![]() |
| ভুক্তভোগী রাজন চাকমা। |
বর্মাছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কলাবুনিয়া
গ্রামে সেনা অভিযানকালে গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ আটক রাজন চাকমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে
খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে তাকে খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলার
বর্মাছড়ি ইউনিয়নের উল্টাছড়ি থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তার আটকের খবর সিএইচটি নিউজে প্রকাশ করা হয়েছিল।
ভুক্তভোগী রাজন চাকমা কলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম শান্তি
কুমার চাকমা। বর্তমানে তিনি বর্মাছড়ি বাজার এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। তবে
কাজের প্রয়োজনে তিনি পরিবার নিয়ে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করে থাকেন।
তার মা-বাবা থাকেন বর্মাছড়িতে।
ঘটনার দিন তিনি বর্মাছড়ির বাড়ি থেকে তার সৃজিত বাগান-বাগিচা দেখতে কলাবুনিয়ায়
পুরাতন বাড়িতে গেলে সেনারা তাকে আটক করে। এরপর তার আটকের খবর পেয়ে তার মা মিলনা দেবী
চাকমা গত ২৫ ডিসেম্বর সকালে কলাবুনিয়ায় অবস্থানরত সেনাদের কাছে গেলেও তাকে আটকের বিষয়ে
অস্বীকার করে থানায় খোঁজ নিতে বলা হয়। থানায় খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে পরিবারের
লোকজন খুবই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন।
ভুক্তভোগীর বরাতে জানা গেছে, সেদিন (২৪ ডিসেম্বর) তিনি বর্মাছড়ি থেকে কলাবুনিয়ায়
তার পুরাতন বাড়িতে গেলে সেখানে একদল সেনা সদস্যকে দেখতে পান। এরপর সেনারা তাকে আটক
করে হেফাজতে নিয়ে রাখে। সেদিন রাতে তাকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিয়ে দিয়ে কলাবুনিয়া স্কুলে
রাখে। পরদিন (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার সময় তাকে বর্মাছড়ির উল্টাছড়িতে অবস্থানকারী সেনাদের
একটি টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে উল্টাছড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, এর
আগে লক্ষীছড়ি সেনা জোন থেকে ৭০ জনের একটি সেনা দল উল্টাছড়ি গ্রামে নির্মিত একটি বৌদ্ধ
বিহারের জায়গায় অবস্থান নিয়েছিল।
সেদিন (২৫ ডিসেম্বর) রাতে সেনাদের হেফাজতে উল্টাছড়িতে রেখে পরদিন (২৬ ডিসেম্বর)
সকাল ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাকে শারীরিকভাবে কোন নির্যাতন বা খারাপ আচরণ
করা হয়নি বলে তিনি জানান।
একজন নিরীহ ব্যক্তি হিসেবে তাকে আটক করে হেফাজতে নেয়ার ঘটনায় সেনাদের দুই
গ্রুপের (লক্ষীছড়ি ও ঘাগড়া) মধ্যেও কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় বলে তথ্য পাওয়া
গেছে। কারণ, লক্ষীছড়ির সেনা দলটিতে থাকা একজন রাজন চাকমাকে চিনতেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাঙামাটির ঘাগড়া চাম্পাতলী আর্মি ক্যাম্প
থেকে ৮০ জনের একদল সেনা সদস্য ন’ভাঙা গ্রামে যায়। সেখানে রাত যাপন করে পরদিন (২৪ ডিসেম্বর)
ভোর ৪টার দিকে সেনারা কলাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে অবস্থান নেয়।
রাজন চাকমাকে আটক ছাড়াও সেদিন সেনারা বিদর্শ চাকমা (২৮), পিতা- মেরু চাকমা’র
বাড়ির দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে সংগৃহিত কাঁচা তরিতরকারী, চাউল, হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে যায় বলে
অভিযোগ রয়েছে।
সেনাদের সাথে ৪ জন ঠ্যাঙাড়ে (মুখোশ) সদস্যকে দেখা গেছে বলে গ্রামবাসীরা
জানিয়েছিলেন।
পরে ২৬ ডিসেম্বর সকালে সেনারা সেখান থেকে ক্যাম্পে ফিরে যায় বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, ২৫ ডিসেম্বর লক্ষীছড়ি সেনা জোন থেকে ৭০ জনের একটি সেনা দল বর্মাছড়ি
ইউনিয়নের উল্টাছড়ি গ্রামে গিয়ে সেখানে নির্মিত একটি বৌদ্ধ বিহারের জায়গায় অবস্থান নেয়।
গতকাল (২৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ওই সেনাদলটি সেখানে অবস্থান করছিল।
এদিকে, বর্মাছড়ি বাজারের পাশে শান্তি কুমার চাকমার লিচু বাগানে ৪০ জনের
একটি সেনা দল বেশ কয়েকদিন ধরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
