""

জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে চবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট চবি শাখা।

চবি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িত নিপীড়ক আম্মান সিদ্দিকী ও দ্বীন ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট চবি শাখা।

আজ সোমবার (১৮ মার্চ ২০২৪) দুপুর ১২ টায় ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা চবি’র কলার ঝুপড়ি থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে একটি মিছিল করেন। মিছিল শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়ার সঞ্চালনায় ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক জশদ জাকির ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এমদাদ উল্লাহ্।

বক্তব্য রাখছেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা।

বক্তারা বলেন, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের অধিকারচর্চা ও অংশগ্রহণকে চূড়ান্তরূপে সংকুচিত করা হয়েছে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচীতে ছাত্রলীগের হামলা, হলসমূহে দখলদারিত্ব, নিয়োগবাণিজ্য, অপক্ষমতা প্রদর্শনের এক নির্মম পরিণতি আত্মপ্রকাশ করেছে ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে। এটি একটি কাঠামোগত হত্যাকান্ড।

তারা প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে বলেন, আমরা দেখি ছাত্রলীগ দ্বারা আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসন কীভাবে অপরাধীদের বাঁচাতে তপর ছিলো। জাহাঙ্গীরনগরে যখন গৃহবধূ ছাত্রলীগ কর্মী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়, তখন প্রশাসন অপরাধীদের বাঁচাতে চায়। চবিতে ছাত্রী তার সাথে ঘটা হেনস্থার অভিযোগ করতে আসলে তার অভিযোগপত্র নেওয়া হয় না, তদুপরি হলে মেয়েদের প্রবেশের সময় বেঁধে দেওয়া হয়৷ অথচ, মতপ্রকাশ করাতে খাদিজার মতো শিক্ষার্থীরা নিপীড়নমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের শিকার হয়। একইভাবে জাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি আঁকার দায়ে ছাত্রলীগের কথায় প্রশাসন বহিষ্কার করে দুজন ছাত্রনেতাকে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী প্রশাসনের অন্যায়ের অন্যায়ের শিকার উল্লেখ করে তারা বলেন, এইসকল ঘটনার মধ্য দিয়ে যে প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীদের যেতে হয়, এগুলো ফাইরুজের সাথে ঘটা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড থেকে আলাদা কিছু নয়। বরং ফাইরুজের হত্যাকাণ্ড এইসব ঘটনারই চূড়ান্ত রূপ। এই খুনি কাঠামো থেকে আমরা কেউই বিচ্ছিন্ন নই। আমরা চবিসহ বাংলাদেশের সকল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সুবিচার ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানাই৷'

চবির সাধারণ শিক্ষার্থী এমদাদ উল্লাহ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার ইতিহাস আমাদের রয়েছে। ফাইরুজ আত্মহত্যা করে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে সিস্টেমেটিকভাবে শিক্ষার্থীদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয় ও মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য করা হয়। ফলে এ দাবি শুধু একজনের নয়, বা শুধু কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর নয়, এ দাবি ষোল কোটি মানুষের। এ সংকটের সময়ে জাতির অগ্রণী অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরী।'

সমাবেশ থেকে ফাইরুজ অবন্তিকাসহ সকল রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং বিশ্ববিদ্যালসমূহে নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধি যুক্ত করে নিপীড়নবিরোধী সেল চালু করার জোর দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা একটি স্ট্যাটাস লিখে আত্মহনন করেন। স্ট্যাটাসে তিনি তার সাথে ঘটা অন্যায়গুলোকে তুলে ধরেন এবং তার এ আত্মহননের জন্য জবি প্রশাসন, তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করেন।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments