""

চবিতে লংগদু গণহত্যার ৩৫ বছর উপলক্ষে আলোচনা সভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন


চবি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৫ মে ২০২৪

লংগদু গণহত্যার ৩৫ বছর উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

শনিবার (৪ মে ২০২৪) বিকাল ৫:৩০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন চত্ত্বরে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমার সঞ্চালনায় ও সভাপতি রোনাল চাকমা'র সভাপতিত্বে  আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা সুদেব চাকমা, পিসিপি'র চবি শাখার সদস্য অগ্নিগর্ভ চাকমাসহ প্রমুখ।

পিসিপি নেতা সুদেব চাকমা বলেন, ১৯৮৯ সালে ৪ঠা মে লংগদু গণহত্যা সংগঠিত হয়। গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল মিগিনী নদীর উর্বর উপত্যকা জোরপূর্বকভাবে দখল করা এবং জাতিগত নির্মূলীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। সেনা-সেটেলারদের দ্বারা সংঘটিত বর্বরোচিত এই গণহত্যায় কোলের শিশু থেকে বৃদ্ধদের হত্যা করা হয়। গণহত্যার ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলেও গণহত্যায় অভিযুক্ত তকালীন সেনা কর্মকর্তা মেজর জাকির হোসেনসহ কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি, হয় নি গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ। বরং ২০১৭ সালের ০২ জুন লংগদু উপজেলায় একই এলাকায় পুনরায় পাহাড়িদের শত শত ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়, করা হয় উদ্বাস্তু। আমরা অবিলম্বে গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে অভিযুক্ত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারকে আহ্বান জানাই।


সভাপতি রোনাল চাকমা বলেন, লংগদু গণহত্যার বিভীষিকাময় চিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে যখন আমরা গণহত্যার বর্ণনা পড়তে যাই এবং আমাদের বাপ-দাদাদের কাছ থেকে শুনতে পাই। লংগদুতে হৃদয়বিদারক বহু ঘটনা ঘটেছে। গণহত্যার সব থেকে হৃদয় বিদারক ঘটনা হয়েছে অনিল বিকাশ চাকমা চেয়ারম্যানের সাথে। সে সময় তিনি এরশাদ সরকারের তৈরি ট্রাইবাল কনভেনশনের নেতা হয়েও নিজ স্ত্রী-সন্তানদের রক্ষা করতে পারেননি। তাঁর বাড়িতে আশ্রয় নেয়া শিশু-বৃদ্ধদেরও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। চুক্তি পরবর্তী প্রজন্ম পাহাড়ে ২০টির অধিক বড় সাম্প্রদায়িক ঘটনা দেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখছে যৌথ অভিযানের নামে নিরপরাধ বম জাতিসত্তাদের উপর চলমান নিপীড়ন-নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা।

তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বজাতির উপর ঘটে যাওয়া দুর্যোগ-দুঃসময় আমরা ভুলে যেতে পারি না। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। ছাত্রদের রাজনৈতিক সচেতন হয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আরো যোগ করেন, হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানে পাহাড়ি জাতিসত্তার উপর চালানো নিপীড়ন গণহত্যার শামিল। ৫ কেজির অধিক চাল বহনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা, খাবারের উস নষ্ট করা, জুম চাষ করতে না দেয়া, বাজারে আসতে না দেয়া, গ্রামে গ্রামে গিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে নিরীহ বমদের হত্যা করা, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী দিয়ে এলাাকয় ত্রাস কার্যক্রম পরিচালনা, জোরপূর্বক দেশান্তরিত ও ধর্মান্তরিত করা তা জাতিসংঘের গণহত্যার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। আমরা অবিলম্বে চলমান যৌথ অভিযানের নামে নিরীহ নিরপরাধ বম জাতিসত্তাদের হত্যা, গ্রেফতার বন্ধ এবং আটককৃতদের মুক্তির দাবি জানাই।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







0/Post a Comment/Comments