেক
সদস্য নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানা গেছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।