""

সিন্দুকছড়িতে গৃহ ভাংচুর ও অবৈধভাবে ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ


খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
 ।। খাগড়াছড়ি জেলাধীন গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি পুংখিমুড়া পাড়ার সনেরঞ্জন ত্রিপুরার গৃহ ভাংচুর ও অবৈধভাবে ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ (টিএসএফ) এর উদ্যোগে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার (১৪ জুন ২০২১) সকাল ১০ টার দিকে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাপলা চত্বর প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চে গিয়ে সমাবেশ আয়োজন করে।


উক্ত সমাবেশে টিএসএফ এর সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জুলাল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় ও প্রেম ত্রিপুরার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সিন্দুকছড়ির কার্বারী লোকনাথ ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা, পিসিপি’র প্রতিনিধি জেসি চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নক্ষত্র ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল এর সভাপতি নিয়ং মারমা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সদস্য কৃপায়ন ত্রিপুরা ও টিএসএফ’র গুইমারা উপজেলার প্রতিনিধি বটেন ত্রিপুরা প্রমুখ।


লোকনাথ ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিজ দায়িত্ব ভুলে গিয়ে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে পর্যটন, হোটেল-মোটেল নির্মাণসহ সেটেলার পুর্নবাসনের পাঁয়তারা করছে। সাজেক, চিম্বুকের পর এবার সিন্দুকছড়িতে পর্যটন ও সেটেলার পুর্নবাসন করে ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি আরো বলেন, নিজ জায়গায় বাড়ি তুললে সেনাবাহিনী রাতে এসে বাড়ি ভেঙে দেয়। এখানে স্পষ্ট বুঝা যায় তারা কী ষড়যন্ত্র করছে। সিন্দুকছড়িবাসী উচ্ছেদ আতঙ্কের মধ্য আছে। তাই সিন্দুকছড়ির পুংখিমুড়া রক্ষার্থে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।


এন্টি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ভূমি বেদখল করে পর্যটন করা নতুন কিছু নয়। সাজেক, চিম্বুক পর এবার সিন্দুকছড়িতে বেদখল করে সেটলার পুর্নবাসন ও পর্যটনের করার ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি আরো বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক শুধু ভূমি বেদখল হচ্ছে না। নারী নির্যাতন, খুন-গুমের ঘটনাও সংঘটিত হচ্ছে। এসব অন্যায়-অবিচার, নির্যাতন, ধর্ষণের বিচার চাইতে গেলে হামলা, জেল-জুলুমে ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কল্পনা চাকমার অপহরণের ২৫ বছর হলেও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আজও হয়নি।

পিসিপি’র প্রতিনিধি জেসি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখলে ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিনের। উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ করে পাহাড়িদের বেদখলকৃত ভূমি ফিরিয়ে দিয়ে প্রথাগত ভূমি ব্যবস্থা চালুসহ পক্ষীমুড়ো এলাকায় পাহাড়িদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তিনি।

বিএমএসসি সভাপতি নিয়ং মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সেনা শাসন অব্যাহত রেখে দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক বাড়ি ভেঙে দেয়ার নিন্দা জানাই। তিনি পাহাড়ি অস্তিত্ব ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বন্ধ ও সেনা শাসন তুলে নেয়ার আহ্বান জানান।

প্রেম ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে পর্যটন, উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী সনে রঞ্জন ত্রিপুরার বাড়ি ভেঙে দিয়ে তার জমি দখল করে পরের দিন সেখান একটি ঘর নির্মাণ করে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ নাম দিয়ে স্থানীয়দের সেবা প্রদান করার প্রচার চালিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। তারা সনে রঞ্জন ত্রিপুরার নিজ জায়গায় নির্মিত বাড়ি রাতের আঁধারে ভেঙে দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

তিনি আরো বলেন, সনে রঞ্জন ত্রিপুরার বাড়ি ভেঙে কমিউনিটি ক্লিনিকের আড়ালে কার্যত সেখানকার পাহাড়ি জনগণের ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বেদখলকৃত ভূমি ফেরত ও সনে রঞ্জন ত্রিপুরাকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত ছাত্রসমাজকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। তিনি পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি ব্যবস্থা চালুসহ বেদখলকৃত পাহাড়ি ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।





0/Post a Comment/Comments