""

বান্দরবানে যৌথ অভিযানের নামে গণগ্রেফতার-হয়রানি বন্ধের দাবিতে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ


মানিকছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির সাথে জড়িতদের গ্ৰেফতার, যৌথ অভিযানের নামে গণগ্ৰেফতার ও হয়রানি বন্ধ , নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রয়ের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মানিকছড়ি উপজেলা শাখা।

আজ সোমবার (২২ এপ্রিল ২০২৪) সকাল ১০টায় মানিকছড়ি সদরের জামতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পেট্রোলপাম্প এলাকা ঘুরে আবার জামতলায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়।


সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র মানিকেছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য আনু মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি অংহ্লাচিং মারমা ও পিসিপি’র মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অংসালা মারমা।

সমাবেশে অংহ্লাচিং মারমা বলেন, বান্দরবানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর যৌথ অভিযানের নামে বম জাতিসত্তার সাধারণ জনগণকে গণগ্ৰেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ ৭০ জনের অধিক নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে গর্ভবতী নারীও রয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সামাজিক উৎসব বৈসাবি’র প্রাক্কালে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা সাজিয়ে সেখানে সাধারণ জনগণের ওপর অমানবিকভাবে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ৫ কেজির বেশি চাল কিনতে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। সরকার-প্রশাসনের এই নিপীড়ন-হয়রানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, যারা ব্যাংক ডাকাতি করেছে তারা অবশ্যই অপরাধী। কিন্তু তাই বলে পুরো বম জাতিসত্তার ওপর কেন এর দায় চাপানো হবে? সাধারণ জনগণকে ধরে অস্ত্র গুজে দিয়ে কুকি-চিন বানানো হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে যারা ব্যাংক ডাকাতির সাথে জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করুন, অযথা সাধারণ জনগণকে গ্রেফতার-নিপীড়ন করবেন না।

শুধু বান্দরবানে নয়, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের কোন নিরাপত্তা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যদি এভাবে দমন-পীড়ন জারি রাখা হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ বসে থাকবে না।


অংসালা মারমা বলেন, বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ওপর সরকার যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে তা অতীতের ধারাবাহিকতারই অংশ। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তার ওপর দমন-পীড়ন চলে আসছে।

তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উৎসবের ছুটিতে আসা বম শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও সরকার বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে।

অংসালা মারমা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, রুমা-থানচিতে যেখানে ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে তার পাশে সেনাবাহিনী ক্যাম্প রয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সামনে প্রকাশ্যে গাদা বন্দুক দিয়ে কীভাবে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে তা প্রশ্ন থেকে যায়। এই ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় প্রশাসন-সেনাবাহিনী জড়িত থাকায় দুর্বৃত্তরা ব্যাংক ডাকাতি করতে পেরেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এই ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী যৌথ অভিযানের নামে নির্লজ্জভাবে গর্ভবতী নারীসহ গণহারে সাধারণ লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখে পাহাড়ি জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোরন চলবে।  

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে গ্ৰেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বম জাতিসত্তাসহ সকল জাতিসত্তার ওপর অন্যায় দমন-পীড়ন বন্ধ করার দাবি জানান।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments