""

থানচিতে খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাত্র ইউনিয়নের

অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি


ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

বান্দরবানের থানচিতে খেয়াং জাতিগোষ্ঠির এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

আজ মঙ্গলবার (৬ মে ২০২৫) সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “ গতকাল (৫ মে) বান্দরবানের থানচি উপজেলা ২ নং তিন্দু ইউনিয়ন, ৮ নং ওয়ার্ড মংখয় পাড়া (খেয়াং পাড়া) সকাল ৬ ঘটিকায় জুমে ধান রোপন করতে গিয়ে চিংমা খেয়াং নামে একজন খেয়াং জাতিগোষ্ঠীর তিন সন্তানের মা নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার মৃতদেহ চোখ উপড়ে ফেলা অবস্থায় উদ্ধার করে। এলাকাবাসী তার মরদেহটি দেখে নিশ্চিত করেছে যে, তাকে ধর্ষণের পর পাশবিক ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এলাকাবাসী দাবি করেছে, চিংমা তিনজন সেটেলার দ্বারা প্রথমে অপহৃত হয়েছিল। উল্লেখ্য, ঘটনার একদিন আগেও চিংমা খেয়াং তাদের জুমের দিকে রাস্তার কাজ করা তিন জন সেটেলারকে দেখে ভয় পেয়ে জুম থেকে পালিয়ে এসেছিলেন বলে পরিবারের সূত্রে জানা গেছে”।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার চঞ্চল ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘আদিবাসী’ নারীর উপর নিপীড়ন, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। একদিকে সেটেলারদের ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হত্যা, অন্যদিকে পাহাড়ে সেনাশাসন ‘আদিবাসী’ জনগোষ্ঠীর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। এসব নিপীড়নের ঘটনা পাহাড়ে চলা কাঠামোগত সহিংসতার ধারাবাহিকতা। পাহাড়ে সেটেলারদের ভূমিকা ‘আদিবাসীদের’ নিজস্ব জীবন ব্যবস্থা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে, ‘পুলিশের প্রাথমিক সুরতহালে হত্যার নানা আলামত পাওয়া গেলেও ধর্ষণের আলামত পরিলক্ষিত হয়নি’ বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যা প্রমাণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা করে পাহাড়ে ‘আদিবাসীদের’ উপর চলা নিপীড়ন আড়াল করার চেষ্টা করতে পারে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্য বিরোধীতার কথা বললেও তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা বৈষম্যের চূড়ান্ত প্রতিফলন দেখতে পাই। ঢাকায় আদিবাসীদের মিছিলে হামলা চালানো সভারেন্টির সন্ত্রাসীদের আমরা বুক ফুলিয়ে হাঁটতে দেখি কিন্তু ‘আদিবাসী’ নারী হত্যার শিকার হলেও সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ!

নেতৃবৃন্দ আরো উল্লেখ করেন, মিডিয়ার প্রোপাগাণ্ডা, বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবসায়িক দৌরাত্ম্য এবং সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ‘আদিবাসী’ জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ভূলন্ঠিত করার অপচেষ্টা চলছে। সকল জাতিসত্তার অধিকার আদায়ে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ, অবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।







Post a Comment