বান্দরবান প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে থানচিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর ২০২৪) সকাল ১০টার সময় ‘থানচি আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজ’ এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
সমাবেশের আগে একটি মিছিল থানচি উপজেলা বাস স্টেশন থেকে শুরু হয়ে বাজার ও উপজেলা অডিটোরিয়াম প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তামুখী প্রাঙ্গণে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে অংসিং মার্মার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন থানচি আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজের প্রধান সমন্বয়ক মংমে মার্মা, সমন্বয়ক রেং হাই ম্রো, ছাত্র সমাজের অনন্ত ত্রিপুরা, ক্যশৈ মারমা ও ছাত্রনেতা সিংওয়াইমং মার্মা।
ক্যশৈ মার্মা বলেন, রাষ্ট্রের আইন আমাদের সকল জাতিসত্তার নারীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা ছাত্রসমাজ বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রতিবন্ধী মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ধর্ষক মতিউর রহমান ও মো. সেলিমের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।
অনন্ত ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম নারীদের উপর দিনদিন নির্যাতনসহ ধর্ষণের মতো জঘন্যতম কাজ করে চলেছে রেশন ভুক্ত সেটেলার বাংগালীরা। নাইক্ষ্যংছড়িতে সেটলার বাঙালি মতিউর রহমান ও মো. সেলিম কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হওয়া মারমা কিশোরী যেন সঠিক ন্যায় বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
রেং হাই ম্রো তার বক্তব্যে বলেন, আজকে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারীদের অধিকার, নারীদের নিরাপত্তা, নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, নারীর নিরাপত্তা ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিপরীতে এগুলো প্রতিকারের জন্য কোনো ব্যবস্থা এযাবত পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। ‘আদিবাসী’ নারী তথা সমগ্র জুম্ম জনগণকে শাসকগোষ্ঠী যে চোখে দেখে, সেই দৃষ্টিভঙ্গী রাষ্ট্রের পাল্টানো দরকার। তিনি নাইক্ষ্যংছড়িতে গ্রেফতারকৃত ধর্ষক মতিউর রহমান ও মো. সেলিমের কঠিনতম শাস্তির দাবি জানান।
মংমে মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ‘আদিবাস’ নারীরা দিনের পর দিন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এর মূল কারণ রাষ্ট্র আইনের দুর্বলতা থাকায় আজ পর্যন্ত নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার ও ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি। আমরা শুধুমাত্র শাসকগোষ্ঠীর শোষণের পাশাপাশি সেনাশাসনে রয়ে গেছি। তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
সিংওয়াইমং মার্মা তার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, গত ১৭ অক্টোবর ছিলো আমাদের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। ওইদিন নাইক্ষ্যংছড়িতে ধর্মীয় উৎসবে বিহারে যাওয়ার পথে সেটলার বাঙালি মতিউর রহমান ও মো. সেলিম কর্তৃক মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। কতটা নোংরা মন-মানসিকতা হলে একজন প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ করতে পারে? গ্রেফতারকৃত দুই ধর্ষক মতিউর রহমান ও মো. সেলিমকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা না হলে আগামীতে থানচি আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজ কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।