""

ইউপিডিএফ’র রাঙামাটি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক শান্তিদেব চাকমা’র প্রয়াণে সভাপতি ও সম্পাদকের গভীর শোক প্রকাশ

 নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩


ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সভাপতি প্রসিত খীসা ও সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা আজ শনিবার (২১ অক্টোবর ২০২৩) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যৌথ শোক বার্তায় দলের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক ও কেন্দ্রীয় সদস্য শান্তিদেব চাকমার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শান্তিদেব চাকমা কার্ডিয়াক ভাস্কিউলার এক্সিডেন্ট-এ (স্ট্রোক) আক্রান্ত হয়ে চিকিসাধীন অবস্থায় গতকাল (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বাড়ি রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের ডানে ত্রিপুরাছড়া গ্রামে। তিনি রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, রাঙামাটি সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অধ্যয়ন শেষ করে ইউপিডিএফের সাথে যুক্ত হন।

শোক বার্তায় ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় বলেন, শান্তিদেব চাকমা নিপীড়িত-নির্যাতিত জনগণের মুক্তির লক্ষে একজন একনিষ্ট সংগঠক ছিলেন। তিনি কলেজ জীবনে ১৯৮৫ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রামের গোপন ছাত্র সংগঠন Hill Youth and Students' Organization-এ যুক্ত হন। এ সময় তিনি রাঙামাটিতে সেনা নজরদারি এড়িয়ে এই সংগঠনটির তপরতা চালাতেন এবং তখনকার দিনে পত্র যোগাযোগের মাধ্যমে রাঙামাটির সাংগঠনিক রিপোর্ট দিতেন।

১৯৮৯ সালে এরশাদের জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে প্রচারিত বুকলেট (ফুলবিঝু, এপ্রিল ১৯৮৯) রাঙামাটি কলেজ ও সদরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গোপনে ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার কাজে যুক্ত ছিলেন।

১৯৮৯ সালের ২০ মে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ গঠিত হলে তিনি এতে যুক্ত হন এবং ফেনীতে পিসিপি গঠনে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পিসিপির সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তারে ভূমিকা রাখেন।

বিতর্কিত পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রাক্কালে দেশীয় পরিস্থিতি ও করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে ২৫-২৭ মার্চ ১৯৯৭ ঢাকায় আহূত তিন সংগঠনের গুরুত্ব সম্মেলনে যোগ দেন। এ সম্মেলনে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠাসহ ঐতিহাসিক সাত দফা গৃহীত হয়েছিল।

নেতৃদ্বয় আরো বলেন, শান্তিদেব চাকমা ইউপিডিএফের প্রতিষ্ঠালগ্নে ১৯৯৮ সালের ২৫-২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় তিন সংগঠনের আয়োজিত পার্টি প্রস্তুতি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইউপিডিএফের চট্টগ্রাম ইউনিটে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন এবং নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চট্টগ্রামে সাংগঠনিক কাজের বিস্তার ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।

যুবকদের সংগঠিত করতে তিনি গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিট ও রাঙামাটি জেলা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন। দেশে জরুরী অবস্থা জারির পর সেনা-সেটলাররা দীঘিনালায় সাধনাটিলা বনবিহারের জমি বেদখলে তপর হলে শান্তিদেব চাকমা তা রক্ষার্থে জনগণকে সংগঠিত করাসহ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠকের দায়িত্বে ছিলেন।

ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় বলেন, ব্যক্তি জীবনে শান্তিদেব চাকমা অত্যন্ত সরল, অমায়িক ও সাদাসিদে প্রকৃতির একজন ছিলেন। তবে  তিনি আপোষহীন ও একনিষ্টতার সাথে পার্টির দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার প্রয়াণে পার্টি ও জনগণ একজন যোগ্য নেতাকে হারালো। জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি আমৃত্যু যে অবদান রেখে গেছেন তা পাবত্য চট্টগ্রামের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

শোক বার্তায় নেতৃদ্বয় শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও পার্টির নেতা-কর্মীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments