""

রাঙামাটিতে অবরোধ সফল করতে নারী সহযোদ্ধাদের সাহসী ভূমিকা


রিতা চাকমা
, সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, এইচডব্লিউএফ

রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকুছড়িতে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি করছেন ইউপিডিএফভূক্ত সংগঠনের নেতা-কর্মীরা

রাঙামাটিতে আজ (২৫ এপ্রিল ২০২৪) ইউপিডিএফ-এর আহূত আধাবেলার সড়ক অবরোধ সফল করতে সহযোগী সংগঠন এইচডব্লিউএফ'এর নারী সহযোদ্ধাদের ওপর দায়িত্ব অর্পিত হয় রাঙামাটি টু খাগড়াছড়ি সড়কের ধর্মঘর ও কুদুকছড়ি বাজার এলাকায়। ভোর হতে না হতেই অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে নারী সহযোদ্ধারা বেরিয়ে পড়ে এবং মাইকিং করে প্রচারণা শুরু করে দেয়। অবরোধ শুরু হলে নারী সহযোদ্ধারা সরাসরি স্পটে গিয়ে পিকেটিং করে। পিকেটিং-এর শেষ পর্যায়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেনা দলটি হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি রিমি চাকমা ও তার সহযোদ্ধাদের ওপর মারমুখী হয় ও ঔদ্ধত আচরণ করে। রিমির নেতৃত্বে নারী কর্মীরা সেনাদের এ ধরনের আচরণের কড়া প্রতিবাদ জানায়। বান্দরবানে নিরীহ লোকজনের ওপর দমন-পীড়নের যৌক্তিকতা নিয়ে সেনা কর্মকর্তাকে প্রশ্নবানে জর্জড়িত করে। এক পর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা নারী কর্মীদের যুক্তিতে কুলিয়ে উঠতে না পেরে কিছুটা নমনীয়ও হতে বাধ্য হয়।

বাকবিতণ্ডার প্রথম দিকে রিমি ও তার দলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার জন্যে দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা সেল ফোনে কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ করে। তাতে নারী সহযোদ্ধারা ভয়ে কুঁকড়ে যায়নি। সাহসের সাথে সেনা কর্মকর্তার নিকট অবরোধের যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতা তুলে ধরে প্রতিবাদ জানায়। গ্রেফতারের প্রস্তুতি আঁচ করতে পেরে নারী যোদ্ধারা বুদ্ধি খাটিয়ে নিজেদের মোবাইলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে রেখে জেলে যাবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়। এ সময় পিকেটিং টিমের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এক নারী সহযোদ্ধা বলে ওঠে ‘পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও কোনো আপসোস নেই, আন্দোলনের জন্য জেলে যেতেও প্রস্তুত আছি’।

পিকেটিং টিমের প্রধান রিমি চাকমা একজন অভিজ্ঞ সংগ্রামী নেতার মতো  সাহসী ও বু্দ্ধিদীপ্ত উক্তি করেন, ‘এ ঘটনার কারণে জেলে যাওয়া একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াইয়ে অবতীর্ণ নারী সহযোদ্ধারা জেল-জুলুম মামলা-হুলিয়ায় ভীত নয়, অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদে তারা কোন কিছু পরোয়া করে না। আজকের অবরোধে নারী সহযোদ্ধাদের এ সাহসী ভূমিকা আন্দোলনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ির স্বনির্ভরে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ২৩ জন নারী সহযোদ্ধা বিজিবি’র লাঠিপেটার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নারী সহযোদ্ধাদের কাহিনী গুরুত্বের সাথে লিখিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। #



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments