![]() |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সাবেক ছাত্রনেতা মিটন চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট চবি শাখা। |
সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী এবং পাহাড়ি
ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের
সাবেক নেতা মিটন চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ সোমবার (১১ নভেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো
পয়েন্ট থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনার থেকে ঘুরে এসে আবারো জিরো পয়েন্টে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমার সঞ্চালনায় এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চবি সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন আরাফাত।
ঈশা দে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। বর্তমানেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সারা দেশে অসংখ্য মানুষকে চোরাগোপ্তা হামলার শিকার হতে হচ্ছে। মিটন চাকমা হত্যাসহ সমস্ত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাই।
ইয়াসিন আরাফাত বলেন, মিটন চাকমাকে হত্যার দায় রাষ্ট্রের। তাঁকে রাষ্ট্র
নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় পাহাড়িদের সমতলের মানুষদের সামনে
মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ এর মাধ্যমে শোষণ নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে এ রাষ্ট্র।
মিটন চাকমার মতো অন্যান্য ছাত্র নেতার খুনের সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারের আওতায়
আনতে হবে।
রোনাল চাকমা বলেন, মিটন চাকমা ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পালি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী
ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে মাস্টার্স শেষ করে ২০২২ সালের নভেম্বরে ইউপিডিএফ এ যোগ দেন।
ব্যক্তি জীবনে মিটন চাকমা খুবই অমায়িক, ভদ্র-নম্র ও সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। অথচ মিটন
চাকমার মতো সম্ভাবনাময়ী নেতৃত্বকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পাহাড়ের দোসররা হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় এই দোসররা খুনী হাসিনার সাথে সুর মিলিয়ে আন্দোলনকারীদের
"নব্য রাজাকার" অ্যাখায়িত করেছিলেন।
সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন মিটন চাকমা
করোনা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিবহণ চালু করা, ক্যাম্পাসে নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ,
চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন, ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়ন
বিরোধী আন্দোলনসহ পাহাড় ও জাতীয় বিষয়ে ছিলেন সক্রিয় ও সোচ্চার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের
চাপ এবং হেনস্তার মুখেও তিনি দমে যাননি। মিটন চাকমা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে
নিজ আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে পাহাড়ে নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করছিলেন।
তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এই হত্যাকাণ্ডের
বিচারের জোর দাবি জানাই। একই সাথে জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ পাহাড়-সমতলে সকল হত্যাকান্ডের
বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গতকাল ১০ নভেম্বর ২০২৪ দুপুরে মিটন চাকমা খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সাংগঠনিক কাজে থাকা অবস্থায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস-এর একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত দ্বারা হত্যার শিকার হন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।