""

রামগড়ে অনিল চাকমাকে মারধর করে ছেড়ে দিয়েছে সেটলাররা, আরেকজনকে থানায় হস্তান্তর


রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার নাঙ্গেল পাড়ার বাসিন্দা অনিল চাকমা (৫০), পিতা- কান্দ্রা চাকমা রামগড় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে খাগড়াছড়ি বিল এলাকায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক হামলা ও মারধরের শিকার হন।

আজ রবিবার (৯ নভেম্বর ২০২৫) বেলা ৩টার সময় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, অনিল চাকমা রামগড় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে খাগড়াবিল এলাকায় সেটেলার বাঙালি মো. কালাম সওদাগর (৩৪) ও মো. ইউনুছ (২২) তাঁকে সিএনজি থেকে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

হামলার সময় সেটলাররা তাঁকে “ইউপিডিএফ সদস্যদের সাহায্য কর কেন?”, “ইউপিডিএফ কতজন আছে?”, “ওদের কাছে অস্ত্র আছে কিনা?” তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পারবে কিনা? ইত্যাদি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে।

সেটলাররা সেখানে তাকে দীর্ঘক্ষণ আটক রেখে মারধর করার পর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়।

বর্তমানে তিনি আহত অবস্থায় বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনার বিষয়ে অনিল চাকমা এ প্রতিবেদককে জানান, ‍“সকালে আমি কলা, পেঁপে ও বিভিন্ন তরিতরকারি নিয়ে রামগড় বাজারে যাই। সেগুলো বিক্রি করে বাজার থেকে সিএনজিতে করে বাড়ি ফেরার পথে খাগড়াবিল এলাকায় সেটলার বাঙালিরা আমাদের সিএনজি আটকায়। আমরা চারজন থাকলেও বাঙালিরা আমাকে আটকে রাখে। সেখানে গাড়ি থেকে নামানো মাত্র তারা আমাকে কোন কারণ ছাড়াই বেদম মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। সেটলারা আমার ফোন, টাকা কেড়ে নেয়। পরে তারা আমাকে বেঁধে সেনাবাহিনীকে ফোন করে আমার বাড়িতে অস্ত্র রয়েছে বলে জানিয়ে দেয়। আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে বলি যে, আমি একজন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, আমার বাড়িতে কোন অস্ত্র নেই।”

এ সময় মো. কালাম ও মো. ইউনুছ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও তিনি জানান।  

অপরদিকে, একই দিন দুপুর ১২টার সময় রূপাইছড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া নয়ন চাকমাকে সেটলাররা খাগড়াবিলে অবস্থান করা সেনাদের হাতে তুলে দেয়। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতনের পর অস্ত্র গুজে দিয়ে রামগড় থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

তাকে পুলিশের হেফাজতে রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, সেনাদের সহযোগিতায় সেটেলার বাঙালিদের এমন তৎপরতায় এলাকার পাহাড়িদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেটলাররা যে কোন সময় আরো বড় ধরনের সহিংস হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা অনিল চাকমাকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত সেটলার কালাম ও ইউনুছ গংদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর তৎপরতা

দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি দল পাম্প ওয়েল ও লিচু বাগান দিকে ঢুকে থানা চন্দ্র পাড়া হয়ে চলে যায়। আর বাদনাতুলি ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য দুটি গাড়িতে করে খাগড়াবিলে গিয়ে রামগড় বাজারের দিকে চলে গেছে বলে জানা গেছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, আজ রাতে নাঙ্গেল পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী ও সেটলার বাঙালিরা টহল দেবে।

রাত ৯:৫০টায় পাওয়া খবরে জানা গেছে, রামগড় বাজার হয়ে দুটি গাড়ি যোগে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা সেটলার বাঙালিসহ খাগড়াবিল ও রূপাইছড়ি গ্রামের সীমান্তের রাবাার বাগান (২নং গেট) এলাকায় গিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে। এতে এলাকার জনগণ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments