রেংয়েন কার্বারি পাড়ায় নির্মিত অশোক বৌদ্ধ বিহার |
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের লোকজন কর্তৃক রেংয়েন ম্রো কার্বারি পাড়ায় অবস্থিত অশোক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ চাইন্দিমা ভিক্ষুকে হেনস্তা
এবং অবৈধভাবে ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুম ভূমি পূনরায় বেদখল প্রচেষ্টা চালানোর
খবর পাওয়া গেছে।
উক্ত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী বিহারাধ্যক্ষ উ চাইন্দিমা ভিক্ষু জানান, ‘গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, রোজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত আবদুল মালেক, আরিফ ম্যানেজার, কুদ্দুছ মিয়াসহ ৭/৮ জন লোক সেনাবাহিনীর একদল সদস্যকে নিয়ে রেংয়েন পাড়ায় আসে।
এ সময় তারা বিহারে প্রবেশ করে আহাররত অবস্থায় তাকে (ভান্তেকে) হেনস্তা ও তার পরিহিত রংবস্ত্র ধরে টেনেহেঁচড়ে বিহার থেকে নামানোর চেষ্টা করে’।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রেংয়ুন ম্রো বলেন, ‘আরিফ ম্যানেজার ও কুদ্দুছ মিয়া গংরা ভান্তেকে হেনস্তা করার পর আমাকেও মারধর করে। এরপর তারা পাড়াবাসীদেরকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলে এবং চলে না গেলে বাড়িঘরে আগুন দেয়ার হুমকি দেয়’।
পাড়া প্রধান
রেংয়েন কারবারি বলেন, ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের লোকজন গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের
৪০০ একর জমি বেদখলের উদ্দেশ্যে জঙ্গল কেটে সাফ করে; এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে
প্রতিবাদ জানানো হলেও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি’।
রেংয়েন কার্বারি পাড়া এলাকায় পাড়াবাসীদের জুমভূমিতে জঙ্গল কেটে সাফ করছে রাবার কোম্পানির নিয়োজিত শ্রমিকরা |
তিনি পাড়াবাসীদের নামে এ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ৫টি মামলা দায়ের করে নানা হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
ইউপিডিএফের
কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নতুন কুমার চাকমা আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে
অশোক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ চাইন্দিমা ভিক্ষুকে হেনস্তা এবং অবৈধভাবে ম্রো ও ত্রিপুরাদের
৪০০ একর জুম ভূমি বেদখল প্রচেষ্টার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি অবিলম্বে
ম্রোদের বংশপরম্পরায় ভোগদখল করে আসা জমি বেদখলের ষড়যন্ত্র বন্ধ, ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে
কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং উ চাইন্দিমা ভিক্ষুকে হেনস্তা ও ধর্মীয় অবমাননার সাথে জড়িত
লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের লোকজনকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বিগত ২০২২ সালে ৯ এপ্রিল থেকে
লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো, পাড়া, লাংকম ম্রো পাড়া ও জয়চন্দ্র
ত্রিপুরা পাড়ায় বসবাসকারী ম্রো-ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুম ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা শুরু
করে। সে সময় তারা ম্রো-ত্রিপুরাদের জুমভূমিতে জঙ্গল পরিস্কার করে এবং আগুন লাগিয়ে দিয়ে জুমভূমিসহ ফলজ, বনজ বাগানে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
এর পরবর্তীতে বিহার ভাঙচুর-বুদ্ধ মূর্তি
লুট, পানির উৎস ঝিরিতে বিষ প্রয়োগ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাটসহ একের পর এক মিথ্যা
মামলা দায়ের করে ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।