ইতিহাস ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার,
২০ আগস্ট ২০২৪
‘২০ আগস্ট’ পার্বত্যবাসীদের
জীবনে এক অভিশপ্ত দিন! ১৯৪৭ সালের এদিন পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট পার্বত্য
চট্টগ্রামে সশস্ত্র আগ্রাসন চালায়। অন্যায় জবরদস্তিমূলকভাবে ‘ভারত স্বাধীন
আইন ১৯৪৭’ লঙ্ঘন করে পার্বত্য
চট্টগ্রাম ভূ-খণ্ডকে পাকিস্তান নামক এক ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়।
ব্রিটিশ শাসনের অন্তিম লগ্নে পাকিস্তান ও ভারত রাষ্ট্রের অভ্যুদয়কালে
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট সকালে রাঙ্গামাটিতে ভারতীয় পতাকা ও বান্দরবানে বার্মার পতাকা উত্তোলন
করা হয়। স্নেহ কুমার চাকমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতান্ত্রিক
রাষ্ট্র ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার। বোমাং রাজ পরিবারের নেতৃত্বে বান্দরবানবাসী বার্মার
সাথে যুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু বেলুচ রেজিমেন্ট সশস্ত্র শক্তির জোরে রাঙ্গামাটির ডিসি
অফিস ও কতোয়ালি থানা থেকে ভারতীয় পতাকা এবং বান্দরবান থেকে বার্মার পতাকা নামিয়ে পাকিস্তানের
পতাকা উত্তোলন করে। এর মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে পুরোপুরি পাকিস্তানি দখল কায়েম হয় এবং পার্বত্য
চট্টগ্রামে শুরু হয় এক অভিশপ্ত অধ্যায়, যার স্থায়ীত্ব ছিল প্রায় সিকি শতাব্দী পর্যন্ত
(১৯৪৭ আগস্ট-১৯৭১ ডিসেম্বর)।
ভাবতে অবাক লাগে, পৌনে দু’শত বছর (১৭৭২-১৯৪৭)
আগে যারা একদিন ‘ব্রিটিশ সিংহ’-এর আগ্রাসন ঠেকিয়ে
নিজেদের স্বাধীনসত্ত্বা টিকিয়ে রাখার গৌরবের অধিকারী, তারা কিনা বেলুচ রেজিমেন্টের
মত একটি ‘ষাঁড়’কে প্রতিরোধ করলো
না বা করতে পারলো না! পার্বত্যবাসীর প্রতিরোধ শক্তি কতটুকু লোপ পেয়েছিল ভাবলে আঁতকে
উঠতে হয়! তখনকার দিনে কর্ণফুলি নদী দিয়ে রাঙ্গামাটি যেতে হতো। চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি
পাকা সড়ক তখনও হয়নি বা যেটুকু কাঁচা রাস্তা ছিল, তাও ছিল ব্যবহার অনুপোযোগী। যতদূর
জানা যায়, বেলুচ রেজিমেন্টের দলটিও আকারে বড় ছিল না। তখনকার দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে
শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল পাহাড়িদের নিয়ে গঠিত ফ্রন্টিয়ার পুলিশ,
তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেনি। প্রতিরোধের লক্ষ্যে সলা-পরামর্শও হয় বলে জানা যায়। কিন্তু
নিজেদের মধ্যে ছিল দ্বিধাদ্বন্দ্ব নানা সংশয়। বলিষ্ঠ উদ্যোগ আর সংগঠনের দুর্বলতা ছিল
অত্যধিক। অথচ ১৫ আগস্ট ভারতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় রাঙ্গামাটিতে সমাবেশ ঘটেছিল দশ সহস্রাধিক
যুবকের। অনুমিত হয়, বান্দরবানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র-যুবকের সমাবেশ ঘটে থাকবে।
সুসংগঠিত ও সমন্বিত উদ্যোগ গৃহীত হলে সন্দেহ নেই এ যুবশক্তি প্রলয় ঘটাতে পারতো! কিন্তু
সমন্বিত উদ্যোগ আর সংগঠনের দুর্বলতার কারণে বেলুচ রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ
বা প্রতিরোধ গড়ে তোলা আর হয়ে উঠেনি। পরিণামে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর কাঁধে ব্রিটিশ
ঔপনিবেশিক শাসনের জায়গায় চাপিয়ে দেয়া হয় উগ্র ধর্মান্ধ পাকিস্তানি শাসকদের জোয়াল।
পার্বত্য চট্টগ্রাম একশন কমিটি (সংগ্রাম কমিটি) গঠিত হলেও রাঙ্গামাটি
ও বান্দরবানে বেলুচ রেজিমেন্টের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোন সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা
সম্ভব হয়নি, এমনকী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, বয়কট-কালো পতাকা
প্রদর্শন– সে ধরনের কোন
কর্মসূচিও ছিল না। সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম শিক্ষা-দীক্ষা রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায়
এবং সাংগঠনিক দিক থেকে ছিল অনেক পশ্চাৎপদ। একমাত্র গণসংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সমিতিও
(জনসংহতি সমিতি নয়) সাংগঠনিক শক্তির বিচারে ছিল অনেক দুর্বল এবং এর অনেক সীমাবদ্ধতাও
ছিল। সে যুগে পাহাড়িদের মধ্যে পেশাদার রাজনীতি করার লোকও ছিল না।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-প্রকৃতি বহিঃআক্রমণ প্রতিরোধে অনুকূল হলেও সংগঠন
শক্তি, প্রস্তুতি ও নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট বলতে গেলে
বিনা বাধায় সদর্পে পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করতে সক্ষম হয়। ভারত ও বার্মার পতাকা উত্তোলিত
হলেও লক্ষ্যণীয় ব্যাপার এই, এ দু’টি রাষ্ট্র কোনটিই তাতে বাধা দিতে এগিয়ে
আসেনি। ভারতের শীর্ষ নেতা জওহর লাল নেহেরুসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা ছিলেন কাশ্মির
সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। পার্বত্য চট্টগ্রাম একশন কমিটির নেতা স্নেহ বাবু আক্ষেপ করে লিখেছিলেন
আবেদনের ৫০ দিন পর তবেই তিনি নেহেরুর সাক্ষাত পেতে সক্ষম হয়েছিলেন। ততদিনে কর্ণফুলির
জল বহুদূর গড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপারে বার্মার কোন আগ্রহের
কথাই জানা যায়নি।
জাতীয় ক্রান্তিলগ্নে পার্বত্যবাসীদের এ ব্যর্থতা ও অক্ষমতার পেছনের কারণ
অনুসন্ধান করলে মূল হোতা হিসেবে বেরিয়ে আসে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীই। কূটকৌশল
খাটিয়ে ধুরন্ধর ব্রিটিশরা স্বাধীন রাজ্যকে গ্রাস করে নিয়েছিল। পার্বত্যবাসীর প্রতিরোধ
ও সাংগঠনিক শক্তি খর্ব করতে আরোপ করেছিল নানা বিধি-নিষেধ। ব্রিটিশ শাসনামলে পার্বত্য
চট্টগ্রামে সংগঠন ও রাজনীতি ছিল নিষিদ্ধ। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তো ছিলই,
এমনকী ‘দা, তীর-ধনুক’ বহন আর জমায়েতেও
ছিল নিষেধাজ্ঞা। সাধারণ প্রজার সাথে রাজন্যবর্গের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করতে প্রবর্তন
করেছিল নানা ধরনের ভাতা ও সম্মানি, যা এখনও ভিন্ন কৌশলে জারি রয়েছে। ভবিষ্যতে পার্বত্যবাসী
যাতে সংগঠিত হয়ে কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম না হয় সে লক্ষ্যে প্রয়োগ করেছিল ‘ভাগ করে শাসন
করার’ সাম্রাজ্যবাদী
কূটকৌশল। তারই পরিণতিতে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রায় সিকি শতাব্দিকাল ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী
ছিল অসংগঠিত, অসচেতন ও পশ্চাদ অবস্থায়। ১৯৪৭ সালে বেলুচ রেজিমেন্টকে প্রতিরোধ করতে
না পারার কারণ এখানেই নিহিত।
পরিহাসের বিষয় এই, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাসকৃত ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা
আইন গোড়াতেই লঙ্ঘিত হয়েছে এবং তার হোতা ছিল খোদ ব্রিটিশ শাসকরাই। ভারত বিভক্তিকালে
যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী অসম সাহসী ও অগ্রসর শিখ জনগোষ্ঠীকে শান্ত রাখতে ব্রিটিশ উপনিবেশিক
কর্তাব্যক্তিগণ পার্বত্য চট্টগ্রামের সহজ সরল পশ্চাৎপদ পাহাড়ি জনগণকে বলি দেন। শিখ
জনগোষ্ঠী বেঁকে বসলে ১৯৪৭ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা
থেকে ধুরন্ধর ব্রিটিশ শাসকরা ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছিল।
পাঞ্জাবের দু’টি তহশিল (প্রশাসন ইউনিট) ফিরোজপুর ও জিরা
এলাকায় মুসলিমরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ (৫১%), অন্যদিকে শিখ জনগোষ্ঠী ছিল ৩৫%, ও হিন্দু
১৪%। সেই দিক থেকে সীমান্ত নির্ধারণের প্রাথমিক খসড়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে
এ দু’টি এলাকা পাকিস্তানের
ভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান স্বাধীন হবার দু’দিন পর চূড়ান্ত
সীমান্ত নির্ধারণে এলাকা দু’টি ভারতের সাথে জুড়ে দেয়া হয়, যা খোদ জিন্নাহও
মেনে নেন নি। পাকিস্তানের এ ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সম্পূর্ণ অন্যায় অযৌক্তিকভাবে পার্বত্য
চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়, তাও করা হয়েছিল স্বাধীনতার দু’দিন পরে।
তবে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়ায় চট্টগ্রামের
উগ্রপন্থী মুসলিম লীগের নেতারা উল্লসিত হয়েছিল বলে জানা যায়। কথিত আছে, বেলুচ রেজিমেন্ট
কর্তৃক রাঙ্গামাটি আগ্রাসনের পেছনে চট্টগ্রামস্থ মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী
(সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা) সহ চট্টগ্রামের কতিপয় উগ্র মুসলিম লীগের নেতার যোগসাজশ
ছিল। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, ফ.কা. চৌধুরী গং ১৯৫৫ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পূর্ব
পাকিস্তানের একটি সাধারণ জেলায় পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। কিন্তু রাঙ্গামাটির তৎকালীন
ইংরেজ জেলা প্রশাসক নিবলেট আর পাহাড়ি নেতাগণের প্রচেষ্টার ফলে সে ষড়যন্ত্র সফল হয় নি।
১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের চীন সফর কালে ফ. কা. চৌধুরী একদিনের জন্য পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত
রাষ্ট্রপতি হলে ঐদিনেই তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের “বিশেষ অঞ্চলের” মর্যাদা খারিজ
করে তার আগের ষড়যন্ত্র সফল করেন। পাকিস্তান আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম “বিশেষ অঞ্চলের” মর্যাদায় সরাসরি
কেন্দ্রীয় সরকারের কাশ্মির ও সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শাসিত হতো, পূর্ব পাকিস্তানের
রাজধানী ঢাকা থেকে নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা বাতিল করে দেয়ায়
সে সময় অনেক প্রতিবাদ ও দেন দরবার করা হলেও পাকিস্তান আমলে আইনগতভাবে তা আর পুনঃস্থাপিত
হয়নি, অনেকটা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয়।
এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে এটাও উল্লেখ করা প্রয়োজন, বেলুচ রেজিমেন্ট নামে
যে সৈন্যবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে আগ্রাসন চালিয়েছিল, তাদের আবাসস্থল বেলুচিস্তান
প্রদেশও পরবর্তীতে পাকিস্তানের দমন-পীড়নের শিকার হয়। খোদ বেলুচরাই এখন অভিযোগ করছে
‘১৯৭১-এ বাঙালিদের
মত হত্যাকাণ্ড চলছে বেলুচিস্তানে। বেলুচিস্তানে শাসন করার কোন নৈতিক অধিকার পাকিস্তানের
নেই বলে প্রতিবাদী বেলুচরা সভা-সেমিনারে বলে বেড়াচ্ছে। বেলুচরা পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন
হয়ে স্বাধীন হতে চাইছে। ভবিষ্যতে কোন দিন কোন বেলুচ গবেষক যদি নৈর্ব্যক্তিকভাবে ইতিহাস
অনুসন্ধান করেন, তাহলে এ সত্য উদঘাটিত হবে একদিন তাদের জাতির কতিপয় লোক (বেলুচ রেজিমেন্টভুক্ত)
পার্বত্য চট্টগ্রামে আগ্রাসন চালিয়ে সহজ সরল পাহাড়িদের কাঁধে পাকিস্তানি দমন-পীড়নের
জোয়াল তুলে দিতে ভূমিকা রেখেছিল, তার জন্য তারা নিশ্চয় লজ্জা পাবে, অনুশোচনা করবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী যেভাবে এবরজিনদের (অস্ট্রেলিয়ার মূল অধিবাসী)
নিকট অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এমন দিন আসবে যেদিন পার্বত্য
চট্টগ্রামবাসীর দুর্দশার পেছনে নিজেদের দায়-দায়িত্বের জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে পাহাড়ি
জনগণের নিকট ক্ষমা চাইতে হবে। পাকিস্তান সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭১-এ হত্যাকাণ্ড
চালানোর জন্য বাংলাদেশের জনগণের নিকট ক্ষমা চায়নি, ক্ষমা চাওয়ার দাবি খোদ পাকিস্তানের
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রবল হচ্ছে। যেদিন পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নিকট
ক্ষমা চাইবে, সেদিন পার্বত্যবাসীর নিকটও ১৯৪৭ সালে আগ্রাসন চালানোর জন্য তাদের ক্ষমা
চাইতে হবে।
আর এই বিষয়টিও সংক্ষিপ্তভাবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ১৯৭১ সালে
বাংলাদেশ স্বাধীন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি “বিশেষ অঞ্চল” তা সংবিধানে
সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়। উগ্র জাতীয়তাবাদী বাঙালি শাসকগোষ্ঠী পাহাড়ি জনগণের জাতিসত্তার
স্বীকৃতি না দিয়ে ঢালাওভাবে সবাইকে “বাঙালি” হিসেবে আখ্যায়িত
করে। ফলে পাকিস্তান আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের যেটুকু অধিকার ও মর্যাদা স্বীকৃত ছিল,
স্বাধীন বাংলাদেশে তাও বজায় থাকেনি। ফলতঃ স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে
আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে, যা সশস্ত্র আন্দোলনের রূপ নেয়। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর জনসংহতি
সমিতি ও সরকারের মধ্যে ‘পার্বত্য চুক্তি’ সম্পাদনের মাধ্যমে
সশস্ত্র সংগ্রামের ইতি ঘটলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন বন্ধ হয়নি। সরকার
“অপারেশন উত্তরণ” নামে সেনাশাসন
বলবৎ রেখে এবং দমনমুলক ‘১১ নির্দেশনা’ জারি করে এ অঞ্চলের
জনগণের উপর নিপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে অধিকার প্রতিষ্ঠার
আন্দোলনও চলমান রয়েছে। কাজেই, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সুরক্ষায়
নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।