রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজক
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য
ধ্বংসের’ বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ির রামগড়ে র্যালি ও সমাবেশ করেছে রামগড় পরিবেশ রক্ষা কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন ২০২৫) সকাল ১০টায় “প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার্থে সচেতন
হোন” এই ব্যানার শ্লোগানে রামগড়-ঢাকা সড়কের দাতারাম পাড়া রাস্তা মুখ থেকে একটি র্যালি
বের করা হয়। র্যালিটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে যৌথখামার বাজারে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ
হয়। র্যালিতে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।
র্যালি পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রামগড় সরকারি কলেজের ছাত্র তৈমাং ত্রিপুরা, নয়ন চাকমা ও ধনো ত্রিপুরা।
বক্তারা বলেন, আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় অনেক সুন্দর ও ফুল-ফল,
পশুপাখি ও গাছগাছালিতে ভরা ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেক প্রাণী এবং ঔষধি গাছসহ নানা প্রজাতির
গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই আমাদের বনাঞ্চল ও পরিবেশ রক্ষার্থে গাছ-বাঁশসহ জীববৈচিত্র
রক্ষায় আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠি আমাদেরকে ধ্বংস করার জন্য, জাতির অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। কথিত উন্নয়নের নামে. পর্যটনের নামে পাহাড়িদের জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি, ফসল ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে প্রতিবছর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বান্দরবানে পাঁচ তারকা
হোটেল নির্মাণের নামে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ম্রোদের জমি কেড়ে নিয়ে তাদেরকে উচ্ছেদ
করা হয়েছে। কিন্তু ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে এখনো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে মাটিরাঙ্গায় ধনিরাম পাড়ায় বুলডোজার দিয়ে পাহাড়িদের
ধান্য জমি, ফসল ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তারা বলেন, সীমান্ত
সড়কের ফলে ধনিরাম পাড়া, লক্ষ্মীছড়া, যামিনী পাড়া, সাদিয়া বাড়ি এলাকার অনেক পরিবার জমি,
জুম পাহাড়, বাগান হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছে। ছড়ার ওপর দিয়ে সড়ক নির্মাণের কারণে পানি
প্রবাহ আটকে যাওয়ায় ২০২৪ সালে ওই এলাকায় বড় ধরনের বন্যায় কবলিত হয়েছে বলেও বক্তারা
উল্লেখ করেন।
বক্তারা শাসকগোষ্ঠির পাহাড়ি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে বক্তারা কথিত উন্নয়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ,
পর্যটনে কেন্দ্র নির্মাণসহ পাহাড়ি উচ্ছেদ ও পরিবেশ ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সরকারের
প্রতি দাবি জানান। একই সাথে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে যেসব অবৈধ ইটভাটা চালু করা
হয়েছিল সেগুলোও বন্ধের দাবি করেছেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।