কাউখালি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খাগড়াছড়ির গুইমারায় সেনা-সেটেলার কর্তৃক রামেসু বাজারে জুম্ম (মারমা) বসতি
ও দোকানপাটে হামলা, গুলি করে খুন, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবং হামলাকারী-খুনীদের
গ্রেফতার ও সিঙ্গিনালায় সেটলার কর্তৃক কিশোরীকে গণধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাঙামাটির
কাউখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে চার সংগঠন।
“সেনা সন্ত্রাসী-সেটলার-ঠ্যাঙাড়ে লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না”
শ্লোগাানে হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম যৌথভাবে এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বেলা ২:৩০টার সময় কাউখালীর ডাবুয়া এলাকার
ধুপছড়ি পোড়া বাজার থেকে মিছিলে বের করে বৃন্দাবন রাস্তায় সমাবেশ করা হয়। এতে ডাবুয়ার
বিভিন্ন এলাকা থেকে দুই হাজারের অধিক ছাত্র জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এতে
আশেপাশে এলাকার যুবক-যুবতীরা সমাবেশে আসা লোকজনদের লেবুর শরবত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালি উপজেলার সভাপতি থুইনুমং মারমার
সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কাউখালি উপজেলার সহ-সভাপতি নন্দা
চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী উপজেলা সভাপতি জিপল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম
নারী সংঘের বেতবুনিয়া ইউপি শাখার সভাপতি উবাইচিং মার্মা। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য
রাখেন এলাকার মুরুব্বী অংসাজাই মার্মা ও ইউপিডিএফ'র
বৃহত্তর ডাবুয়ার প্রতিনিধি অভি মার্মা।
বক্তারা বলেন, খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালায় মারমা কিশোরীকে গণধর্ষণে জড়িত সকলকে
গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে জুম্ম ছাত্র জনতার আহ্বানে গতকাল গুইমারায় শান্তিপূর্ণ অবরোধ
পালনকালে সেনাবাহিনী ও তাদের পোষ্ঠ্য সেটলার-ঠ্যাঙাড়েরা ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়ে
তিন জনকে হত্যা ও অসংখ্য মানুষকে জখম করেছে। হামলাকারীরা অগ্নিসংযোগ করে রামেসু বাজারের
মারমাদের দোকানপাট, বসতবাড়ি ও মোটর সাইকেল পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। বক্তারা এই হামলা,
হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বক্তারা গত বছর ১৯-২০ সেপ্টেম্বর দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি সদর ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক
হামলা, জুনান-রুবেল-ধনরঞ্জন ও অনিকের হত্যার বিচার না হওয়ায় সেনা-সেটলাররা আবারো গুইমারায়
এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও হামলা চালাতে সাহস পেয়েছে।
বক্তারা ড. ইউনুস সরকারের উদেশ্য করে বলেন, ‘আপনি যদি হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট
হতে না চান তাহলে পাহাড়ে অন্যায়-অবিচার, হামলা, হত্যাকাণ্ড বন্ধ করুন। ধর্ষণের বিচার
করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষকদের বিচার হচ্ছে না বলে বার বার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি
হচ্ছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে গুইমারায় হামলা, খুন ও অগ্নিসংযোগের সাথে
জড়িত সেনা সেটলারদের গ্রেফতার, নিহতদের পরিবার ও অগ্নিংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ
প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সিঙ্গিনালায় মারমার কিশোরীর ধর্ষকদের
সকলকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম
থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহারের দাবি জানন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।