""

খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর ব্যাপক অভিযান, ঘরবাড়ি তল্লাশিসহ নানা হয়রানির অভিযোগ

খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানের চিত্র। সংগৃহিত ছবি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

জেএসএস সন্তু গ্রুপের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে কথিত “অপহরণের” শিকার হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের নামে খাগড়াছড়িতে চলছে সেনাবাহিনীর ব্যাপক অভিযান।

গত ১৬ এপ্রিল বিকাল থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।

অভিযানকালে সাধারণ লোকজনের ঘরবাড়ি তল্লাশি, গাড়ি আটকিয়ে তল্লাশিসহ নানা হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত বুধবার (১৬ এপ্রিল ২০২৫) বিকালের দিকে হঠাৎ করে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ৫ শিক্ষার্থীকে (যারা সবাই তাদের ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত) খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে ‘অপহরণের” অভিযোগ করে এবং এর জন্য ইউপিডিএফকে দায়ি করে। আর বিভিন্ন মিডিয়া দ্রুত এ খবরটিকে লুফে নেয় ও ছড়িয়ে দেয়। যদিও ইউপিডিএফ শুরু থেকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এরপর বিকাল থেকে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। তারা শিবমন্দিরসহ আশে-পাশের এলাকায় অভিযান চালাতে থাকে।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়া, মধুপুরসহ আশে-পাশে এলাকায় কর্ডন দিয়ে পুলিশসহ সেনাবাহিনীকে অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়। এ সময় তারা ঘরবাড়ি ও গাড়িতে তল্লাশি পরিচালনা করে বলে জানা গেছে।

এরপর বিকালে দক্ষিণ খবংপুজ্জে এলাকায় অভিযান চালানোর তথ্য পাওয়া যায়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এদিকে, আজ (১৯ এপ্রিল) ভোর থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের সুরেন্দ্র মাষ্টার পাড়া, হেডম্যান পাড়া এলাকায় ব্যাপক সেনাবাহিনী উপস্থিতি ও ঘরবাড়ি তল্লাশি চালানোর খবর পাওয়া গেছে।

খাগড়াছড়ি ছাড়াও গতকাল রাঙামাটির কুদুকছড়ি এলাকায়ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তারা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালায়। অপরদিকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কেও তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে সেনাবাহিনী-পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

অভিযানকালে সাধারণ জনগণের ঘরবাড়িতে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে জনগণকে নানা হয়রানি করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী লোকজন অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, সেনাবাহিনীর ব্যাপক অভিযান সত্ত্বেও “অপহৃত” শিক্ষার্থীরা এখনো উদ্ধার না হওয়ায় জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে উক্ত ৫ শিক্ষার্থী কী আসলে অপহরণের শিকার হয়েছেন, নাকি আত্মগোপনে রয়েছেন? ‍কারণ তারা বাঘাইছড়িতে বিঝু উৎসবে যোগ দেয়ার নাম করে সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে মিলিত হয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র মতে, জেএসএস সন্তু গ্রুপ রাষ্ট্রীয় একটি বিশেষ মহলের সাথে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে খাগড়াছড়িতে কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যেই শিক্ষার্থী ‘অপহরণ’ ঘটনা সাজানো হয়েছে কি-না সে প্রশ্ন উঠছে সচেতন মহলে।

সচেতন মহল বলছেন, অতীতে স্বনির্ভর বাজারের মতো জনসমাগম স্থানে প্রকাশ্যে দিবালোকে ব্রাশফায়ারে ছাত্র-যুব নেতাসহ ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় কোন বাহিনীর তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। অপরাধীরা প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরলেও তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু এখন একটি পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় যৌথ বাহিনী যেভাবে তৎপরতা শুরু করেছে, অভিযান পরিচালনা করছে তা রীতিমত সন্দেহজনক।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







Post a Comment