![]() |
| খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার হাসান মাহমুদ। |
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
পানছড়িতে খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার হাসান মাহমুদের ইউপিডিএফ নির্মূলের
ঘোষণাকে চূড়ান্ত রকমের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও মিলিটারি ফ্যাসিজমের ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত
বলে মন্তব্য করে ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা বলেন, এতে সেনাতন্ত্রের মুখোশ
খুলে পড়েছে।
আজ ২৯ সেপ্টেম্বর, শনিবার সিএইচটি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই মন্তব্য
করেন। ব্রিগেড কমান্ডারের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাহাড়িদের
ওপর সাম্প্রদায়িক হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা ঢাকতে ও জুম্ম জনগণকে নেতৃত্বহীন করতে পার্বত্য
চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ইউপিডিএফকে বলীর পাঁঠা বানাচ্ছে।’
ইউপিডিএফ নেতা বলেন, পানছড়ি তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম উর্দিধারী কোন পদস্থ
আমলার খাস তালুক নয়, ‘দিনকে রাত রাতকে দিন বানানোর’ অরাজকতা এলাকাবাসী তথা পাহাড়ি ও
পুরোনবস্তী বাঙালি জনগণ মেনে নেবে না। এখানে দম্ভ করে ইউপিডিএফ নেতাদের না রাখার ঘোষণা
বাংলাদেশ সংবিধানের পরিপন্থী।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর ২০২৫) পানছড়ির ২ নং চেঙ্গী ইউনিয়নের তারাবন
এলাকায় কিছু মুরুব্বী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার ‘পানছড়িতে
‘ইউপিডিএফ নির্মূল করা হবে, ইউপিডিএফের কাউকে পানছড়িতে রাখা হবে না’ বলে ঘোষণা দেন।
বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক মুরুব্বী এই প্রতিবেদককে জানান, ব্রিগেডিয়ার
হাসান মাহমুদ কম্বল বিতরণের নামে সেখানে যান। এ সময় ডিজিএফআই-এর (কর্নেল জিএস) কর্ণেল আতিকুর রহমান, খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. খাদেমুল ইসলাম, লোগাং ৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ রবিউল ইসলামসহ এলাকার কিছু মুরুব্বী ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত
ছিলেন।
তবে এলাকার লোকজন কম্বল নিতে ও মিটিং-এ অংশগ্রহণ করতে অপরগতা প্রকাশ করলে
সেনা সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু লোককে জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে সেখানে নিয়ে
যায়। তাদের জমায়েত করা লোকজনের সংখ্যা ৫০/৬০ জন হতে পারেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পরে জমায়েত করা লোকজনের হাতে কম্বল বিতরণের পর উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের
সামনে ব্রিগেড কমান্ডার হাসান মাহমুদ হুমকি দিয়ে বলেন, ‘পানছড়িতে ইউপিডিএফ নির্মূল
করা হবে এবং ইউপিডিএফের কাউকে পানছড়িতে রাখা হবে না।’
এ সময় তিনি এমন হুমকিও দেন যে, ‘ইউপিডিএফের লোকজনকে হয় অস্ত্রসহ তাদের কাছে
সারেন্ডার করতে হবে। অন্যথায় সেনাবাহিনীর গুলিতে কিংবা জেএসএসের গুলিতে মরতে হবে।’
তিনি উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে ইউপিডিএফ নেতা আইচুক, সুমেন, আদি ও অংগ্য
মারমার নাম উল্লেখ করে তাদেরকে ধরিয়ে দেয়ার কথাও বলেছেন বলে জানা গেছে।
তবে দীর্ঘ ৩ মাস ধরে মাচ্ছোছড়ায় অবস্থান করা জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র
সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে তিনি কোন কথা বলেননি।
পরে মিটিং শেষে তারা পানছড়ি সদরের দিকে চলে যায়।
এর আগে আজ সকাল ৬ টার সময় ২০-২৫ জনের সেনা সদস্য পায়ে হেঁটে তারাবন এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার সময় ১০টি গাড়ি যোগে খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, ডিজিএফআই-এর (কর্নেল জিএস) কর্ণেল আতিকুর রহমান, খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. খাদেমুল ইসলাম, লোগাং ৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার (জি–টু–আই) কাজী মোস্তফা আরেফিন, পানছড়ি সাব জোন কমান্ডার মেজর রিফাত সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন।
এদিকে, সেনা সদস্যরা ধুদুকছড়ায় টহল দেয়ার সময় জেএসএস সন্তু গ্রুপের ৫৫ জনের
একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল শ্রীকুণ্ঠিমাছড়া এলাকায় বিচরণ করে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
