![]() |
আগুনে পুড়ে যাওয়া মন্টু চাকমার বাড়ি। |
নান্যাচর প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাঙামাটির নান্যাচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত বগাছড়ি কৈলাশ পাড়ায় অগ্নিসংযোগ করে এক পাহাড়ির বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা অগ্নিসংযাগের ঘটনার সাথে সেটলার বাঙালিরা জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন।
আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তবে ঘটনার সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সবাই কাজে যাওয়াতে বাড়িতে লোকজন ছিলেন না জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগীর নাম মন্টু চাকমা (৩৭), পিতা- রাজচন্দ্র চাকমা, গ্রাম-কৈলাশ পাড়া, বুড়িঘাট ইউনিয়ন, নান্যাচর, রাঙামাটি।
আগুনে বাড়িতে রাখা তার গরু বিক্রির এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকাসহ বাড়ির সকল জিনিসপত্র
পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে তার কলেজ পড়ুয়া এবং নবম ও ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া সন্তানদের যাবতীয়
বই কাগজপত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদপত্র পুড়ে যাওয়াতে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
![]() |
বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন মন্টু চাকমা ও তার পরিবারের সদস্যরা। |
স্থানীয়রা ভুক্তভোগী মন্টু চাকমার বরাত দিয়ে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকজন সেটলার তাকে বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে মোবাইলে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে আজকে তার বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হতে পারে বলে তাদের ধারণা।
আগুন দেয়ার সময় বাড়িতে কোন লোকজন ছিল না জানিয়ে ভুক্তভোগী বলেন, ‘খুব ভোরে তারা পরিবারের সবাই বিভিন্ন কাজে গিয়েছিলেন। পরে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে আগুনের খবর পেয়ে তারা বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে বাড়িটি সব পুড়ে গেছে। পাড়ার লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও নেভাতে পারেননি’।
মন্টু চাকমাকে হুমকিপ্রদানকারী সেটলারদের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- ১.
মো. জাহাঙ্গীর শেখ (৪২), পিতা- মসলিম শেখ, গ্রাম- বগাছড়ি ১নং ওয়ার্ড বুড়িঘাট ইউনিয়ন;
২. আলিম শেখ (৩৫), পিতা ও ঠিকানা-ঐ; ৩. বাবুল আক্তার (৬০) পিতা- অজ্ঞাত ও ৪. সবুজ
(৫০), পিতা- অজ্ঞাত। এর মধ্যে ৩ ও ৪ নং ব্যক্তির ঠিকানা ঢাকায় বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মো. মালেক বলেন, বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় মন্টু
চাকমা প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বগাছড়িতে সেটলর বাঙালিরা দীর্ঘ সময় ধরে পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল
ও বেদখলের নানা চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ২০১৪ সালে সেখানে সেটলাররা পাহাড়িদের ৩টি গ্রামে
হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে ৬০টির অধিক ঘরবাড়ি-দোকান পুড়িয়ে দিয়েছিল।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।