সিএইচটি নিউজ ডটকম, বৃহস্পতিবার, নভেম্বর
১৭, ২০১৬
মানিকছড়ি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অগণতান্ত্রিক
“১১ নির্দেশনা” বাতিল কর, দমন-পীড়ন, ধরপাকড় বন্ধ কর! এই দাবি সম্বলিত স্লোগানকে সামনে রেখে এবং জাতীয় সংকটময়
পরিস্থিতে ছাত্র সমাজ ঐক্য বন্ধ হয়ে অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনকে বেগবান করুন" এই
আহ্বানে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) মানিকছড়ি গিরী মৈত্রী
ডিগ্রি কলেজ শাখার ৪র্থ কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১৬ নভেম্বর ২০১৬) সকাল ১০টায়
মানিকছড়ি সদরে এই কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। কাউন্সিল অধিবেশনের শুরুতে পিসিপি’র গণতান্ত্রিক
আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরন করেছেন ও কারাবরন করছেন তাদেরকে সম্মান ও
শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিলে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি
ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) মানিকছড়ি গিরী মৈত্রী কলেজ শাখার সভাপতি শান্ত মারমার সভাপতিত্বে
ও সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলার
অর্থ সম্পাদক জহেল চাকমা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের প্রতিনিধি থুইলাপ্রু মার্মা, মানিকছড়ি
উপজেলা শাখার সভাপতি উথুইপ্রু মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার
সভাপতি রাপ্রু মার্মা, মাটিরাংগা কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক নয়ন জ্যোতি চাকমা ও মানিকছড়ি
কলেজের ছাত্র সুইথুই মারমা প্রমুখ।
কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন,
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর “১১ নির্দেশনা” জারির মাধ্যমে সেনাশাসনকে
বৈধতা দিয়েছে। যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী
সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ নিরীহ ছাত্র এবং জনগণের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন ও ধর-পাকড়ের মাত্রা
দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান শেখ
হাসিনা সরকার বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্যেতে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের কথা মুখে বললেও তারা কাজ করে ভিন্ন রকম। পার্বত্য
চট্টগ্রামে পর্যটন, সামরিক-বেসামরিক ক্যাম্প, মেডিক্যাল কলেজ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপনসহ নানান ধরনের উন্নয়ন দেখিয়ে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদেরকে নিজ বাস্তুভিটা থেকে
উচ্ছেদ করছে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে পাহাড় ও সমতলের
জনগণ কেউ নিরাপদ নয়, প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষণ, খুন, গুম, হত্যার মত ঘটনা ও ছাত্র-শিক্ষক,
লেখক, বুদ্ধিজিবীসহ যারা ন্যায়ের পক্ষে কথা বলে তাদেরকে নিজ বাড়ী থেকে কিংবা স্কুল-কলেজ,
সভা-সমাবেশ থেকে তুলে এনে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করছে।
বক্তারা, সেনাবাহিনী কর্তৃক সাধারণ মানুষের
উপর অন্যায়ভাবে ধরপাকড় বন্ধ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের “১১ নির্দেশনা” বাতিল করে পার্বত্য
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং জাতীয় সংকটময়
পরিস্থিতিতে সরকারের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সকল ধরনের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে পার্বত্য
চট্টগ্রামে জনগণের মুক্তির সনদ পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে বেগবান করতে ছাত্র-যুব-নারী
সমাজসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জনান।
------------------