রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
খাগড়াছড়ির রামগড়ে ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ রুইখই মারমা (অংছাইন)-এর ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (২
অক্টোবর ২০২৩) সকাল ১১টায় ইউপিডিএফের রামগড় উপজেলা ইউনিট এই স্মরণসভার আয়োজন করে।
”তিনিই শ্রেষ্ঠ
যিনি জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ
করেন” এই শ্লোগানে আয়োজিত স্মরণসভায় ইউপিডিফের রামগড় উপজেলা ইউনিটের সংগঠক নিটুন চাকমার
সভাপতিত্বে ও অংশি মার্মা সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রামগড় উপজেলা
শাখার সভাপতি জার্মেন্ট ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রামগড় উপজেলা শাখার সাংগঠনিক
সম্পাদক তৈমাং ত্রিপুরা ও সাবেক মেম্বার বেলক্ক চাকমা।
সভা শুরুতে শহীদ
রুইখই মার্মাসহ এযাবৎ
পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী
সকল শহীদের উদ্দেশ্যে ১মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠা হলে রুইখই মারমা এতে যোগ দিয়ে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ইউপিডিএফের সাথে যুক্ত থেকে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন বেগবান করার কাজে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। পাহাড়িদের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে এবং ভূমি ও মা-বোনের ইজ্জত রক্ষার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে মানিকছড়ি, রামগড়, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, লক্ষ্মীছড়ি এলাকায় ভূমি বেদখল রোধ করতে তিনি জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন। যার কারণে তিনি শাসকগোষ্ঠির তথা সেনাবাহিনীর মূল টার্গেটে পরিণত হন। লক্ষ্মীছড়ি সেনা জোনের তৎকালীন কমাণ্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শরিফুল ইসলাম কর্তৃক সৃষ্ট সিএইচটিএনএফ (বোরখা পার্টি) নামধারী সন্ত্রাসীদের দিয়ে ২০০৯ সালের ২ অক্টোবর রুইখই মারমাকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের আজ ১৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়নি। উপরন্তু পাহাড়ে অধিকার আদায়ে আন্দোলন দমনে প্রশাসন একের পর এক ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী সৃষ্টি করে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।
বক্তারা আরো বলেন, শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জিইয়ে রাখতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তদের মতো কিছু ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপকে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে খুন, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি গত ২৩ সেপ্টেম্বর সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি ফেরার পথে দীঘিনালায় হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী এন্টি চাকমাসহ তিন জনকে অপহরণের ঘটনা বলে দেয় এই সন্ত্রাসীরা কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শুরু তাই নয়, একই সাথে রাষ্ট্রীয় বাহিনী সরাসরি ধর্ষণ, ভূমি বেদখলসহ নানা অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়েছে। রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে এ মাসের ৩ তারিখ ৬ সেনা সদস্য দ্বারা এক মারমা কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের পুনর্বাসন করে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বক্তারা শহীদ রুইখই মারমার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য এবং সরকারের জুম্ম ধ্বংসের নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করতে ছাত্র, যুব সমাজসহ আপামর জনগণকে আন্দোলনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
স্মরণসভা থেকে
বক্তারা অবিলম্বে শহীদ রুইখই মার্মার হত্যার মদদদাতা লে. কর্নেল শরীফুল ইসলামসহ ঘটনায়
জড়িতদের আইনের আ্ওতায় এনে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সাথে তারা
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারের প্রতি
আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।