""

বান্দরবানে গণগ্রেফতার-হয়রানির প্রতিবাদে নান্যাচরে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ


নান্যাচর প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবানে যৌথ অভিযানের নামে গণগ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটির নান্যাচর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল ২০২৪) বিকাল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের নান্যাচর উপজেলা শাখার সভাপতি প্রিয়তন চাকমা।

পিসিপি’র নান্যাচর উপজেলা শাখার সদস্য সুপন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক বিন্দু চাকমা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য রিপন চাকমা, রাঙামাটি জেলা শাখার অর্থসম্পাদক জিমিত চাকমা, নান্যাচর উপজেলা শাখার সভাপতি সুমেত চাকমা ও এলাকার বিশিষ্ট মুরুব্বি সুবিলাল চাকমা। এছাড়া হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নান্যাচর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পূজা চাকমাও উপস্থিত ছিলেন।

সমাাবেশে বিন্দু চাকমা বলেন, সম্প্রতি বান্দরবানে বম জাতিসত্তার জনগণের ওপর যে বর্বরতা চালানো হচ্ছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে হার মানাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে তা বন্ধ করা ও জিনিসপত্র ক্রয়ের ওপর আরোপিত বাধা-নিষেধ তুলে নেয়ার দাবি জানান।


রিপন চাকমা বলেন, বান্দরবানে যৌথ অভিযানের নামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী বম জাতিসত্তার সাধারণ জনগণের ওপর যে গণগ্রেফতার ও মিথ্যা মামলায় শিশু সন্তানসহ নারীদের জেলে পাঠাচ্ছে তা জাতিসত্তা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তিনি অবিলম্বে বম জাতিসত্তার জনগণের ওপের যে নির্যাতন জেল জুলুম চালানো হচ্ছে তা বন্ধ করে বাংক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

তিনি বম জাতিসত্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় জুলুম নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আগামীকাল (২৫ এপ্রিল) রাঙামাটি জেলায় ইউপিডিএফের ডাকা অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

জিমিত চাকমা বলেন, বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির নাটক সাজিয়ে বম জাতিসত্তার ওপর অমানবিক নির্যাতন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আজ পর্যন্ত ২১ জন নারীসহ ৭১ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কয়েকজন নারীর সাথে তাদের নাবালক ও দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তানও রয়েছে। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নিরীহ লোকজনকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।

সুমেত চাকমা বলেন, বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে যৌথ অভিযানের নামে যেভাবে বম জনগোষ্ঠির নিরীহ নারী-পুরুষ-শিশুদের গ্রেফতারত করা হচ্ছে তা নজিরবিহীন। নিজেদের দুর্বলতা আড়াল করতে রাষ্ট্রীয় বাহিনী সাধারণ জনগণের ওপর দায় চাপাচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এমন নিপীড়ন চলতে পারে না। অবিলম্বে বম জাতির ওপর চলা নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

সুবিলাল চাকমা বলেন, পাহাড়ে একের পর এক নাটক সাজিয়ে জুম্মদের উপর জুলুম চালানো হচ্ছে। কেএনএফ নির্মূলের নামে বম জাতিসত্তাদের জনগণের ওপর সীমাহীন বর্বরতা চালানো হচ্ছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশুরাও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পাহাড়িদের জন্মলগ্ন থেকে সেনা কবলের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সভার সভাপতি প্রিয়তন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখে জুম্ম জনগণের ওপর পাকিস্তানী হানাদারদের কায়দায় নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নিরাপত্তার নামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামকে কারাগারে পরিণত করেছে। বম জাতিসত্তাকে নির্মূলের যে ষড়যন্ত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ কখনো বরদাস্ত করবে না।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments