সচিব চাকমা, সিনিয়র সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, ইউপিডিএফ
(ক)
গত ৭ অক্টোবর ২০২৪ ইউপিডিএফের ত্রাণ উত্তোলন কমিটির উত্তোলিত অর্থের কিছু অংশ (দশ লক্ষ টাকা) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমা দেয়া উচিত হয়নি মনে করে কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। আমরা আমাদের পার্টির যে কোন কাজের, কর্মসূচির ও নীতি-কৌশলের সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। পার্টির কোন বিষয়ে কারোর মতামত বা পরামর্শ থাকলে তাও নিঃসংকোচে আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ করি। আমরা চাই আমাদের জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি হোক, তারা সবাই রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হোক, তাদের শত্রু কে, মিত্র কে তা জানুক।
প্রত্যেকের সমালোচনা করার অধিকার আছে এবং আমরা কারো কাছ থেকে এই অধিকার কেড়ে নিতে পারি না। চুক্তির পূর্বে আমরা দেখেছি, সামান্যতম সমালোচনা করার দায়ে অনেককে প্রাণ দিতে হয়েছে। চুক্তির পরেও এই ধারাটা পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো কোনো পার্টি এখনও চালু রেখেছে। যেহেতু ইউপিডিএফ গঠনই হয়েছে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে, তাই আমাদের দিক থেকে আমরা বলতে পারি, আমাদের সমালোচনা করলে কাউকে সে ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না। আমরা গঠনমূলক রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ আন্দোলনের সঠিক পথ খুঁজে পেতে ও আন্দোলনকে বিপথে যাওয়া রোধ করতে এর কোন বিকল্প নেই।
(খ)
এবার উত্তোলিত অর্থের কিছু অংশ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমা দেয়া ও তার সমালোচনা প্রসঙ্গে আলোকপাত করতে চাই।
১) মূলতঃ আগস্ট মাসে ফেনী, খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরী সহায়তার জন্য ত্রাণের অর্থ উত্তোলন করা হয়েছিল। সেপ্টেম্বর ৫ তারিখ পর্যন্ত জনগণের কাছ থেকে এই ত্রাণের অর্থ তোলা হয়। কিন্তু উত্তোলনের পর দেখা যায় ততক্ষণে জরুরীভাবে ত্রাণ বিতরণের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনও তাদের উত্তোলিত ত্রাণের ক্ষুদ্র একটি অংশ বিতরণ করে বাকি টাকা ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে জমা রেখে দিয়েছে। এই অবস্থায় পার্টি সিদ্ধান্ত নেয় সরকারের ত্রাণ তহবিলে কিছু অংশ জমা দিয়ে বাকি টাকা ভবিষ্যতে জরুরী ত্রাণ সহায়তার জন্য রেখে দেয়া হবে। এটা করার কারণ হলো ভবিষ্যতে জরুরীভাবে ত্রাণ সাহায্যের প্রয়োজন হলে যাতে তৎক্ষণাৎ দেয়া যায়, নতুন করে যাতে আর ত্রাণ সংগ্রহ করতে না হয়। (পার্টি কর্তৃক প্রায় সময় জনগণের মধ্যে ত্রাণ দিতে হয়; এজন্য এক সময় পার্টির একটি স্থায়ী ত্রাণ তহবিলও ছিল। পরে নানা কারণে সেটা চালু রাখা সম্ভব হয়নি।)
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা জামাদানের রশিদ। |
২) কেন প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে উত্তোলিত ত্রাণের কিছু অংশ দেয়া হলো এই প্রশ্নের উত্তর হলো এই: প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলের অর্থ ফেনী, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রমে ব্যবহার করা হবে। এই পুনর্বাসনের কাজ একমাত্র সরকারের পক্ষেই সম্ভব (অবশ্য বড় বড় এনজিওরাও করতে পারে), পার্টির পক্ষে বর্তমান অবস্থায় সম্ভব নয়। সরকারের ত্রাণ তহবিলে পার্টির উত্তোলিত ত্রাণের কিছু অংশ জমা দিয়ে পার্টি পরোক্ষভাবে ফেনী, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমান সরকার হলো একটি নির্দলীয় সরকার, যা ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার আকাঙক্ষাকে ধারণ করে গঠিত হয়েছে। এই অভ্যুত্থানে পাহাড়ি জনগণও ইউপিডিএফের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেছে। তাই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণেরও এই সরকারের কাছে চাওয়ার আছে। যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সরকারকে যথেষ্ট উদাসীন দেখা যাচ্ছে।
৩) পার্টির ত্রাণ তহবিলে অনেকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। দাতাদের মধ্যে পাহাড়ি যেমন রয়েছেন, তেমনি বাঙালিও রয়েছেন। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, অনেক বাঙালি বড় অংকের টাকা পার্টির এই ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন। সুতরাং যারা বলেন যে, পার্টির উত্তোলিত ত্রাণের অর্থ কেবল পাহাড়িদের দিতে হবে, তারা অত্যন্ত সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি দেখছেন। বাঙালিরা পার্টির ত্রাণ তহবিলে যদি এক পয়সাও না দিতেন, তারপরও ফেনী, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ত্রাণ দেয়া সমীচিন হতো। আমরা জানি বহু বাঙালি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে এবং সেই ত্রাণ পাহাড়িরা গ্রহণ করেছে। একই দেশের নাগরিক হিসেবে একের বিপদে অন্যে এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। এমনকি প্রাকৃতিক দুযোগ মোকাবিলায় ঘোর শত্রুদেরকেও নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক কলহ থামিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা যায়। আর একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ইউপিডিএফ বাঙালি জনগণকে শত্রু মনে করে না, বাঙালি শাসকগোষ্ঠীই হলো পাহাড়ি জনগণের শত্রু, যে শাসকগোষ্ঠী সাধারণ বাঙালি জনগণের ওপরও শোষণ নির্যাতন চালায়। উগ্র জাতীয়তাবাদের উন্মাদনায় যদি এ বিষয়টি আমরা ভুলে যাই, তাহলে সেটা আমাদের জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না।
৪) কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেছেন আমরা কেন পার্বত্য চট্টগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করিনি। তাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, ইউপিডিএফ দীঘিনালায় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ত্রাণ দিয়েছে। খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও গণ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কুইক রেসপন্স টিম গঠন করে বানভাসী মানুষদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছে।
দীঘিনালায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে ইউপিডএফ। ছবি: ইউপিডিএফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহিত |
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফভুক্ত গণসংগঠনের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা বন্যার পানিতে ডুবে ডাওয়া ঘরবাড়িতে জিনিসপত্র গুছানোর কাজে সহায়তা করছেন। ছবি: ইউপিডিএফের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহিত |
৫) সমালোচনায় কেউ কেউ বলেছেন ত্রাণের অর্থ ১৯-২০ সেপ্টেম্বর সাম্প্রদায়িক হামলায় আহতদের দিলে ভালো হতো। তাদের এই পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ জানাই। এক্ষেত্রে বলতে চাই, ইউপিডিএফের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা আহতদের চিকিৎসার জন্য এখনও পর্যন্ত যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: আর্থিকভাবে এবং সেবা শুশ্রূষা করে। এমনকি তাদের দেখাশোনা করার জন্য নির্ঘুম রাতও কাটাতে হয়েছে। আমরা জানি, আহতদের চিকিৎসার জন্য ও নিহতদের পরিবারদেরকে ব্যক্তিগতভাবে অনেকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। পার্টির পক্ষ থেকেও শুধু আহতদের নয়, নিহতদের (শহীদ) পরিবারদেরকেও আর্থিক ও অন্যান্যভাবে সাহায্যের চেষ্টা করা হয়েছে। মোট কথা, আহত, নিহত, বন্যার্ত সবার প্রতি পার্টির যে দায়িত্ব তা পালন করতে কোন গাফিলতি করা হয়নি; পার্টি তার সাধ্যমত ও আন্তরিকভাবে তার দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছে।
যাই হোক, যারা আমাদের ত্রাণ দেয়া নিয়ে মন্তব্য করেছেন, আলোচনা সমালোচনা করেছেন, বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক সমালোচনা হোক, আমাদের দিক থেকে তা থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেবার চেষ্টা থাকবে। একই সাথে অন্যদেরকেও তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে বিনীতভাবে অনুরোধ করতে চাই। সংঘাতের চাইতে এ ধরনের বিতর্ক-সমালোচনা অনেক অনেক ভালো।
(গ)
পার্টি সব সময় দুর্গত, দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। পার্টি কয়েক বছর আগে রুমা ও থানছিতে ইঁদুর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জুমচাষীদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে; লামার সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের দেয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো ও ত্রিপুরা গ্রামবাসীদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ও নানাভাবে এখনও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, রামগড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় গরীব মানুষের মাঝে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ফসল তোলার কাজে জনগণকে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছে। জনগণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সাঁকো নির্মাণ করেছে। এমনকি গত বছর রাঙামাটির কুদুকছড়িতে হাফবাজারে আগুন লেগে বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে গেলে মালিকদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে, যাতে তারা আবার উঠে দাঁড়াতে পারে। অনেক এলাকায় পার্টির পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এক কথায় পার্টি সুখে দুঃখে জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। পার্টি যেমন জনগণকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, জনগণও পার্টিকে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে থাকে। আমাদের পার্টি ও জনগণের মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক অত্যন্ত আন্তরিক ও গভীর।
তারপরও আমরা কখনো বলি না যে, পার্টি কোন ভুল করে না বা আমরা ভুলের উর্ধে। অবশ্যই মানুষ মাত্রেই কমবেশি ভুল করে। পার্টির নেতাকর্মীরাও মানুষ, সুতরাং তাদেরও ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা এটা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি যে, পার্টি কিছু ছোট খাট ভুল করলেও বড় ধরনের ভুল করেনি। জাতি ও জনগণের প্রতি তার যে দায়িত্ব তা পালনে পার্টি কোনদিন পিছ পা হয়নি। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পার্টি তার লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে। কেবল একটা কথা বলি, পার্টি যদি জনগণকে নিয়ে ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে না তুলতো, তাহলে আজ আমরা আরও বহু জমি হারাতাম।
রাঙামাটির কাউখালীতে কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে দিচ্ছেন। ছবি: ইউপিডিএফের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহিত |
(ঘ)
ভুল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন আচরণগত ভুল, অভ্যাসগত ভুল, অনভিজ্ঞতাজনিত ভুল, লাইনগত ভুল, নীতিগত (strategic) ভুল ইত্যাদি। রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের ভুলের ক্ষতি বিভিন্ন ধরনের হয়। একটি সাধারণ ছোটখাট ভুল আন্দোলনে তেমন বড় ধরনের ক্ষতি করে না; কিন্তু নীতিগত ভুল বা লাইনগত ভুল আন্দোলনে ও জনগণের মধ্যে বিরাট ক্ষতি সাধন করে থাকে। যদি প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে অর্থ জমা দেয়া অনেকের বিচারে “ভুল” হয়েই থাকে, তাহলেও সেই ভুল এমন কোন ভুল নয়, যাতে কারোর প্রাণ সংহার হবে কিংবা জাতি বা জনগণের বা আন্দোলনে বড় ধরনের কোন ক্ষতি হবে।
অপরদিকে, কোন কোন পার্টি যে ঐক্য বিরোধী সংঘাতের পথ গ্রহণ করেছে তা এমন এক গুরুতর রাজনৈতিক লাইনগত ও নীতিগত ভুল, যার ফলে ইতিমধ্যে বহু প্রাণহানি ঘটেছে, আন্দোলনে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে, এবং তাদের অনড় অবস্থানের কারণে আরও প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন না করা এবং অন্যদেরকেও আন্দোলন করতে না দেয়ার যে নীতি কোন কোন পার্টি গ্রহণ করেছে, তা এমনই এক গুরুতর ভুল, যা একমাত্র জনগণের শত্রুদেরকেই লাভবান করছে এবং জাতিকে সর্বনাশের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, আমরা ছোটখাট ”ভুলের” জন্য সমালোচনার ঝড় তুলে বৃথা সময় ও শক্তি ব্যয় করবো, নাকি যে ভুল জাতি ও জনগণের জন্য মহা বিপর্যয় ডেকে আনবে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা ও সংগ্রাম করবো? যে জাতির জনগণ এই প্রশ্নের উত্তর জানে না বা জানতে চায় না, বিভিন্ন ভুলের মধ্যে পার্থক্য করতে জানে না এবং কোন ধরনের ভুলের সমালোচনা কী পদ্ধতিতে ও কী মাত্রায় করা উচিত তা বুঝতে পারে না অর্থাৎসমালোচনার ক্ষেত্রে মাত্রাজ্ঞান বোঝে না, কেবল ছোটখাট ভুলের সমালোচনা করতে গিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলতে ওস্তাদ, অথচ যে ভুল তাদেরকে জাতীয়ভাবে ধ্বংস করতে পারে, সে ভুলের ব্যাপার নীরব ও সে ভুলকে সহ্য করে, তাহলে তাদের মুক্তি যে সহজে হবে না, তাদের কপালে যে দুঃখ আছে তা বলাই বাহুল্য।
খাগড়াছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবার রান্না করতে শুকনো লাকড়ি বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা। ছবি: ইউপিডিএফের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহিত |
(ঙ)
যাই হোক, যারা আমাদের ত্রাণ দেয়া নিয়ে মন্তব্য করেছেন, আলোচনা সমালোচনা করেছেন, বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক সমালোচনা হোক, আমাদের দিক থেকে তা থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেবার চেষ্টা থাকবে। একই সাথে অন্যদেরকেও তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে বিনীতভাবে অনুরোধ করতে চাই। সংঘাতের চাইতে এ ধরনের বিতর্ক-সমালোচনা অনেক অনেক ভালো।
আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও সংঘাত চায়, যেন গত ২৭ বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাত যথেষ্ট নয়। কিন্তু এই অধম বুঝতে পারে না এতে আমাদের পাহাড়িদের কী লাভ। তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন: ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি করলে জাতির জন্য কী লাভ হবে? এভাবেই কী আমাদের জাতির অধিকার অর্জিত হবে? তারা যে এগত্তর (ঐক্যবদ্ধ) হতে চায় না, তার পেছনে তাদের যুক্তি কি তাও আমার অজানা। দয়া করে কি তারা বলবেন আপনারা কেন এগত্তর হতে চান না? এগত্তর ও আন্দোলনের পথ যদি মুক্তির পথ না হয়, তাহলে আপনারা এমন কোন পথের কী সন্ধান পেয়েছেন, যে পথে জনগণের অধিকার পাওয়া যাবে? অনুগ্রহ করে আমাদের সেই পথ দেখিয়ে দিন। ধন্যবাদ।
* লেখাটি ইউপিডিএফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে নেওয়া।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।