""

বরকলে বিজিবি কর্তৃক সেনাবাহিনীর পোষ্য একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আটক, অতঃপর... (ভিডিও)

বিজিবি হাতে আটকের সময় সন্ত্রাসীরা। পরে সেনাবাহিনীর নির্দেশে বিজিবি তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বলে জানা যায়। ছবি ভিডিও থেকে নেয়া।

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৫ মে ২০২৪

গতকাল শনিবার (৪ মে ২০২৪) বিজিবি ও স্থানীয় লোকজন কর্তৃক কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে আটকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা গেছে, বিজিবি সদস্যসহ কিছু লোক একটি ট্রলার থেকে ভারী অস্ত্র-সরঞ্জাসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে বের করে আনছে।

বিজিবি সদস্য ও লোকজন যখন তাদের অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম কেড়ে নিচ্ছে তখন সন্ত্রাসীদের বলতে শোনা যায় “আমরা সেনাবাহিনীর অনুমতি নিয়ে এসেছি’। তাদের এ কথার জবাবে অপরদিক থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘চুপ একদম চুপ, কেউ কোন কথা বলবে না’। এ সময় সন্ত্রাসীদেরকে হাত উপরে তুলে দাঁড়াতে দেখা যায়।

সন্ত্রাসীদের কথায় প্রমান হয় যে, সেনাবাহিনীই তাদেরকে সেখানে পাঠিয়েছে।

ঘটনাটি রাঙামাটির বরকলের এরিবুনিয়া বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় বলে জানা গেছে।

আর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ছিল সেনাবাহিনীর পোষ্য ‘নব্যমুখোশ বাহিনীর’ সদস্য।

 এ দু’জনের মধ্যে একজন নব্যমুখোশ সন্ত্রাসী তিলক চাকমা মিশর (লাল টিক চিহ্ন) ও প্রবেশ চাকমা (গোল চিহ্ন) বলে ‍নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সন্ত্রাসীদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলো- তিলক চাকমা (মিশর), পিতার নাম সমীরণ চাকমা, গ্রাম- দেওয়ান পাড়া, ভাইবোন ছড়া ইউপি, খাগড়াছড়ি; রূপায়ন চাকমা (উত্তরণ), পিতা- আদে রঞ্জন চাকমা গ্রাম- মাচ্চে পাড়া, বন্দুকভাঙা, রাঙামাটি (বর্তমানে তেঁতুলতলা, খাগড়াছড়ি; জাগরণ চাকমা, গ্রাম- গুইছড়ি, সাপছড়ি ইউপি, রাঙামাটি; প্রবেশ চাকমা (সে সশস্ত্র গ্রুপটির কমাণ্ডার); সবিনয় চাকমা, গ্রাম পানছড়ি, খাগড়াছড়ি।

জানা গেছে, আটকের পর পরই সেনাবাহিনীর নির্দেশে বিজিবি সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

এই সন্ত্রাসীর নাম জাগরণ চাকমা। তার কাছ থেকে বিজিবির জনৈক সদস্য গুলির ব্যাণ্ডেলিয়ার খুলে নেয়। 

জানা যায়, সন্ত্রাসীরা বরকল উপজেলার আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকারি দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তারের জন্য সশস্ত্র অবস্থায় বরকলে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে পথে এরিবুনিয়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদেরকে আটক করে। কিন্তু সেনাবাহিনীর পোষ্য সন্ত্রাসীদের কী আর আটক করা যায়! অতঃপর সেনাবাহিনীর নির্দেশে বিজিবি বাধ্য হয়েছে সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দিতে!

গোলচিহ্নিত ব্যক্তি সন্ত্রাসী উত্তরণ চাকমা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এই হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি। সেনাবাহিনী সাধারণ লোকজনকে বিনাকারণে গ্রেফতার করে ‘অস্ত্র’ গুজে দিয়ে ‘সন্ত্রাসী’ সাজিয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন, হয়রানি করে, অথচ তারাই সশস্ত্র নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করে। কী সেলুকাস! কী বিচিত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা!

উল্লেখ্য, উক্ত সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে সুবলং বাজারে সেনাবাহিনীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অবস্থান করে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। মূলত সেনাবাহিনীই এই সন্ত্রাসীদের সেখানে নিয়োজিত রেখেছে।

বিগত ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনী এই নব্যমুখোশ বাহিনী গঠন করে দেয়। এরপর তাদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় সেনা ক্যাম্পের আশে-পাশে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়োজিত রেখে খুন-খারাবির কাজে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তারা ইউপিডিএফর নেতা-কর্মীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ হত্যা করেছে, অসংখ্য অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।

* সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও:





সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments