""

খাগড়াছড়িতে ৭ খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ১২ ছাত্র-নারী-যুব সংগঠন


ঢাকা, সিএইচটি নিউজ ।।
 দেশের ১২ ছাত্র-নারী-যুব সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে গত ১৮ আগস্ট ২০১৮ খাগড়াছড়িতে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সশস্ত্র দুর্বৃত্ত কর্তৃক পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা তপন চাকমা, এল্টন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা পলাশ চাকমাসহ ৭ জনকে খুনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং অনতিবিলম্বে খুনীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন।

নেতৃবৃন্দ এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় উল্লেখ করে বলেন, ধারাবাহিকভাবে পাহাড়ে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটছে কিন্তু কোনো হত্যাকাণ্ডেরই বিচার হচ্ছে না, এই বিচারহীনতার কারণে দুর্বৃত্ত ও খুনী-সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়িয়ে তুলেছে। রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতেই পার্বত্য চট্টগ্রাম বারবার রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে। আজকে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। সরকার সারাদেশের মতো পাহাড়ে চলমান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে প্রকারান্তরে খুনী-সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে। সমস্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, খাগড়াছড়ির সাত খুনসহ সকল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ গত ১৮ মার্চ রাঙামাটিতে সংঘটিত বহুল আলোচিত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাক অপহরণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, পাহাড়ে অঘোষিত সেনা শাসন জারি থাকলেও অপহরণকারী, খুনী-সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে অপরাধ সংঘটিত করে চলেছে। মন্টি-দয়াসোনার অপহরণকারীদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। খুনী-সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে রাষ্ট্র চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয়দাতা।
নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামে অপরাধ সংঘটনে স্থানীয় দুর্বৃত্তদের মদদ দেয়ায় সেনাবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থাসমূহের কঠোর সমালোচনা করেন এবং সরকারকে অনতিবিলম্বে খুনী-দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরুপা চাকমা, পিসিপির সভাপতি বিনয়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি পারভেজ লেলিন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি সাঈদ বিলাস, ছাত্র ঐক্য ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক সরকার আল ইমরান, সিপিবি নারী সেলের আহবায়ক লক্ষী চক্রবর্তী, নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ, বিপ্লবী নারী মুক্তির আহবায়ক নাসিমা নাজনীন ও বিপ্লবী নারী ফোরামের  আমেনা আক্তার ।
উল্লেখ্য, গত ১৮ আগস্ট ২০১৮, সকাল ৮ টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে পুলিশ পোষ্ট ও বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরের সন্নিকটে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি তপন চাকমা, সহ সাধারণ সম্পাদক এল্টন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সহ-সভাপতি পলাশ চাকমাসহ ৬ জনকে এবং স্বনির্ভরের অদূরে পেরাছড়ায় এলাকাবাসীর মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের শিকার ৭ জনের মধ্যে ৪ জনই এলাকার সাধারণ গ্রামবাসী। এর মধ্যে একজন প্রকৌশলী ও একজন সরকারি কর্মচারী(উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী) রয়েছেন।




0/Post a Comment/Comments