""

লোগাং গণহত্যার স্মরণে দীঘিনালায় আলোচনা সভা

দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১


’সরকারের পাতানো ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসুন, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন’ এই শ্লোগানে রক্তাক্ত লোগাং ‘৯২ স্মরণে দীঘিনালায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ১০ এপ্রিল ২০২১, শনিবার লোগাং গণহত্যার ২৯ বছর উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সভাপতি রিটেন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক রিপন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা, সংগঠক বকুল চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য রিটেন চাকমা।

সভার শুরুতে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

ইউপিডিএফ নেতা মিলটন চাকমা বলেন, লোগাং গণহত্যার দিনটি মানব জাতির ইতিহাসের জন্য এক কলংকময় দিন আর জুম্ম জাতির জন্য আতংক ও ভয়ার্ত দিন। ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলার বাঙালিরা মিলে পাহাড়িদের লোগাং গুচ্ছগ্রামে রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল। দীর্ঘ ২৯টি বছর পার হলেও আজও ঘটনায় জড়িত দোষীদের কোন শাস্তি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত গণহত্যার বিচার না করে উপরন্তু জুম্ম জনগণের মধ্যে দালাল-প্রতি্ক্রিয়াীল গোষ্ঠী সৃষ্টি করে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। শুধু তাই নয়, উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন, ‘সন্ত্রাসী’ ধরার নামে রাত-বিরাতে জুম্ম জনগণকে হয়রানি, অস্ত্র গুজে দিয়ে জেলে দেয়া অব্যাহত রেখেছে। বাবুছড়া, সাজেকে জুম্ম জনগনকে ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।


লোগাং গণহত্যার ঘটনা সমগ্র জুম্ম জাতিকে এক কাতারে নিয়ে এসেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার প্রতিবাদে জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে বৈ-সা-বি উৎসব বর্জন করেছিল, ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছিল। হাজার হাজার নারী-পুরুষ, আবাল, বৃদ্ধ বণিতা লোগাং অভিমুখে লংমার্চে সামিল হয়েছিল। আগামীতেও আমাদের এভাাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে।

তিনি সরকারের পাতানো ফাঁদ থেকে বেরিয়ে এসে জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বকুল চাকমা বলেন, লোগাং গণহত্যার মতো ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশ-বিদেশের মানুষকে নাড়া দিয়েছিল। যার কারণে সরকার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে তা পারেনি। ভবিষ্যতে আমাদের সংঘবদ্ধ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনা মোকাবেলা করতে হবে।

পিসিপি নেতা রিটেন চাকমা বলেন, লোগাং গণহত্যার প্রতিবাদে সে সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। লোগাং অভিমুখে লংমার্চ করে ঘটনাটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরেছিল।

সভার সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, লোগাং গণহত্যার দিনটি আমাদের জন্য এক বিভিষিকাময় দিন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে আমাদের ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে।





0/Post a Comment/Comments