""

রামগড়ে সেটলার বাঙালি কর্তৃক এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ!

প্রতীকী ছবি

রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৩ আগস্ট ২০২৪

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের তালতলী পাড়া এলাকায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক এক পাহাড়ি নারী (৪০) ধর্ষণের শিকার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট ২০২৪) রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

চাকমা সম্প্রদায়ের ওই ভূক্তভোগী নারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল তিনি তার কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাত ১১টার দিকে তার মেয়ে (১৫) বাড়ির বাইরে মোবাইল টিপাটিপি করার সময় বাঙালি ভাষায় কিছু লোকজনের কথাবার্তা শুনতে পায়। এরপর সে বাড়ির ভিতর ঢুকে তার মাকে বিষয়টি জানায়। সেই মুহুর্তে এক বাঙালি তাদের সামনে চলে আসে। এসময় তারা তার কাছে এত রাতে এখানে কেন এসেছো? বলে জানতে চায়। এরপর আরো কয়েকজন বাঙালিকে আসতে দেখে অবস্থা সুবিধে নয় বুঝতে পেরে তারা মা-মেয়ে নিজেদেরকে রক্ষায় বাড়িতে থাকা দা হাতে নেয়। এসময় ৮/১০ জন বাঙালি এসে পড়ে। বাঙালিরা তাদের কাছ থেকে দা কেড়ে নিলে তারা মা-মেয়ে দৌঁড়ে পালাতে থাকে। বাঙালিরাও তাদের পিছু নিয়ে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে পিলাক খালের পারে গিয়ে বাঙালিরা তাদেরকে ধরে ফেলে। বন্যার পানির কারণে তারা খাল পার হতে পারেননি। বাঙালিরা তাদেরকে ধরে পাশের একটি কলাবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে ধস্তাধস্তি করে তার মেয়ে কোনরকমে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে পারলেও তিনি পালাতে পারেননি। এরপর দু’জন বাঙালি তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। 

এদিকে, তার মেয়ে পালিয়ে গিয়ে কোন রকমে তালতলী পাড়ায় পৌছে ঘটনাটি লোকজনকে জানায়। খবর পেয়ে লোকজন ঘটনাস্থলে যাবার সময় ডাকাডাকি করতে থাকে।  

সেই সময় ধর্ষণের পর বাঙালিরা ওই নারীকে কলাবাগান থেকে ৬ মাইল নামক স্থানের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। এ সময় আশে-পাশের লোকজনের হৈ চৈ শুনে পরে বাঙালিরা তাকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে ভুক্তভোগী নারী জানান।

সেখানে থেকে ফিরে আসার পর তিনি স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারকে ঘটনাটি জানান। এরপর আজ (শুক্রবার) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

ভুক্তভোগী নারী ধর্ষণকারীদের মধ্যে একজনকে চিনতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন। তার নাম মো. ইউসুফ (২২), পিতা- মো. ইসমাইল, ঠিকানা- কুমিল্লা কলোনী, নাককাপা, ৩নং ওয়ার্ড, পাতাছড়া ইউনিয়ন, রামগড়। 

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে করে বলেন, আমার মেয়েকেও যদি তারা ধরে রাখতে পারতো তাহলে হয়তো তারা আমাদের দু’জনকেই ধর্ষণ করে মেরে ফেলতো। ভাগ্যিস আমার মেয়ে তাদের হাত থেকে পালিয়ে যেতে পেরেছে। আমি এখন আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই শঙ্কিত।

ভূক্তভোগী নারী এ প্রতিবেদককে আরো জানান, তারা অনেক বছর ধরে তালতলী পাড়ায় বসবাস করে আসছেন। তবে তাদের বাড়িটি মূল পাড়া থেকে একটু বিচ্ছিন্ন। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তারা বর্তমানে মা-মেয়ে দু’জনে সেখানে থাকছেন। এলাকার প্রতিবেশীরা সবাই মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের। চাকমা সম্প্রদায়ের পরিবার বলতে একমাত্র তারাই সেখানে রয়েছেন। আর কাছাকাছি এলাকায় রয়েছে সেটলার বাঙালিদের বসতি।

সর্বশেষ ঘটনায় জড়িত আরো দু’জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- মো. রানা ও মো. ফয়সাল। 



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


 





0/Post a Comment/Comments