""

সাজেক ও বাঘাইছড়িতে সেনাবাহিনীর আয়োজিত চুক্তির বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে লোকজনকে জোরপূর্বক অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ

 সাজেক ও বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ও বাঘাইছড়ি সদর এলাকায় পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে সেনাবাহিনী তাদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাকার লোকজনকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে অংশগ্রহণে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গতকাল ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উপুলক্ষে সেনাবাহিনী বাঘাইহাট জোনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানে লোকজনকে অংশগ্রহণ করাতে ভোর থেকে সেনাবাহিনী সাজেকের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। তারা উজো বাজার, করল্যাছড়ি,  কিয়েংঘাট, মাচালং বাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নানা কাজে বের হওয়া লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে জোর করে গাড়িতে তুলে বাঘাইহাট জোনে তাদের অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়।

বাঘাইছড়ি সদর এলাকায়ও সেনারা একই অবস্থা  করেছে বলে জানা গেছে। সেখানে সকালে উপজেলার বঙ্গলতলি ইউনিয়নের নুয়ো দোকান, বটতলা, করেঙ্গাতলি বাজারসহ কয়েকটি স্থানে লোকজনের চলাচলের গাড়ি থামিয়ে জোরপূর্বকভাবে ক্যাম্পে তাদেরকে চুক্তি বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানোর জন্য ক্যাম্পে নিয়ে যায়। করেঙাতলি বাজার থেকে বাঙালি ব্যবসায়ীদেরও ক্যাম্পে নেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

সেনাদের এমন আচরণ থেকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও রেহাই পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই বিষয়ে উজো বাজার এলাকার এক মুরু্ব্বী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি গতকাল সকালে চা-নাস্তা করতে বাজারে গেলে আমাকে জোরপুর্বকভাবে গাড়িতে তুলে জোনের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনাবাহিনীর এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, যে চুক্তি ২৫ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি সে চুক্তি দিবসের আনন্দ অনুষ্ঠানে জনগণকে জোরপূর্বক অংশগ্রহণ করানো জনগণের সাথে প্রতরাণা ও তামাশা করা ছাড়া কিছুই নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক জনপ্রতিনিধি বলেন, আসলে পার্বত্য চট্টগ্রামে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। গতকাল সেনাবহিনী জনগণের সাথে যে আচরন করেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ কাউকে জোর করে চুক্তি বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করিয়ে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃত শান্তি স্থাপন করতে হলে অন্যায়-অবিচার, দমন-পীড়ন ও জোরজবরদস্তিমূলক কাজকর্ম বন্ধ করতে হবে এবং জনগণের ন্যায্য দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে।  

এদিকে, এলাকার কার্বারী ও মুরুব্বীদের মধ্যে যারা নানা কারণে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি তাদেরকে বাঘাইহাট জোন থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 





0/Post a Comment/Comments