খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক
যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর ২০২৪) “আন্তর্জাতিক
ফিলিস্তিন সংহতি দিবস” উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা
শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক অনিমেষ চাকমা সভাপতিত্বে ও তৃষ্ণাঙ্কর চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য
রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা
ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুণ চাকমা।
সভার শুরুতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হয়ে
নিহত ফিলিস্তিনি জনগণের সম্মানে ও পাহাড়ে অধিকার আদায়ে আত্মবলিদানকারী শহীদদের স্মরণে
১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, আজকে আমাদের এই আলোচনার
মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণের ওপর ইসরায়েলের যে আগ্রাসন, হামলা, হত্যা
চলমান রয়েছে তার বিরোধিতা করা এবং নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগণের সাাথে
সংহতি প্রদর্শন করা। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিশ্বের সকল নিপীড়িত জনগণের পক্ষেই
আমাদের আন্দোলন।
তারা বলেন, দীর্ঘ একশত বছর ধরে ফিলিস্তিন
সাধারণ জনগণকে অধিকার বঞ্চিত রেখে সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। এক সময় স্বাধীন ফিলিস্তিন
ভূখন্ডে বৃটিশরা নাৎসিদের অত্যাচারে উদ্বাস্তু হওয়া ইহুদিদের পুনর্বাসন ও তাদেরকে দিয়ে
ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই ফিলিস্তিনের ওপর এই দখলদারিত্ব শুরু হয়। তা না হলে
ফিলিস্তিনি জনগণ এখনো স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারতো।
বক্তারা আরো বলেন, ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনে
চলমান সামরিক আক্রমণ ও নৃশংস গণহত্যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ
নানা চেষ্টা চালিয়েও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করতে না পারা বিশ্বের
জন্য এক অশনি সংকেত। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের এই সংঘাতের একমাত্র সমাধান হতে পারে যদি
ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন-নির্যাতন বিষয়ে তুলে ধরে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি
জনগণের ওপর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যে নিপীড়ন তা ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিপীড়নের চেয়ে কোন
অংশে কম নয়। এখানে যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে, পরিকল্পিতভাবে সেটলার বাঙালি পুনর্বাসন
করে পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নীলনক্সা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অন্যায় দমন-পীড়ন,
খুন-গুম, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ছাত্র-জনতার
অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে আগের মতেই নিপীড়ন-নির্যাতন
জারি রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পর পর কয়েকটি সাম্প্রদায়িক হামলা
চালানো হয়েছে এবং চারজনকে হত্যা করা হয়েছে।
বক্তারা ফিলিস্তিনের ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামে
অব্যাহত নিপীড়ন-নির্যাতন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়েও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ
করেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।