""

বান্দরবানে গণগ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ

বান্দরবানের গণগ্রেফতার বন্ধের দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: সিএইচটি নিউজ 

লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবানে যৌথ অভিযানের নামে গণগ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং ব্যাংক ডাকাতির সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে তিন সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল ২০২৪) সকাল ১০টায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখাসমূহের যৌথ উদ্যোগে উপজেলার বাইন্যাছোলা সাঁওতাল পাড়া এলাকায় এক বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। পরে সেখানে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সহ-সভাপতি রুপন্ত চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এলি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রুপান্ত চাকমা ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সভাপতি জয় চাকমা।

বান্দরবানের গণগ্রেফতার বন্ধের দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে সমাবেশ করে তিন সংগঠন। ছবি: সিএইচটি নিউজ 


বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে আজ শাসকগোষ্ঠি কারাগারে পরিণত করে রেখেছে। সংখ্যালুঘু জাতিসত্তাদের উপর নিপীড়ন নির্যাতন শুধু আজকের ঘটনা নয়। সেনাবাহিনী কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় এ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ জুম্মো জনগণকে ভয়-ভীতির মধ্যে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।

তারা বান্দরবানে চলমান গণগ্রেফতারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সেখানে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের নামে বম জাতিসত্তার সাধারণ জনগণের উপর অবর্ণনীয় নিপীড়ন চালাচ্ছে। নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে, নারী, শিশু, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবসহ সাধারণ মানুষকে। ইতিমধ্যে ৭০ জনের অধিক নারী-পুরুষ, শিশুকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গর্ভবতী নারী থেকে শুরু করে দুধের শিশুও রয়েছে। শুধু তাই নয়, ৫ কেজির অধিক চাল ক্রয়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়েও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না।

বক্তারা বলেন, রুমা ও থানচিতে নাটকীয় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার না করে যৌথ বাহিনী সাধারণ নিরপরাধ লোকজনকে গ্রেফতার করে নিজেদের লজ্জা ঢাকতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাগুলোর কোন নিরাপত্তা নেই। দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ন্যায় নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। দিন দিন এই নিপীড়নের মাত্রা বেড়েই চলেছে। নিরাপত্তার নামে যারা যে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো পাহাড়ে নিয়োজিত রয়েছে তারাই আজ পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে হিংস্র রূপ ধারণ করেছে।

বক্তারা বান্দরবানে বম জাতিসত্তার সাধারণ জনগণের ওপর গণগ্রেফতারসহ নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে আটককৃত নিরপরাধ লোকদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি, গণগ্রেফতারসহ নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments