নিহতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাত
![]() |
প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলছেন। |
খাগড়াছড়ি ও গুইমারা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি ও বাম সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি তথ্যানুসন্ধান
প্রতিনিধি দল খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর সেনা-সেটলার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত
রামসু বাজার পরিদর্শন করেছেন এবং সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেছেন।
পরিদর্শন দলের নেতৃবৃন্দ গতকাল (৮ অক্টোবর) রাতে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে
রওনা দেন। খাগড়াছড়িতে পৌঁছে তারা সিঙ্গিনালায় ধর্ষণের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী মারমা কিশোরী ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেন।
প্রতিনিধি দলটি স্বনির্ভর বাজারও পরিদর্শন করে জনগণের কাছ থেকে তথ্য নেন। তারা ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথেও কথা বলেন।
এরপর প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের সাথে সাক্ষাত করে মতবিনিময় করেন। তারা সিভিল সার্জনের সাথেও সাক্ষাত করে কিশোরী ধর্ষণের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।
পরে তারা গুইমারার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গুইমারায় পৌঁছেন।
গুইমারায় প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ রামসু বাজারে সেনা-সেটলার হামলার নিহত থৈইচিং মারমা'র বাবা হলাচাই মারমা, নিহত আখ্র মারমা'র মা ক্রাসং মারমা ও নিহত আথুইপ্রু মারমার স্ত্রী নুনু মারমার (ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা) সাথে কথাবার্তা বলেন এবং শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন প্রতিনিধি দলের সামনে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা
দেন। নেতৃবৃন্দ তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
এছাড়া তারা আহত কয়েকজনের সাথেও কথা বলেন। আহত উহ্লাপ্রু মারমার গুলিবিদ্ধ
ক্ষতচিহ্ন দেখেন ও সমবেদনা জানান।
প্রতিনিধি দলটি অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত রামসু বাজারও পরিদর্শন করেন।
![]() |
প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলছেন। |
প্রতিনিধি দলটিতে ছিলেন- ১. ডা. হারুন অর রশিদ, ২. মোশরেফা মিশু, সাধারণ
সম্পাদক গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ৩. আবদুল্লাহ আল কাফী, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের
কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ৪. নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য,
বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট লীগ, ৫. রজত হুদা, ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক, জাতীয় গণফ্রন্ট, ৬. সায়েদুল
হক নিশান, সমন্বয়ক, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, ৭. মারজিয়া প্রভা, এক্টিভিস্ট, ৮. বজরুল
রশিদ ফিরোজ, সমন্বয়কারী, বাম জোট,
ঢাকায় ফিরে তাদের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তথ্যানুসন্ধানের বিস্তারিত তুলে
ধরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের বিচার ও
সকল ধর্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র জনতার আহ্বানে গুইমারার রামসু বাজার এলাকায়
স্থানীয় ছাত্র জনতা সড়ক অবরোধ পালন করলে সেনা-সেটলাররা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে
সেনাদের গুলিতে তিন জন মারমা যুবক নিহত হন এবং অর্ধশত আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকের
জখম গুরুতর, যারা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া সেটলাররা রামসু বাজার ও আশেপাশের পাহাড়িদের
বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এতে অন্তত ৮৪ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।