""

‘ইউপিডিএফের কারণে চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না’ এমন অভিযোগ সন্তু গ্রুপের মনগড়া


লংগদু প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বড়কলক বৌদ্ধবিহারে গতকাল (২১ আগস্ট) জেএসএস সন্তু গ্রুপের লংগদু উপজেলা নেতারা বিভিন্ন গ্রামের লোকজনকে নিয়ে একটি মিটিং করেন। এতে বেঙ্গীছড়া, বড়াদাম, রাধামন, মাস্টারপাড়া, বড় কাট্টলী, ছোট কাট্টলী থেকে কয়েক ডজন লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

মিটিং আয়োজনকারী সন্তু গ্রুপের মধ্যে লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর চাকমা, ছাত্র সংগঠনের সুজয় চাকমা, সশস্ত্র গ্রুপের ডেবা, সুব্রত, দীপ্তসহ ১০/১২ জন ছিলেন। এতে মনি শংকর, সুজয় ও ডেবা বক্তব্য রাখেন।

মিটিংয়ে তারা নানা আলোচনার মধ্যে চুক্তি বাস্তাবয়ন নিয়েও কথাবার্তা বলেন। “ইউপিডিএফের কারণে চুক্তি বাস্তাবায়ন হচ্ছে না, তাই ইউপিডিএফকে শেষ করতে তাদের সাথে মারামারি করতে হচ্ছে” এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে তারা উপস্থিত লোকজনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে।

তবে এলাকার মুরুব্বী, জনপ্রতিনিধিসহ অনেকে সন্তু গ্রুপের এমন অভিযোগকে তাদের মনগড়া কথাবার্তা বলে মন্তব্য করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুরুব্বী বলেন, আমি যতদূর জানি ইউপিডিএফ চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দেয়নি। বরং তারা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য জেএসএস আন্দোলন করলে তাতে সহযোগিতা করার কথা বলেছে। আমাদের এলাকায়ও ইউপিডিএফ মিটিং করে এমন কথা বলেছে। কাজেই, জেএসএস’র লোকজন গতকালের মিটিংয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা তাদের মনগড়া। মূলত সংঘাত জিইয়ে রেখে শাসকগোষ্ঠিকে লাভবান করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য বলে আমার মনে হয়েছে।  

এলাকার এক জনপ্রতিনিধি বলেন, জেএসএসের এই মিথ্যা অভিযোগ তো আজকের নয়। তারা এমন কথাবার্তা বলে জনগণকে ভুল বুঝিয়ে শুধু সময় পার করছে। সত্যিকার অর্থে তারা যদি চুক্তি বাস্তবায়ন চাইতো তাহলে সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতো। কিন্তু এ যাবত আমরা তা দেখতে পাইনি। তারা আসলে সংঘাত জারি রেখে শাসকগোষ্ঠির মন রক্ষা করার জন্য এমন অভিযোগ করে থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অপর এক শিক্ষকও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব তো সরকারের। কিন্তু সরকারইতো চুক্তি বাস্তবায়ন করছে না। তাহলে ইউপিডিএফকে দোষ দিয়ে সংঘাত জিইয়ে রাখার কোন মানে হয় না। এটা বরং শাসকগোষ্ঠিকেই লাভবান করছে। জেএসএসের উচিত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা, প্রয়োজনে আঞ্চলিক পরিষদ থেকেও পদত্যাগ করা।

স্থানীয় এক শিক্ষার্থী এ বিষয়ে বলেন, দেশে গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন নামে প্লাটফর্ম গঠন করে চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে মাঠে নেমেছিলেন। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বড় সমাবেশ আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু ছাত্রদের উক্ত আন্দোলনে ইউপিডিএফ সমর্থন দিলেও সন্তু লারমার জেএসএস তাতে বাধা দিয়েছে। তারা যদি সত্যিকার অর্থে চুক্তি বাস্তাবায়ন চাইতো তাহলে নিশ্চয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দিতো না। চুক্তি বাস্তবায়নের দাবির আন্দোলনে বাধা দেয়ার মাধ্যমেই প্রমাণ হয় যে, ইউপিডিএফের কারণে নয়, বরং জেএসএস নিজেই চুক্তি বাস্তবায়ন চায় না।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments