সংঘটিত ঘটনাটি ৮৬’র গণহত্যা হিসেবে পরিচিত
![]() |
প্রতীকী ছবি |
বিশেষ প্রতিবেদন, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫
আজ ১ মে পার্বত্য
চট্টগ্রামে আরেকটি গণহত্যার দিন। ১৯৮৬ সালের আজকের এই দিনে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলার বাঙালি কর্তৃক খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে পাহাড়িদের
ওপর চালানো হয় বর্বর এক হত্যাকাণ্ড। এতে বহু মানুষ হতাহত হন এবং হাজার হাজার
মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
এছাড়া উক্ত ঘটনার পরবর্তীও
জেলার বিভিন্ন জায়গায় একই কায়দায় পাহাড়িদের ওপর চালানো হয় সাম্প্রদায়িক
হামলা ও হত্যাকাণ্ডের মতো বর্বর ঘটনা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর তথ্য মতে, ১ মে এবং তার পরের দিনগুলোতে আইন-শৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেটলার বাঙালিদের নিয়ে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে পাহাড়ি
গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে এবং স্বতঃপ্রবৃত্তভাবে পাহাড়িদের হত্যা করে। এই গ্রামগুলো
হল- গোলকপুতিমা ছড়া, কালানাল, ছোট করমা পাড়া, শান্তিপুর, মির্জাবিল, হেদারা ছড়া
(খেদারাছড়া মুখ পাড়া নামেও পরিচিত), পুজগাং, লোগাং, হাতিমুক্তি পাড়া, সাডেশ্বর
পাড়া, নাবিদাপাড়া এবং দেওয়ান বাজার।
এ হত্যাকাণ্ডে ছয়টি গ্রামের ১৬ জনের অধিক লোককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হাজার
হাজার লোক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
একই দিন খাগড়াছড়ি সদরের
মহাজন পাড়ায়ও আক্রমণ চালানো হয়। এতে একজন নিহত ও ১৫ জনের অধিক আহত হয়।
অগ্নিসংযোগ করা হয় আনুমানিক ৩০টির অধিক পাহাড়ি বাড়িতে।
এভাবে পরবর্তী সময়ে
মাটিরাংগা উপজেলার তেইন্দং, তবলছড়ি এলাকা এবং দীঘিনালার বোয়ালখালী, পাবলাখালীসহ
আরো অনেক পাহাড়ি অধ্যুষিত এলাকায়ও পাহাড়িদের উপর হামলা ও লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড
সংঘটিত হয় এবং শত শত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানা যায়।
১ মে ’৮৬ হতে কয়েকদিন ধরে
বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত এসব হামলা ও হত্যাকাণ্ডে কয়েকশত পাহাড়ি নিহত হয়েছে বলে
ধারণা করা হয়, যার সঠিক হিসাব এখনো জানা যায়নি। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলারদের
পরিকল্পিত এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ফলে হাজার হাজার পাহাড়ি নিজ জায়গা-জমি,
বসতভিটা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত
এই হত্যাযজ্ঞটি ৮৬’র গণহত্যা হিসেবে পরিচিত। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে
সংঘটিত করা হয় অসংখ্য গণহত্যা। কিন্তু বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী এসব গণহত্যার কোন
তদন্ত ও বিচার করেনি।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।